তুচ্ছ ঘটনায় মিথ্যা প্রতিবেদন দেয়ার অভিযোগ
প্রকাশিতঃ ৭:২৩ অপরাহ্ণ | সেপ্টেম্বর ০২, ২০২২ । এই নিউজটি পড়া হয়েছেঃ ১৬১ বার
মোঃ দৌলত হোসেন নালিতাবাড়ীঃ তুচ্ছ বিষয়কে মিথ্যা সাক্ষ্য আর পক্ষপাতমূলক চিকিৎসা প্রতিবেদন দিয়ে পাকাপোক্ত মামলা সাজানোর অভিযোগ ওঠেছে শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে। গত বছরের ২০ সেপ্টেম্বর মামলাটির বিচারাধীন আদালতে এমন একটি অভিযোগপত্র দাখিল করেন এর তদন্তকারী কর্মকর্তা।
জানা গেছে, মধ্য মরিচপুরান গ্রামের ওমর ফারুকের স্ত্রী শামিমার কাছে পার্শ্ববর্তী রাকিব হোসেনের এক খালাতো ভাই বিয়ের আগের সম্পর্কের খাতিরে ধার দেওয়া তিন হাজার টাকা পেতেন। এরমধ্যে দুই হাজার পরিশোধের পর বাকী এক হাজার টাকা গত বছরের ২৫ জুলাই রোববার রাকিব হোসেনের মা নাজমা ভাগ্নের পক্ষে চাইতে যান। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে ওমর ফারুক নাজমাকে থাপ্পড় কষে। খবর পেয়ে রাকিব ক্ষিপ্ত হয়ে বাড়ির কাছেই আমনের ক্ষেতে কাজে থাকা ওমর ফারুকের পিতা আবুল হোসেনকে আকস্মিক লাঠি দিয়ে আঘাত করে। পরে তাকে ধরে বাড়িতে নিয়ে বেঁধে রাখে। এসময় আশপাশের লোকজন আবুল হোসেনকে ছাড়িয়ে দেন।
এদিকে আকস্মিক লাঠির আঘাতে বাম হাতে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে আহত আবুল হোসেনকে প্রথমে নালিতাবাড়ী ও পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ২ আগস্ট ওমর ফারুক বাদী হয়ে রাকিব, রাকিবের পিতা আব্দুল হালিম ও মা নাজমা বেগমকে আসামী করে নালিতাবাড়ী থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারে বাদীর টাইপ করা আবেদনে রড দিয়ে পেটানোর কথা উল্লেখ করা হলেও ২০ সেপ্টেম্বর আদালতে চার্জশীট দাখিলকালে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার সাথে যোগসাজশে সেক্ষেত্রে লাঠি ও রড দিয়ে পেটানোর পাশাপাশি দায়ের এলোপাতারি কোপের কথা উল্লেখ করা হয়। এ কথাকে পাকাপোক্ত করতে বাদীর পছন্দের ৮জন সাক্ষকে দিয়ে দায়ের কোপের মিথ্যা সাক্ষ্য সংযুক্ত করা হয়। একইসঙ্গে বাম হাতের ভাঙাকে ‘গ্রিভিয়াস’ উল্লেখ করাতে যোগসাজশ করা হয় সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ডাঃ সাব্বির হোসেনের সাথেও। মামলার বাদী উল্লেখিত চিকিৎসক, তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সাক্ষ্যদের সাথে যোগসাজশ করে ৩২৩/৩২৫ ও অন্যান্য ধারার সাথে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ৩২৬ ধারা সংযুক্ত করা হয়।
সরেজমিনে গেলে প্রতিবেশি ও প্রত্যক্ষদর্শী হাবিবুর রহমান এবং হানিফ উদ্দিন তোতাসহ অন্যরা জানান, পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে ওমর ফারুক রাকিবের মা নাজমাকে চড়থাপ্পড় মারায় রাকিব ক্ষিপ্ত হয়ে মাকে অপমানের প্রতিশোধ নিতে ওমর ফারুকের বাবা আবুল হোসেনকে লাঠি দিয়ে আঘাত করেছে। এরপর তাকে বাড়ি এনে বাঁধতে চাইলে আমরা ছাড়িয়ে দিয়েছি। ঘটনা এখানেই শেষ। কিন্তু দা দিয়ে কোপানোর মতো বা বড় ধরণের কোন মরামারি তখন হয়নি। এলাকাবাসী আরও জানান, রাকিবের আঘাতে আবুল হোসেন আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ায় তখনই আমরা বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মিমাংসায় যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু কতিপয় লোকের কূট-পরামর্শে ছোট বিষয়টিকে আদালতে গড়িয়ে বড় বানানো হয়েছে।
আহত আবুল হোসেন বলেন, টাকা পাওনা থাকলে আমার পুত্রবধুর কাছে পাওনা। ঝগড়া হলে আমার ছেলের সাথে হয়েছে। কিন্তু আমাকে কেন মারধর করা হলো?
রাকিব ও তার স্বজনেরা জানান, ওমর ফারুক বয়সে অনেক ছোট। পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে মায়ের বয়সী নাজমাকে চড়-থাপ্পড় দেওয়ায় মায়ের অপমান সইতে না পেরে রাকিব ফারুকের পিতা আবুল হোসনকে কাছে পেয়ে তাকেই লাঠি দিয়ে আঘাত করা হয়। কিন্তু বেঁধে রেখে মারধর ও দা দিয়ে কোপানোর কথা সম্পূর্ণ কাল্পনিক। এ অভিযোগ আমাদের হেনস্তা করার জন্য তোলা হয়েছে।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের মতামত জানতে চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।