আজ সোমবার , ৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২৩শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |

শিরোনাম

হালুয়াঘাট উপজেলা পরিষদ নির্বাচনঃ প্রবীণে প্রবীণে লড়াই এম্বুলেন্সে করে মাদক পাচারকালে ২৪০ বোতল ভারতীয় মদসহ একজন আটক এমপি মাহমুদুল হক সায়েমকে সি.আই.পি শামিমের সংবর্ধনা হালুয়াঘাটে ঈদে বাড়ি ফেরার পথে লাশ হল স্বামীসহ অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী হালুয়াঘাটের স্থলবন্দর দিয়ে ২৭টি পণ্যের আমদানী রপ্তানীর পরিকল্পনা-এমপি সায়েম হালুয়াঘাটে ২৭ হাজার দুস্থ অসহায় পাচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার ১৩ বছর পর পদত্যাগ করলেন ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হালুয়াঘাটে ফেইসবুক গ্রুপে কোরআন তেলাওয়াত ও ইসলামী সংগীত প্রতিযোগিতা। পুরস্কার বিতরণ ‘কৃষ্ণনগরের কৃষ্ণকেশীর ‘বেহিসেবি রঙ.. হিমাদ্রিশেখর সরকার হালুয়াঘাট থেকে ফুলপুর পর্যন্ত চার লেনের রাস্তা নির্মাণসহ সড়ানো হচ্ছে অস্থায়ী বাস কাউন্টার জনগণের অধিকার আদায় না হওয়া পর্যন্ত বিএনপি রাজপথে থাকবে-প্রিন্স ডামি নির্বাচন করে গণতন্ত্রকে আইসিইউতে পাঠিয়েছে আওয়ামী লীগ-প্রিন্স বাজারে পণ্যের অগ্নিমূল্যের তাপ তাদের গায়ে লাগেনা-প্রিন্স নালিতাবাড়ীতে প্রেসক্লাবের নির্বাচন, সভাপতি সোহেল সম্পাদক মনির গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে-বিএনপি নেতা প্রিন্স

হালুয়াঘাটের বাক প্রতিবন্ধী নাঈমের গল্প!

প্রকাশিতঃ ৯:৪৫ অপরাহ্ণ | আগস্ট ০১, ২০১৯ । এই নিউজটি পড়া হয়েছেঃ ৫০৭ বার

ওমর ফারুক সুমনঃ হালুয়াঘাট উপজেলা কোয়ার্টার সংলগ্ন বাসিন্দা সবজি বিক্রেতা আব্দুল ফারুক হোসেনের পুত্র বাক প্রতিবন্ধী নাঈম! কথা বলতে পারেনা সে! সৃষ্টিকর্তা তার মুখের ভাষা কেড়ে নিয়েছে। জন্মলগ্ন থেকেই অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠে প্রতিবন্ধী নাঈম। সমাজের অন্য পাঁচজন মানুষের মতো স্বাভাবিকভাবে যেই ছেলেটির ছিলোনা চলার অধিকার, সেই ছেলেটিই আজ একজন স্বপ্ন দ্রষ্টা। এক সময় বিদ্যালয়ে যেই ছেলেটির পড়ার সুযোগ হয়নি আজ সেই নাঈমই আজ কালের স্বাক্ষী। প্রতিবন্ধী নাঈম কথা বলতে না পারলেও তার পিতা-মাতার অদম্য প্রচেষ্টায় আজ সে উচ্চ শিক্ষিত। ভালো ফলাফল ও নানা কাজে দৃষ্টান্ত স্থাপন করে সকলের নজর কেড়েছেন নাঈম।লেখাপড়ার পাশাপাশি কারিগরী কর্মদক্ষতায় রয়েছে তার আলাদা অর্জন ও কৃতিত্ব।মোবাইল সফটওয়্যার, ফটোস্ট্যাট, টেলিভিশন, কম্পিউটার মেরামতে রয়েছে তার আলাদা কৃতিত্ব। বৃহঃপতিবার সরেজমিনে নাঈমের পরিবার ও এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা যায় নাঈমের স্বপ্ন জয়ের পিছনে নেপথ্যের সেই কাহিনী।
এক পর্যায়ে কথা বলি নাঈমের মাতা হেলেনা খাতুনের সাথে। জানতে চায় পুত্র সন্তানের স্বপ্ন জয়ের নেপথ্যের গল্প। নাঈমের মাতা হেলেনা খাতুন আফসোস করে বলেন, নাঈমকে আজকের এ পর্যায়ে নিয়ে আসতে সহ্য করতে হয়েছে নানা প্রতিকুলতা। পোহাতে হয়েছে অনেক বাধা-বিপত্তি।

