আজ শনিবার , ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |

শিরোনাম

এম্বুলেন্সে করে মাদক পাচারকালে ২৪০ বোতল ভারতীয় মদসহ একজন আটক এমপি মাহমুদুল হক সায়েমকে সি.আই.পি শামিমের সংবর্ধনা হালুয়াঘাটে ঈদে বাড়ি ফেরার পথে লাশ হল স্বামীসহ অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী হালুয়াঘাটের স্থলবন্দর দিয়ে ২৭টি পণ্যের আমদানী রপ্তানীর পরিকল্পনা-এমপি সায়েম হালুয়াঘাটে ২৭ হাজার দুস্থ অসহায় পাচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার ১৩ বছর পর পদত্যাগ করলেন ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হালুয়াঘাটে ফেইসবুক গ্রুপে কোরআন তেলাওয়াত ও ইসলামী সংগীত প্রতিযোগিতা। পুরস্কার বিতরণ ‘কৃষ্ণনগরের কৃষ্ণকেশীর ‘বেহিসেবি রঙ.. হিমাদ্রিশেখর সরকার হালুয়াঘাট থেকে ফুলপুর পর্যন্ত চার লেনের রাস্তা নির্মাণসহ সড়ানো হচ্ছে অস্থায়ী বাস কাউন্টার জনগণের অধিকার আদায় না হওয়া পর্যন্ত বিএনপি রাজপথে থাকবে-প্রিন্স ডামি নির্বাচন করে গণতন্ত্রকে আইসিইউতে পাঠিয়েছে আওয়ামী লীগ-প্রিন্স বাজারে পণ্যের অগ্নিমূল্যের তাপ তাদের গায়ে লাগেনা-প্রিন্স নালিতাবাড়ীতে প্রেসক্লাবের নির্বাচন, সভাপতি সোহেল সম্পাদক মনির গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে-বিএনপি নেতা প্রিন্স হালুয়াঘাটে বিএনপি নেতা প্রিন্স’র লিফলেট বিতরণ

