আজ বৃহস্পতিবার , ৩০শে নভেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ |

শিরোনাম

হালুয়াঘাটে অটো রিক্সার চাপায় ৮ বছরের শিশুর মৃত্যু হালুয়াঘাটে ট্রলির চাপায় ৮ বছরের শিশুর মৃত্যু নালিতাবাড়ীতে ভারতীয় মদসহ যুবক গ্রেফতার বিদ্যালয়ের কক্ষ থেকে নৈশ প্রহরীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার বিদ্যালয়ের কক্ষ থেকে নৈশ প্রহরীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার হালুয়াঘাটে বিএনপি নেতা প্রিন্স’র মুক্তির দাবীতে মিছিল বাউফলে অবরোধ কর্মসুচী পালন বাউফলে অবরোধ কর্মসুচী পালন ১৮০ বোতল ভারতীয় মদ আটক করল হালুয়াঘাট থানা পুলিশ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা নাহিদকে হালুয়াঘাটে সংবর্ধনা কু-প্রস্তাবে রাজী না হওয়ায় সংখ্যালঘু নারীকে নির্যাতন,সংবাদ সম্মেলনে মামলা না নেওয়ার অভিযোগ মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে ইউপি সদস্যের সংবাদ সম্মেলন মুক্তাগাছায় সেকান্দর হত্যায় আটক দুই ইত্তেফাকুল উলামার নেতৃবৃন্দের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিচারের দাবিতে জেলা প্রশাসকের কাছে স্বারকলিপি আওয়ামিলীগ নেতা গোপাল সরকারকে প্রেসক্লাবের সংবর্ধনা

অসুস্থ পিতা-মাতার ভরসা চা বিক্রেতা বাক প্রতিবন্ধী ‘মনিষা’

প্রকাশিতঃ ৫:২৯ অপরাহ্ণ | নভেম্বর ২১, ২০২২ । এই নিউজটি পড়া হয়েছেঃ ৩৮৫ বার

ওমর ফারুক সুমনঃ বাক প্রতিবন্ধী মনিষা সাহা।ঠিকমতো কথা বলতে না পারলেও আঠারো বছর বয়সে বাবা-মায়ের একমাত্র ভরসা এই কিশোরী। সকাল সন্ধায় চা বিক্রি করে সংসারের খরচ জুগার করতে হচ্ছে তাকে। আবার চালাতে হচ্ছে পড়ালেখাও। মেধার কমতি নেই মনিষার। জয়রামকুড়া স্কুল এন্ড কলেজের এইচ.এস.সি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ।এদিকে হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে চলছেন পিতা মিলন সাহা। অসুস্থ্য পিতাকে সুস্থ্য করে তুলতে প্রতিনিয়ত লড়াই করে যাচ্ছেন মনিষা। রবিবার বিকেলে মনিষার চায়ের দোকানে গেলে দৈনিক মানবজমিনে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে জানা যায় এমন তথ্য। মনিষা জানান, বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান তিনি।এক খন্ড জায়গা জমি নেই পরিবারটির। হালুয়াঘাট পোষ্ট অফিস রোডে অন্যের বাড়ীতে ভাড়া থেকে চা বিক্রি করে লেখাপড়ার পাশাপাশি অদম্য লড়াই করে চলেছেন আঠারো বছর বয়সী এই মেয়েটি। এদিকে বাবা মিলন সাহা গলায় টিউমারে আক্রান্ত।স্থানীয়দের সহযোগীতায় একবার অপারেশন করেও শেষ রক্ষা হয়নি। পরবর্তীতে আবারও দেখা দেয় স্বাস্থ্যের অবনতি। গলার টিউমারটি আস্তে আস্তে বড় হতে থাকে। এমতাবস্থায় মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েন পরিবারের প্রত্যেকটি সদস্য। কোনপ্রকার উপায়ান্তর না পেয়ে হতাশ হয়ে যান মনিষা। বারবার কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়তে দেখা আয় তাকে।পিতাকে সুস্থ করে তুলতে তার অদম্য লড়াইয়ের গল্পটি আসলে খুবই হৃদয়বিদারক। চা বিক্রি করে কয়েকটি টাকা পেলেও তা দিয়ে চলেনা সরকার। বাসা ভাড়া, স্কুল খরচ, সংসার খরচ সব কিছুই যেনো নাগালের বাহিরে। এমন দুর্ভোগের মধ্যে নতুন করে সামনে আসে চিকিৎসা খরচ। অপারেশন করতে প্রয়োজন অনেক টাকা। তারপরেও নৈরাশ না হয়ে আশার বীজ বপন করে চলেছেন মনিষা।চা বিক্রি করে পরিবারটির জন্যে কিছুটা হলেও ভরসা জুগিয়ে যাচ্ছেন। একান্তে কথা বললে মনিষা বলেন, আমি সকলের সহযোগীতা চাই।বাবা মা ছাড়া এই দুনিয়াতে আর কেউ নেই আমার। আমার বাবাকে সুস্থ করতে চাই। হেল্প প্লিজ। জানা যায়, ১৯৭১ সালে সব কিছু হারিয়ে মিলন সাহার পিতা নব কিশোর সাহা স্বপরিবারে নেত্রকোনা থেকে পারি জমান ভারতীয় শরণার্থী শিবিরে। সেখান থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম সিরাজুল ইসলাম বেগ নিয়ে আসেন হালুয়াঘাটে।মিলন সাহা এবং তার মা টুকটাক কাজকর্ম করে সংসার চালালেও বর্তমানে বাবা এবং মা দুজনেই অসুস্থ্য হয়ে পড়ায় সমস্ত চাপ এসে পড়ে একমাত্র কন্যা বাক প্রতিবন্ধী মনিষা সাহার উপর। এ অবস্থায় টাকার অভাবে পড়ালেখা চালিয়ে যেতে হিমসিম খেতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। মনিষার মাতা অপর্ণা সেও অসুস্থ। পিতা মাতা উভয়েই অসুস্থ থাকায় পুরো চাপ এসে পড়ছে বাক প্রতিবন্ধী মনিষার উপর।এ ঘটনায় স্থানীয়দের সাথে কথা বললে তারাও জানান বাক প্রতিবন্ধী মনিষা সাহার চা বিক্রির পিছনে দুর্বিসহ জীবনের কথা। মনিষার অদম্য লড়াইয়ের স্বাক্ষী প্রতিবেশীসহ তার শিক্ষকরাও। মনিষার শিক্ষক আশ্রাফুল ইসলাম বলেন, প্রতিবন্ধী হয়েও এই বয়সে অদম্য লড়াই করতে হচ্ছে তাকে। বাবা মা অসুস্থ থাকায় কষ্ট করে যাচ্ছে মেয়েটি। সকলের সহযোগীতা পেলে হয়তো বাবার চিকিৎসা করাতে পারতো। বাবা মায়ের চিকিৎসার খরচ যোগাতে পড়ালেখার পাশাপাশি মনিষা সাহার এমন অদম্য পরিশ্রমের বর্ণনা দিয়েছেন জয়রামকুড়া স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ-আব্দুল কাদির।তিনি বলেন, মনিষা সাহা অনেক মেধাবী। তার জন্যে কলেজের পক্ষ থেকে যাবতীয় সহযোগীতা করা হয়। মনিষার কাছ থেকে কোন টাকা পয়সাও নেয়া হয়না।

Shares