শেষ এক বলে বাংলাদেশ দলের স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার
প্রকাশিতঃ ৪:৪৮ অপরাহ্ণ | সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৮ । এই নিউজটি পড়া হয়েছেঃ ৬০৪ বার
অনলাইন ডেস্কঃ শেষ ওভারে ভারতের দরকার ৬। কে আসবেন বোলিংয়ে? মাশরাফী একবার সৌম্য সরকারের কথা ভাবলেন! পরে ফিরে গেলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের কাছে। কেদার-কূলদ্বীপ প্রথম পাঁচ বল থেকে নিলেন পাঁচ। ম্যাচ ড্র। শেষ বলে এক নিয়ে চ্যাম্পিয়ন ভারত!
এর আগে টস হেরে ওপেনিংয়ে চমক আনে বাংলাদেশ। তারপর শতাধিক রানের জুটি। এক সময় হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে বড় সংগ্রহের সম্ভাবনা মাটি। বোলিংয়েও আশার সূর্য উঁকি দিয়ে মিইয়ে যাওয়ার গল্প। শেষ অবধি ওই ৩ উইকেটের হার।
ফাইনাল মানেই যেন গল্পের পরাজিত তকমাটি বাংলাদেশের। এই এশিয়া কাপে বাংলাদেশ প্রথম ফাইনাল খেলে ২০১২ সালে। সেবার মিরপুরে মাত্র ২ রানে পাকিস্তানের কাছে ম্যাচ হাতছাড়া করে ট্রফি জয়ের স্বপ্নভঙ্গ হয়। টি-টুয়েন্টি ফরম্যাটে ঢাকায় অনুষ্ঠিত ২০১৬ আসরেও ফাইনাল খেলে বাংলাদেশ। ভারতের বিপক্ষে ৮ উইকেটে হেরে রানার্সআপ হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় স্বাগতিকদের। এবার দুবাইয়ে একই দলের বিপক্ষে আরেকটি হার। এই দলটির কাছে নিধাস ট্রফির ফাইনালেও জিততে জিততে শেষ বলে হারতে হয়েছিল বাংলাদেশকে।
মিরাজ-লিটন শতাধিক রানের জুটি গড়লেও বাংলাদেশ ২২২’র বেশি করতে পারেনি। লিটন ১১৭ বলে ১২১ রানের ইনিংস খেলেন। মিরাজ করেন ৩২। শেষ দিকে সৌম্য সরকার খেলেন ৩৩ রানের ইনিংস।
শেষ ২৪ বলে ভারতের দরকার ছিল ১৮ রান। এখান থেকে ভুবনেশ্বর কুমার এবং রবীন্দ্র জাদেজা আরও ৭ রান যোগ করেন। এমন সময় রুবেল জাদেজাকে ফিরিয়ে আশা জাগান। অবাক করার বিষয় হলো বল জাদেজার ব্যাটে লাগলেও আম্পায়ার ক্যাচের আবেদনে সাড়া দেননি। মুশফিক রিভিউ নিয়ে সফল হন।
শেষ ১২ বলে ভারতের দরকার ছিল ৯। হাতে চার উইকেট। ৪৯তম ওভারে ভুবনেশ্বর কুমারকে (২১) মুশফিকের ক্যাচ বানান মোস্তাফিজ। এই ওভারে ফিজ ৩ রান দিয়ে গেলে শেষ ওভারে ভারতের দরকার পড়ে ৬।
এরআগে ভারত ৮৩ রানে ৩ উইকেট হারানোর পর ৩৭তম ওভারে ১৬০ রানের মাথায় পঞ্চম উইকেট হারায়। অভিজ্ঞ ধোনি মোস্তাফিজের শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরলে ভারতীয় ড্রেসিংরুমে দুশ্চিন্তার চোরাস্রোত বয়ে যায়। বারবার মাঠে আসতে থাকে বার্তা। এক পর্যায়ে অপরাজিত ব্যাটসম্যান কেদার যাদবকে উঠিয়ে ভুবনেশ্বর কুমারকে নামানো হয়।
বাংলাদেশ পঞ্চম ওভারে নাজমুল ইসলাম অপুর হাত ধরে প্রথম সাফল্য পায়। ১৪ বলে ১৫ রান করা শেখর ধাওয়ানকে সৌম্য সরকারের ক্যাচ বানান অপু।
অষ্টম ওভারে আম্বতি রায়ডুকে ফেরান মাশরাফী। দেখার মতো এক ইনসুইঙ্গারে মুশফিকের হাতে ২ রানে রায়ডুকে ধরা পড়তে বাধ্য করেন।
এরপর অধিনায়ক রহিত শর্মা ফেরেন হাফসেঞ্চুরি থেকে দুই রান দূরে থাকতে। রুবেলের বলে ধরা পড়েন অপুর হাতে।
বিপজ্জনক হয়ে উঠছিলেন ধোনি। হিসাব কষে দিনেশ কার্তিককে নিয়ে ব্যাট করতে থাকেন। দুজনে ৫৪ রানের জুটি গড়ে ফেলেন। ৩১তম ওভারে রিয়াদের একটি ফুলটস খেলতে গিয়ে এলবিডব্লিউ হন দিনেশ। ধোনি এরপর কেদার যাদবকে নিয়ে এগুতে থাকেন। ৩৭তম ওভারের প্রথম বলে তাকে বিদায় করেন মোস্তাফিজ। অফস্টাম্পের বাইরে পিচ করা বল শেষ মুহূর্তে লাফিয়ে ওঠে। ধোনি তাতে ব্যাট চালিয়ে কানায় লাগান। ৬৭ বলে ৩৬ রানের মাথায় ধরা পড়েন মুশফিকের হাতে।
বাকি সময়ে ম্যাচ দুলতে-দুলতে ভারতের কোলে হেলে পড়ে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ: ৪৮.৩ ওভারে ২২২ (লিটন ১২১, মিরাজ ৩২, ইমরুল ২, মুশফিক ৫, মিঠুন ২, মাহমুদউল্লাহ ৪, সৌম্য ৩৩, মাশরাফী ৭, নাজমুল ৭, মোস্তাফিজ ২*, রুবেল ০; ভুবনেশ্বর ০/৩৩, বুমরাহ ১/৩৯, কূলদীপ ৩/৪৫, জাদেজা ০/৩১, কেদার ২/৪১)
ভারত: ৫০ ওভারে ২২৩/৭ (রোহিত ৪৮, ধাওয়ান ১৫, রায়ডু ২, কার্তিক ৩৭, ধোনি ৩৬, কেদার ২৩*, জাদেজা ২৩, ভুবনেশ্বর ২১, কূলদীপ ৫*; মিরাজ ০/২৭, মোস্তাফিজ ২/৩৮, নাজমুল ১/৫৬, মাশরাফী ১/৩৫, রুবেল ২/২৬, মাহমুদউল্লাহ ১/৩৩)