হালুয়াঘাটে দুই শিক্ষিকার তদন্ত নিয়ে যা বললেন শিক্ষা কর্মকর্তারা
প্রকাশিতঃ ৬:৩৬ অপরাহ্ণ | জুন ২৬, ২০২৩ । এই নিউজটি পড়া হয়েছেঃ ৯০ বার
স্টাফ রিপোর্টারঃ তথ্য গোপন করে প্রকৃত পরিচয় আড়াল করে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে চাকরি নেয়া তাহিরা খানম রুম্মান ও ফাতেমা জান্নাত মৌরি নামে দুই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে।এর আগে গত ৬ এপ্রিল ময়মনসিংহ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার, প্রাথমিক শিক্ষার বিভাগীয় উপ-পরিচালক বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তবে তনন্ত প্রক্রিয়া ধীরগতি নিয়ে জানতে চাইলে ২৬ জুন সোমবার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ শফিউল হক বলেন, তদন্ত নিয়ে সংশ্লিষ্ট উপজেলা শিক্ষা অফিসার কাজ করছে। আশা করি খুব দ্রুতই তা সম্পন্ন হবে, এবং কোন প্রকার সত্যটা পেলে অবশ্যই দুই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। একই বিষয়ে জানতে চাইলে প্রাথমিক শিক্ষার ময়মনসিংহ বিভাগীয় উপ-পরিচালক মোঃ সানাউল্লাহ বলেন, নিয়োগ বিধিতে স্পষ্ট করে উল্লেখ রয়েছে, কোন প্রকার অসত্য তথ্য দিয়ে চাকরির আবেদন করলে তা যেকোন সময় প্রমানিত হলে তার চাকরি বাতিলসহ তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজো হবে। সেক্ষেত্রে বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে নিয়েছি আমরা। ঈদের ছুটি শেষে এ বিষয়ে উপযুক্ত প্রদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, প্রকৃত পরিচয় আড়াল করে অন্য জেলা থেকে এসে এই জেলায় আবেদন করে চাকরি গ্রহণ করায় এখানকার দুইজন লোক চাকরি থেকে বঞ্চিত হয়েছে যা অনাকাঙ্খিত। এ ঘটনায় অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে দুই শিক্ষিকাকে। হালুয়াঘাট উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বিনয় চন্দ্র শর্মা বলেন, তদন্ত শেষ পর্যায়ে। ঈদের ছুটির পরেই রিপোর্ট প্রেরণ করা হবে। উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সিদ্ধান্ত নিবে কি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। তবে দুই শিক্ষিকা অন্য জেলা থেকে নিজের প্রকৃত পরিচয় আড়াল করে এ উপজেলায় চাকরি গ্রহণ করেছে যার প্রাথমিক সত্যটা মিলেছে। আরেক তদন্ত কর্মকর্তা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোহম্মদ মুনজুরুল হক জুয়েল বলেন, ঈদের ছুটি শেষ হলেই তদন্ত প্রতিবেদন প্রেরণ করা হবে।তিনি বলেন, তদন্ত প্রকৃয়া শেষ করতে একটু সময় নিতে হয়েছে। অনেক কাজ রয়েছে, যা সময় লাগারই কথা। তবে এখন আর কোন কাজ বাকী নেই। যথাসময়েই জেলা অফিসে প্রেরণ হবে। এদিকে অস্বচ্ছ প্রকৃয়াই চাকরি নেয়া দুই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা দায়েরেরও প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।এছাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক পদে আবেদন করে চাকরি না পাওয়া মাহবুবুর রহমান হিমেল (পরীক্ষার রোল-১৮২২০২৩) ও পলি খাতুন (পরীক্ষার রোল-১৮২০০৭৪) নামে দুই পরীক্ষার্থীও মামলা করার ঘোষণা দিয়েছেন।জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ শফিউল হক বলেন, তদন্ত প্রতিবেদনে সত্যটা পেলে চাকরি হারানোসহ শাস্তির আওয়ায় আসবে। সুত্রমতে জানা যায়, নিজের ব্যক্তিগত স্থায়ী ঠিকানা আড়াল করে শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার স্থায়ী বাসিন্দা সত্ত্বেও হালুয়াঘাট উপজেলার স্থায়ী বাসিন্দা দেখিয়ে বাহিরশিমুল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ নেন তাহিরা খানম রুম্মান। একই কায়দায় প্রশ্চিম পাবিয়াজুড়ি চকপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ নেন তাহিরা খানম রুম্মানের সহোদর ছোট বোন ফাতেমা জান্নাত মৌরি।দুই শিক্ষিকার স্থায়ী ঠিকানা নালিতাবাড়ীর কাকরকান্দি ইউনিয়নের বরুয়াজানী গ্রামে।উভয়ের পিতার নাম আমির হোসেন খান ও মাতার নাম আক্তারা খাতুন। তাহিরা খানম রুম্মানের শশুরবাড়ী ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলায় আর ফাতেমা জান্নাত মৌরির শশুর বাড়ী নালিতাবাড়ীর গোজাকুড়া গ্রামে। পিতার ঠিকানা বা স্বামীর ঠিকানায় আবেদন না করে হালুয়াঘাটের শাকুয়াই ইউনিয়ন আর হালুয়াঘাট পৌরসভার নাগরিক দেখিয়ে চাকরির আবেদন করেন।