আজ শনিবার , ৪ঠা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২১শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |

শিরোনাম

হালুয়াঘাট উপজেলা পরিষদ নির্বাচনঃ প্রবীণে প্রবীণে লড়াই এম্বুলেন্সে করে মাদক পাচারকালে ২৪০ বোতল ভারতীয় মদসহ একজন আটক এমপি মাহমুদুল হক সায়েমকে সি.আই.পি শামিমের সংবর্ধনা হালুয়াঘাটে ঈদে বাড়ি ফেরার পথে লাশ হল স্বামীসহ অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী হালুয়াঘাটের স্থলবন্দর দিয়ে ২৭টি পণ্যের আমদানী রপ্তানীর পরিকল্পনা-এমপি সায়েম হালুয়াঘাটে ২৭ হাজার দুস্থ অসহায় পাচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার ১৩ বছর পর পদত্যাগ করলেন ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হালুয়াঘাটে ফেইসবুক গ্রুপে কোরআন তেলাওয়াত ও ইসলামী সংগীত প্রতিযোগিতা। পুরস্কার বিতরণ ‘কৃষ্ণনগরের কৃষ্ণকেশীর ‘বেহিসেবি রঙ.. হিমাদ্রিশেখর সরকার হালুয়াঘাট থেকে ফুলপুর পর্যন্ত চার লেনের রাস্তা নির্মাণসহ সড়ানো হচ্ছে অস্থায়ী বাস কাউন্টার জনগণের অধিকার আদায় না হওয়া পর্যন্ত বিএনপি রাজপথে থাকবে-প্রিন্স ডামি নির্বাচন করে গণতন্ত্রকে আইসিইউতে পাঠিয়েছে আওয়ামী লীগ-প্রিন্স বাজারে পণ্যের অগ্নিমূল্যের তাপ তাদের গায়ে লাগেনা-প্রিন্স নালিতাবাড়ীতে প্রেসক্লাবের নির্বাচন, সভাপতি সোহেল সম্পাদক মনির গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে-বিএনপি নেতা প্রিন্স

আমার কি কার্ড অইতোনা বাজান?

প্রকাশিতঃ ১১:২৪ অপরাহ্ণ | জুলাই ১০, ২০১৮ । এই নিউজটি পড়া হয়েছেঃ ৪১৮ বার

ওমর ফারুক সুমন, হালুয়াঘাটঃ
হঠাৎ একটা অপরিচিত নাম্বার থেকে ফোন আসে। ব্যাস্ততা থাকায় দু’বার ফোনটা কেটে দিলাম। এরপর বিরক্ত হয়েই রিসিভ করলাম। কে বলছেন? কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বললো,  আমি দর্শার পাড় থেকে কইতাছি। আমার কার্ডটা কি অইতোনা বাজান?  কে ? কে আপনি? হঠাৎ মনে পড়ে গেলো। সেই চিরচেনা কন্ঠ নুরজাহান বিবির কথা। যেই নুরজাহান বিবি কদিন আগেও নিজের দুঃখের কথা বলেছেন। বলেছেন তার হারিয়ে যাওয়া স্মৃতির কথা। সেই কথাগুলো আজও মনে পড়লে ভারাক্রান্ত হয়ে যায় মন।  বাবা!  হোন্ডার নিচে পইরা একটা পা ভাইংগা গেছে।উঠবার পায়না বাবা!আডাচাড়া(নড়াচঁড়া) করবার পায়না! মাইনসে টাইন্যা (টেনে) নিয়া গেলে যাইবার পাই! এক পোলা অসুখে মইরা গেছে! আরেক পুলা আছে সেও কঠিন অসুগে ঘরে পইরা আছে! মাইয়া একটা তার স্বামীও ফালাইয়া রাইখা গেছে।ঐ মাইয়াডাই আমারে দেহে। মাইয়াই তো খাইবার পায়না। আমারে কেমনে দেখবো। আমারে একটা কার্ড দিলাইননা। আইন্যেরা না দিলে দেখবো কেডা! বয়স অইছে। মইরা যামুগা।আজ সেহরির সময় হুডা করলা ভাঁজা দিয়া ভাত খাইছি।রোযা ভাংবার মন চাইনা। ভালাতো কিছু পাইনা! পুতেরইতো চলেনা, নইলেতো খাওন দিতই। হেই ঘরে পইরা আছে। চেয়ারম্যানের কাছে কয়বার গেলাম! দেয়না কিছু! সেই গেলো রমজান মাসে এ প্রতিবেদককে কাছে পেয়ে এইভাবেই করুন সুরে কথাগুলো বলেছিলেন রোযা রাখা অবস্থায় ৯২ বছর বয়সের এক বৃদ্ধা নারী। তার বাড়ি উপজেলার ৩নং কৈচাপুর ইউনিয়নের দর্শারপাড় গ্রামে। তার সাথে কথা বলে জানা যায়, এই বয়সেও সে একটি রোযা ভাঙ্গেনি তখন। কিছু জিজ্ঞেস করলে কথা বলতে গিয়ে অবাক দৃষ্টিতে ফ্যাঁলফ্যাঁল করে তাকিয়ে ছিলেন। একপর্যায়ে নিরব হয়ে যায়।একপর্যায়ে ভাঙ্গা পা’টা দেখিয়ে নিঃশ্বাস ছাড়ে।
স্বামী পরিত্যক্তা মেয়ে সুরবানু বলেছিলেন, উপজেলায় চার দিন মারে নিয়া গেছি। কইছে ছাগল দিবো, কার্ড দিবো। মেম্বারে দুইদিন যাইবার কইছে। পরে গেছি। পরে কিছুই দেইনাই। নামই নিছেনা! ছাগল দিবো কেমনে! বইয়া থাইকা চইলা আইছি। কত গেলাম, পাত্তাই পাইনা! কত বেহেরি ধরলাম! কিছুই পাইলামনা। মাইনসে বয়স্ক ভাতা পায়, বিধবা ভাতা পায়। আমরা কিছুই পাইনা।পরে ঐ মহিলার অসুস্থ্য ছেলে রহেদ আলীর সাথে কথা বললে তিনি বলেছিলেন, আমিও ঘরে পইরা আছি। শরীর ফুইলা গেছে আমার। শ্বাসকষ্ট হাপানীতে ভুঁগছি।মারে ঠিকমতো দেখবার পাইতাছিনা। ৭ বছর যাবত পা ভাইংগা ‘মা’ ঘরে পইরা আছে। ডাক্তার ময়মনসিংহ নিবার কইছিলো। অপারেশান করতে। লাখ খানেক টেহা লাগবো। এতো টেহা পাইবাম কই। পরে আর নিবার পাইনাই।জানা যায়, এই বয়সেও একটি রোযাও ভাঙ্গেনি নুরজাহান বিবি।তবে তার শরীর ভালো নেই।রোগ শোকে জর্জরিত। হয়তো একটি বয়স্ক ভাতার কার্ড পেলে শান্তিতে মরতে পারতেন কিছুটা হলেও তৃষ্ণা মিটিয়ে। সেই নুরজাহানের আকুতি একটি বয়স্ক ভাতার কার্ড।

Shares