সীমান্তে হাতির তান্ডব চলছেই—
প্রকাশিতঃ ২:১৩ অপরাহ্ণ | এপ্রিল ২৫, ২০২৩ । এই নিউজটি পড়া হয়েছেঃ ১৫৩ বার
ওমর ফারুক সুমন:
হাতি মানুষের যুদ্ধ এখন নিত্যদিনের সঙ্গী।সীমান্তের মানুষের কাছে এক অজানা আতংকের নাম হচ্ছে বন্য হাতি।আর এই বন্য হাতির তান্ডবে সীমান্ত এলাকায় একের পর এক ঝড়ছে তাজা প্রাণ।নেই কার্যকর কোন প্রদক্ষেপ। ফলে চাপা ক্ষোভ বেড়েই চলছে সীমান্তের বাসিন্দাদের। গেল ঈদের দিন ও ঈদের দুই দিন পূর্বে হালুয়াঘাট সীমান্তে বন্য হাতির তান্ডবে দুই যুবকের মৃত্যু হয়েছে। নিজ ক্ষেতের আবাদকৃত ফসল রক্ষায় হাতি তাড়াতে গিয়ে হাতির পায়ে পিষ্ট হয়ে মারা যান তারা। নিহত দুই যুবক হল গাজিরভিটা ইউনিয়নের কাটাবাড়ী গ্রামের ফরজুল ইসলাম (২৮) ও ধোবাউড়া সীমান্তের দক্ষিন মাইজপাড়া গ্রামের সুমন (১৯)।গেল বছরেও হালুয়াঘাটের ১নং ভূবনকুড়া ইউনিয়নের কোচপাড়া গ্রামে হাতি তাড়াতে গিয়ে পিষ্ট হয়ে একজন ও হাতি তাড়ানোর বৈদ্যুতিক ফাঁদে পড়ে একজন মিলে আরও দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। বিশিষ্টজনরা বলছে, গত ৫০ বছরে শুধু মাত্র হাতির আক্রমণে আশপাশের কয়েকটি উপজেলায় প্রাণ হারিয়েছে অর্ধশতেরও উপরে।বিনষ্ট হয়েছে শত শত একর জমির ফসল। ধ্বংস হয়েছে বহু ঘর বাড়ী ও কাঠালসহ ফলজ বৃক্ষ।জানা যায়, গত প্রায় একশত বছর ধরে ভারতের মেঘালয় রাজ্য থেকে আসা একটি দলছ্যুত হাতির পাল অবস্থান করে আসছে বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকায়।দুই দেশের সীমান্তের কাটা তারের আশপাশেই খাদ্যের সন্ধানে বিচরণ করে থাকে এরা।খাবারের প্রয়োজনে কখনো ভারতের সীমান্তে আবার কখনো কাটা তারের সীমানা বেঁধ করে বাংলাদেশ সীমান্তে অবস্থান করে থাকে।বছরের অধিকাংশ সময়ই বাঙ্গালাদেশের সীমানায় প্রবেশ করে মানুষের উপর হামলাসহ প্রাণহানি ঘটিয়ে আসছে।গত পঞ্চাশ বছরে হাতির আক্রমণে মৃত্যু হয়েছে বহু মানুষের। সীমান্তের ক্ষতিগ্রস্থ স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, সীমান্ত এলাকার কয়েক হাজার মানুষের রাতে ঘুমানোর সুযোগ নেই। রাত জেগে হাতি পাহাড়া দেয় তারা।হাতি আসার নমূনা দেখা মাত্রই আগুনের মশাল, পটকা ফুটিয়ে, লাঠিসোটা নিয়ে হাতি তাড়ানোর চেষ্টা করে থাকেন। কিন্তু প্রতিরোধ করার এমন সামান্যতম চেষ্টার ফলাফল জিরো। উপরন্তু হাতির পাল তাড়াতে গিয়েই হাতির পালের আক্রমণে মারা যাচ্ছে একের পর এক সীমান্তের মানুষ। সম্প্রতি নিহত ফরজুল ইসলামের পরিবার ও স্থানীয়দের সাথে কথা বললে তারা জানান, যখন হাতির আক্রমণে কেউ মারা যান তখন প্রশাসনের লোকজন খোঁজ খবর নিতে যান। ক্ষতিপূরণ হিসেবে কয়েক হাজার টাকা দিয়ে তাদের দায়িত্ব পালন করা হয়েছে বলেই এখানেই শেষ। মূলত স্থায়ী কোন সমাধানের উদ্যোগ কখনো নেয়া হয়না। বন বিভাগের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা। কার্যকর কোন প্রদক্ষেপ গত একশ বছরেও নেয়া হয়নি।সীমান্তের গাজিরভিটা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান বলেন, হাতির পালের কারনে সীমান্ত এলাকার মানুষের নির্ঘুম রাত কাটাতে হয়। কখন কার উপর হামলা চালায় সে আতংকে থাকে সীমান্তের মানুষ।তিনি বলেন, এ নিয়ে প্রশাসনের নজরে আনতে বার বার বলা হলেও সমাধান হচ্ছেনা।###