জানা যায়, এক সময় যেই ছেলেটিকে বাক প্রতিবন্ধী হওয়ায় কোনো বিদ্যালয়ে ভর্তি করাতে রাজী হতোনা শিক্ষকরা, আজ সেই ছেলেটিই হালুয়াঘাট মাদানীনগর বিএম কলেজ থেকে ভালো ফলাফলের সাথে এইচ এস সি পাশ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। শুধু তাই নয়, কারিতাস টেকনিক্যাল কারিগরী বিদ্যালয় থেকে হাতে কলমে মোবাইল সফটওয়্যার ও কম্পিউটার প্রশিক্ষন নিয়ে বর্তমানে সে একজন দক্ষ টেকনিশিয়ান হয়ে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন হাজারো মানুষকে। উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে একজন বড় অফিসার হয়ে দেশের সেবায় অবদান রাখতে চান প্রতিবন্ধী নাইম।নাঈমকে জিজ্ঞেস করলে ইশারায় লিখিত বক্তব্যে স্বপ্নের কথা ব্যক্ত করেন। একজন দক্ষ ইঞ্জিনিয়ার হয়ে বিদেশের মাটিতে পাড়ি জমাতে চান বলে জানান তিনি।
প্রতিবন্ধীরা সমাজের বোঝা নয় এমনটাই জানিয়ে নিজের সন্তানকে নিয়ে গর্ভবোধ করেন নাইমের মাতা হেলেনা খাতুন।
হেলেনা কাতুন বলেন, নাঈমকে নিয়ে স্কুলে ভর্তি করাতে গেলে প্রতিবন্ধী হওয়ায় শিক্ষকরা ভর্তি করাতে রাজি হতোনা। অনেক কাকুতি মিনতি করে নিজের কাঁধে পড়ানোর দায়িত্ব নিয়ে ছেলেকে ভর্তি করাতে হয়। তিনি বলেন, আমি নিজে তাকে বর্ণ শিখিয়েছি। সংখ্যা শিখিয়েছি। সবার আগে যেই শব্দটি নাঈমকে শিখিয়েছি সেটা হলো “মা”। পরে বাবা, ভাই, বোন শিখিয়েছি।হালুয়াঘাট দক্ষিন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে কৃতিত্বের সাথে ৫ম শ্রেণী পাশ করে। পরে ভর্তি করান আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে। সেখানেও যায় নানা প্রতিকুলতায় পাঁচটি বৎসর। এসএসসি পরীক্ষার পূর্বে ফরম ফিলাপে আসে কঠিন বাঁধা।সেই ক্ষেত্রে সহযোগীতা করেন হালুয়াঘাটের সাবেক প্রতিবন্ধী উপজেলা নির্বাহী অফিসার হেলালুজ্জামান সরকার। এক পর্যায়ে এসএসসি পাশ করে কলেজে ভর্তি করাতে গেলেও বাঁধার সন্মুখীন হয়। পরে আবারো নির্বাহী অফিসার হেলালুজ্জামানের সহযোগীতায় বিএম কলেজে ভর্তি করান।সেখান থেকে ২০১৯ সালে কৃতিত্বের সাথে এইচ এস সি পাশ করে নাঈম।
প্রতিবন্ধী নাইম অত্যন্ত মেধাবী আখ্যায়িত করে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্যে সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন বলে মনে করে বিএম কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ শাহাদৎ হোসেন। তিনি বলেন, নাঈম অত্যন্ত মেধাবী ছিলো। তাকে আমি আলাদা নজর দিয়েছি।তিনি নাঈমের ভবিষ্যৎ মঙ্গল কামনা করেন। সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা পেলে বাক প্রতিবন্ধী নাইম উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে দেশের সেবায় অবদান রাখবে এমনটাই দাবী নাইমের পরিবারের। ###

Shares