হালুয়াঘাটে টাকা ছাড়া মিলছেনা সেচ লাইসেন্স

প্রকাশিতঃ ৬:০৭ অপরাহ্ণ | জানুয়ারি ২৬, ২০২১ । এই নিউজটি পড়া হয়েছেঃ ৫১৬ বার

ওমর ফারুক সুমন: জমির মালিক হয়েও সেচ স্কিমের জন্য বিদ্যুৎ সংযোগের ছাড়পত্র ও সেচ লাইসেন্স বিএডিসি দিচ্ছে না অথচ যার চাষাবাদের জমি নেই তাকে অর্থের বিনীময়ে বিদ্যুৎ সংযোগের ছাড়পত্র ও সেচ লাইসেন্স দেয়া হয়েছে এমন বহু অভিযোগ উঠেছে হালুয়াঘাট-ধোবাউড়ার বিএডিসি’র উপ-সহকারী প্রকৌশলী আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে। ধোবাউড়া উপজেলার পোড়াকান্দুলীয়া ইউনিয়নের কাশীনাথপুর গ্রামের মৃত খোরশেদ আলীর ছেলে কৃষক মোঃ শাকিল মিয়া ও একই গ্রামের মৃত বুরুজ আলীর ছেলে মাওলানা আকিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের জমি স্কিম ম্যাপের আওতায় দেখানো হলেও আমরা জানিনা। যাব কোথায় ? বিভিন্ন মাধ্যমে বিএডিসি উপ-সহকারী প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম(সেচ) উৎকোচ দাবী করে ছিল, দিতে রাজী না হওয়ায় আমাদের ভাগ্যে বিদ্যুৎ সংযোগের ছাড়পত্র বা সেচ লাইসেন্স জুটেনি।
এ ব্যাপারে বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, ধোবাউড়া উপজেলা চেয়ারম্যান, বিএডিসি নির্বাহী প্রকৌশলী (সেচ) বরাবরে বেশ কিছু কৃষক লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। সুত্রে জানা যায়, ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট-ধোবাউড়া দুইটি উপজেলায় বোর চলতি মৌসুমে প্রায় ৪ শত সেচ লাইসেন্স অনুমোদন দিয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে লাইসেন্স দেওয়ার নামে অসহায় সেচ মালিকদের কাছ থেকে প্রায় অর্ধকোটি টাকা নিরবে বানিজ্য করেছেন তিনি। সেচ মালিকদের দাবী, উপ-সহকারী প্রকৌশলী আমিনুল ইসলাম এবং অফিস সহকারী বাহার উদ্দিন দুটি উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ঘুরে ঘুরে গভীর ও অগভীর নলকুপ স্থাপনে অনিয়ম ও দুর্নীতি মাধ্যমে মোটা অংকের টাকা বানিজ্য করেছেন। ভোক্তভুগীরা জানান, একাধিক অভিযোগ দাখিল করা সত্বেও কোন অভিযোগই তদন্ত করে ব্যবস্থা নিচ্ছেন না উপর মহলের কর্মকর্তাগন। উপজেলার বিলডোরা ইউনিয়নে বিলডোরা মৌজায় পুরাতন ৩টি সেচের অধিনে আরো একটি নলকুপ স্থাপনের আবেদন মঞ্জুর করেন বিএডিসি অফিস যা নিয়ম বহির্ভুত। এ নিয়ে গত ১২ ডিসেম্বর স্কীম ম্যানেজার রফিকুল ইসলাম সহ ৩ জন বাদী হয়ে সেচ কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বিএডিসি অফিসের বরাবরে এক লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন যা এখনও তদন্তাধিন রয়েছে। ধোবাউড়া উপজেলার দুধনই গ্রামের আশরাফ আলী বলেন, আমার নলকুপ স্থাপনে কোন অনিয়ম নাই এরপরও বিএডিসি অফিস কর্মকর্তা মোঃ বাহার উদ্দিন ৮ হাজার টাকার বিনিময়ে লাইসেন্স প্রদান করেন। এমন শত শত অভিযোগ রয়েছে উপজেলা বিএডিসি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। টাকা ছাড়া কোন সেচ লাইসেন্স প্রদান করেনি এই কর্মকর্তা এমন অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। প্রতি ছোট-বড় সেচের জন্য সরকারী লাইসেন্সে ফি ৩ থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা এবং ব্যাংক চালান ৩০০ টাকা থাকলেও নেওয়া হচ্ছে ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা। দুরত্ব বজায় না রেখে নিয়ম বহির্ভূত নলকুপ স্থাপনের লাইসেন্স প্রদানে অবৈধ সেচ মালিকদের কাছ থেকে নেওয়া হয় ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। এই সব অভিযোগ অস্বীকার করেন উপজেলা বিএডিসি উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ আমিনুল ইসলাম ও অফিস কর্মকর্তা মোঃ বাহার উদ্দিন। ধোবাউড়ার গোয়াতলা ইউনিয়নের আকিকুল ইসলাম জানান, দীর্ঘ ৩০ বছর যাবৎ ডিজেল চালিত মেশিন দিয়ে সেচ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। উক্ত সেচের অধিনে পরিকল্পিতভাবে অর্থের বিনিময়ে আরেকটি সেচ লাইনের অনুমতি দিয়েছেন বিএডিসি অফিস যা নিয়ম বহির্ভুত। এ নিয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে দরখাস্ত দিয়েও কোন সুরাহা হচ্ছে না বলে জানান তিনি।
ধোবাউড়া উপজেলার কাশিনাথপুর গ্রামের জোবায়েরকে লাইসেন্স দেয়া হয়েছে। তার নিজস্ব কোন চাষাবাদের জমি নেই। স্কিমের আওতায় যাদের জমি দেখানো হয়েছে তারা কিছু জানেনা। প্রতিবেশী কৃষক শাকিল মিয়ার জানান, ৩০ বছর ধরে ডিজেল চালিত অগভীর নলকুপ দিয়ে চাষাবাদ করে আসছে। তার ২০ একর জমির জমি রয়েছে তাকে লাইসেন্স দেয়া হয়নি। এব্যাপারে শাকিল মিয়া ধোবাউড়া উপজেলা চেয়ারম্যান বরাবর গত ২০ ডিসেম্বর আবেদন করেছেন। উপজেলা চেয়ারম্যান তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বিএডিসির উপ-সহকারী প্রকৌশলী অনুরোধ করেছেন। এছাড়াও এব্যাপারে বিএডিসির নির্বাহী প্রকৌশলী, জেলা প্রশাসক বরাবরে অভিযোগ করেছেন। ধোবাউড়া উপজেলা দুধনই গ্রামের মাওলানা আকিকুল ইসলাম জোবায়ের বিরুদ্ধে উপজেলা চেয়ারম্যান বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছে। কিন্ত প্রতিকার নেই ।
এ বিষয়ে হালুয়াঘাট উপজেলা সেচ কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রেজাউল করিম জানান, চলতি বোর মৌসুমে নিয়ম বর্হিভুত সেচ লাইসেন্স আবেদনের বেশ কিছু অভিযোগ আমার কাছে এসেছে আমি তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বিএডিসির উর্ধ্বতন কর্মকর্তার নিকট পাঠিয়েছি। উক্ত লাইসেন্স প্রদানে অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হচ্ছে বিষয়টি আমি মৌখিকভাবে শুনেছি লিখিতভাবে কেউ অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জেলা বিএডিসির সহকারী প্রকৌশলী আতিকুর রহমান বলেন অনিয়মের প্রমাণসহ কোন লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ধোবাউড়া উপজেলা পরিষদের ডেভিড রানা বলেন, বিএডিসির লাইসেন্স দেয়ার ক্ষেত্রে এত অনিয়ম অভিযোগ এই নিয়ে দেন দরবার করতে করতে এখন অতিষ্ট হয়ে পড়েছি। স্বচ্ছতা বা জবাবদিহিত না থাকায় সেচ স্কিমের আওতায় কৃষকদের মাঝে বিরোধ সৃষ্টি করা হচ্ছে। এতে ঝগড়া বিবাদ, মারামারির ঘটনা ঘটছে এবং খুন খারাপির ঘটনা ঘটতে পারে। এব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের কোন ভুমিকা নেই। এব্যাপারে জেলা প্রশাসক মোঃ মিজানুর রহমান অভিযোগগুলো তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন।#

Shares