আজ শনিবার , ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |

শিরোনাম

এম্বুলেন্সে করে মাদক পাচারকালে ২৪০ বোতল ভারতীয় মদসহ একজন আটক এমপি মাহমুদুল হক সায়েমকে সি.আই.পি শামিমের সংবর্ধনা হালুয়াঘাটে ঈদে বাড়ি ফেরার পথে লাশ হল স্বামীসহ অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী হালুয়াঘাটের স্থলবন্দর দিয়ে ২৭টি পণ্যের আমদানী রপ্তানীর পরিকল্পনা-এমপি সায়েম হালুয়াঘাটে ২৭ হাজার দুস্থ অসহায় পাচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার ১৩ বছর পর পদত্যাগ করলেন ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হালুয়াঘাটে ফেইসবুক গ্রুপে কোরআন তেলাওয়াত ও ইসলামী সংগীত প্রতিযোগিতা। পুরস্কার বিতরণ ‘কৃষ্ণনগরের কৃষ্ণকেশীর ‘বেহিসেবি রঙ.. হিমাদ্রিশেখর সরকার হালুয়াঘাট থেকে ফুলপুর পর্যন্ত চার লেনের রাস্তা নির্মাণসহ সড়ানো হচ্ছে অস্থায়ী বাস কাউন্টার জনগণের অধিকার আদায় না হওয়া পর্যন্ত বিএনপি রাজপথে থাকবে-প্রিন্স ডামি নির্বাচন করে গণতন্ত্রকে আইসিইউতে পাঠিয়েছে আওয়ামী লীগ-প্রিন্স বাজারে পণ্যের অগ্নিমূল্যের তাপ তাদের গায়ে লাগেনা-প্রিন্স নালিতাবাড়ীতে প্রেসক্লাবের নির্বাচন, সভাপতি সোহেল সম্পাদক মনির গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে-বিএনপি নেতা প্রিন্স হালুয়াঘাটে বিএনপি নেতা প্রিন্স’র লিফলেট বিতরণ

প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের দেওয়া গরু, চলে গেল ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের গোয়ালে

প্রকাশিতঃ ৬:০৬ অপরাহ্ণ | সেপ্টেম্বর ১৩, ২০২৩ । এই নিউজটি পড়া হয়েছেঃ ৬০ বার

মোঃ দৌলত হোসেন নালিতাবাড়ী:
শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে সমতল ভূমিতে বসবাসরত অনগ্রসর ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক ও জীবন মানোন্নয়নের লক্ষ্যে সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে বিনামূল্যে বিতরণকৃত গরু, গো-খাদ্য ও ঘর নির্মাণের সরঞ্জামসহ তুলে নিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আ’লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হযরত আলী। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সম্প্রদায়ের আলভার্ট নামে এক ব্যক্তিকে দিয়ে তার নামে উত্তোলনের পর হোটেলে খাইয়ে মাত্র দশ হাজার টাকা হাতে ধরিয়ে ও সাদা কাগজে স্বাক্ষর রেখে ওইসব নিয়ে নেন তিনি। এমনি লিখিত অভিযোগ বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) জমা পড়েছে শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয়ে।
ভুক্তভোগী সূত্রে সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, সম্প্রতি প্রাণী সম্পদ কার্যালয়ের অধীনে উপজেলার সমতল ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সম্প্রদায়ের ৫০ জনের মাঝে একটি করে গরু, ১৫০ কেজি করে গো-খাদ্য ও গোয়ালঘর নির্মাণের জন্য ৫টি খুঁটি, ৫টি ঢেউটিন এবং ১৬০টি ইট বিনামূল্যে বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ১নং পোড়াগাঁও ইউনিয়ন থেকে তালিকা আহবান করা হলে গত ৭ আগস্ট তালিকা প্রেরণ করেন ইউপি চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন। তালিকায় উপকারভোগীদের মাঝে ২০১৫ সালে মৃত আন্ধারুপাড়া গ্রামের নির্মলা সাংমার নাম অন্তর্ভূক্ত করেন তিনি।
৩০ আগস্ট এসব বিতরণের তারিখ ধার্য করে উপজেলা প্রাণী সম্পদ কার্যালয়। তবে এর আগেই জামাল উদ্দিন দেশের বাইরে চলে যান। ফলে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেন প্যানেল চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য হযরত আলী। বিতরণের আগের দিন পর্যন্ত নির্মলার জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহে ব্যর্থ হয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হযরত আলী মোবাইল ফোনে চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিনের সাথে পরামর্শ করেন। পরামর্শ অনুযায়ী নির্মলার নাম পাল্টে একই গ্রামের আলভার্টকে অন্তর্ভূক্ত করা হয়। ৩০ আগস্ট সকালে বাড়ি থেকে জনৈক হাবেজ উদ্দিনকে দিয়ে ডেকে পাঠিয়ে নিজের মোটরসাইকেলে করে আলভার্টকে নালিতাবাড়ী নিয়ে আসেন হযরত আলী। পরে উপজলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওয়াজ করুনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান, উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের উপস্থিতিতে আলভার্ট তার নামে থাকা গরুসহ অন্যান্য সরঞ্জাম উত্তোলন করেন। পরে হোটেলে নিয়ে খাওয়া-দাওয়া করিয়ে আলভার্ট এর হাতে ১০ হাজার টাকা তুলে দিয়ে গরুসহ প্রায় অর্ধলাখ টাকার মালামাল নিয়ে নেন হযরত আলী। শুধু তাই নয়, হযরত আলী নিজের মোটরসাইকেলে করে পুনরায় আলভার্টকে তার বাড়ি পৌছেও দেন। এর আগে আলভার্টের কাছ থেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষরও নেন হযরত আলী।
এদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার ফেসবুক টাইমলাইনে আলভার্টের গরু নেওয়ার ছবি প্রকাশ করা হলে এলাকায় বিষয়টি জানাজানি হয়। একপর্যয়ে তার সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনা খোলে বললে বুধবার স্বজনদের সহযোগিতায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন আলভার্ট।
সুবিধাবঞ্চিত আলভার্ট জানান, আগের রাতে তাকে ডেকে বাড়ি থেকে বের করে চা পান করিয়ে বিষয়টি জানায় হাবেজ উদ্দিন। পরদিন কথামতো হাবেজ উদ্দিন তাকে ডেকে এনে নিজে মোটরসাইকেলের পেছনে বসে তাকে মাঝখানে বসানো হয়। মোটরসাইকেল ড্রাইভ করেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হযরত আলী। পরে শহরে এনে গরু উত্তোলন করিয়ে হোটেলে খাবার খাইয়ে ও দশ হাজার টাকা হাতে দেওয়া হয় আলভার্টের। গরু পাওয়ার পর ওই গরু এবং অন্যান্য সরঞ্জাম নিয়ে তাকে পুনরায় বাড়ি পৌছে দেন হযরত আলী।
এলাকাবাসী জানান, ২০১৫ সালে নির্মলা মারা যাওয়ার পরও মাত্র একমাস আগে তার নাম সুবিধাভোগীর তালিকাভুক্তির বিষয়টি রহস্যজনক। চেয়ারম্যান সাহেব শুরু থেকেই বিষয়টি নিয়ে অন্যায়ের আশ্রয় নিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে স্বজনেরা ক্ষোভ প্রকাশ করে হযরত আলীর বিচার দাবী করেছেন।
এ বিষয়ে মতামত জানতে এলাকায় গিয়ে হযরত আলীকে পাওয়া যায়নি। বারবার ফোন দিলেও ফোন রিসিভ করেননি তিনি।
ম্যাসেঞ্জারে চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিনের সাথে যোগাযোগ করে মতামত জানতে চাওয়া হলে তাকে লাইনে পাওয়া যায়নি। তবে এর আগে তাকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ ফয়জুর রহমান লিখিত অভিযোগ প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, চেয়ারম্যান সাহেব দেশের বাইরে আছেন। তিনি দেশে ফিরলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।

Shares