আজ বুধবার , ২২শে মার্চ, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ৮ই চৈত্র, ১৪২৯ বঙ্গাব্দ |

শিরোনাম

শেরপুরে হেযবুত তাওহীদের সংবাদ সম্মেলন হালুয়াঘাটে পৌরসভা নির্বাচনে ১২১৩ ভোটের ব্যবধানে ‘খুররম’ বিজয়ী নগদে হোল্ডিং টেক্স পরিশোধে নালিতাবাড়ীতে উদ্যোক্তাদের সাথে মতবিনিময় সভা বাউফলে জমি নিয়ে বিরোধ, সংঘর্ষ। আহত ১০ ভূমিহীন মুক্ত করতে নালিতাবাড়ীতে টাস্কফোর্সের সভা সেঁজুতি মাদার্স ক্লাবের নারী দিবস পালিত পথরোধ করে মারধর, টাকা ছিনতাই পুলিশ মেমোরিয়াল ডে উপলক্ষে সার্জেন্ট আহাদ স্বরণে নালিতাবাড়ীতে আলোচনা সভা নালিতাবাড়ীতে চিত্র প্রদর্শনী উদ্ভোধন শেখ হাসিনা দেশের চেহেরা পাল্টে দিয়েছে-মতিয়া চৌধুরী পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন নালিতাবাড়ী প্রেসক্লাবের প্রয়াত সাবেক সাধারণ সম্পাদক স্বরণে দোয়া নকলা প্রেসক্লাবে নতুন সদস্য অন্তর্ভুক্তির আবেদন আহবান ঋতুরাজ বসন্ত বরণে সেঁজুতি বিদ্যানিকেতনের শিক্ষার্থীরা নালিতাবাড়ীতে চুরির অভিযোগে কিশোর নির্যাতন

অসুস্থ পিতা-মাতার ভরসা চা বিক্রেতা বাক প্রতিবন্ধী ‘মনিষা’

প্রকাশিতঃ ৫:২৯ অপরাহ্ণ | নভেম্বর ২১, ২০২২ । এই নিউজটি পড়া হয়েছেঃ ২৮৬ বার

ওমর ফারুক সুমনঃ বাক প্রতিবন্ধী মনিষা সাহা।ঠিকমতো কথা বলতে না পারলেও আঠারো বছর বয়সে বাবা-মায়ের একমাত্র ভরসা এই কিশোরী। সকাল সন্ধায় চা বিক্রি করে সংসারের খরচ জুগার করতে হচ্ছে তাকে। আবার চালাতে হচ্ছে পড়ালেখাও। মেধার কমতি নেই মনিষার। জয়রামকুড়া স্কুল এন্ড কলেজের এইচ.এস.সি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ।এদিকে হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে চলছেন পিতা মিলন সাহা। অসুস্থ্য পিতাকে সুস্থ্য করে তুলতে প্রতিনিয়ত লড়াই করে যাচ্ছেন মনিষা। রবিবার বিকেলে মনিষার চায়ের দোকানে গেলে দৈনিক মানবজমিনে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে জানা যায় এমন তথ্য। মনিষা জানান, বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান তিনি।এক খন্ড জায়গা জমি নেই পরিবারটির। হালুয়াঘাট পোষ্ট অফিস রোডে অন্যের বাড়ীতে ভাড়া থেকে চা বিক্রি করে লেখাপড়ার পাশাপাশি অদম্য লড়াই করে চলেছেন আঠারো বছর বয়সী এই মেয়েটি। এদিকে বাবা মিলন সাহা গলায় টিউমারে আক্রান্ত।স্থানীয়দের সহযোগীতায় একবার অপারেশন করেও শেষ রক্ষা হয়নি। পরবর্তীতে আবারও দেখা দেয় স্বাস্থ্যের অবনতি। গলার টিউমারটি আস্তে আস্তে বড় হতে থাকে। এমতাবস্থায় মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েন পরিবারের প্রত্যেকটি সদস্য। কোনপ্রকার উপায়ান্তর না পেয়ে হতাশ হয়ে যান মনিষা। বারবার কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়তে দেখা আয় তাকে।পিতাকে সুস্থ করে তুলতে তার অদম্য লড়াইয়ের গল্পটি আসলে খুবই হৃদয়বিদারক। চা বিক্রি করে কয়েকটি টাকা পেলেও তা দিয়ে চলেনা সরকার। বাসা ভাড়া, স্কুল খরচ, সংসার খরচ সব কিছুই যেনো নাগালের বাহিরে। এমন দুর্ভোগের মধ্যে নতুন করে সামনে আসে চিকিৎসা খরচ। অপারেশন করতে প্রয়োজন অনেক টাকা। তারপরেও নৈরাশ না হয়ে আশার বীজ বপন করে চলেছেন মনিষা।চা বিক্রি করে পরিবারটির জন্যে কিছুটা হলেও ভরসা জুগিয়ে যাচ্ছেন। একান্তে কথা বললে মনিষা বলেন, আমি সকলের সহযোগীতা চাই।বাবা মা ছাড়া এই দুনিয়াতে আর কেউ নেই আমার। আমার বাবাকে সুস্থ করতে চাই। হেল্প প্লিজ। জানা যায়, ১৯৭১ সালে সব কিছু হারিয়ে মিলন সাহার পিতা নব কিশোর সাহা স্বপরিবারে নেত্রকোনা থেকে পারি জমান ভারতীয় শরণার্থী শিবিরে। সেখান থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম সিরাজুল ইসলাম বেগ নিয়ে আসেন হালুয়াঘাটে।মিলন সাহা এবং তার মা টুকটাক কাজকর্ম করে সংসার চালালেও বর্তমানে বাবা এবং মা দুজনেই অসুস্থ্য হয়ে পড়ায় সমস্ত চাপ এসে পড়ে একমাত্র কন্যা বাক প্রতিবন্ধী মনিষা সাহার উপর। এ অবস্থায় টাকার অভাবে পড়ালেখা চালিয়ে যেতে হিমসিম খেতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। মনিষার মাতা অপর্ণা সেও অসুস্থ। পিতা মাতা উভয়েই অসুস্থ থাকায় পুরো চাপ এসে পড়ছে বাক প্রতিবন্ধী মনিষার উপর।এ ঘটনায় স্থানীয়দের সাথে কথা বললে তারাও জানান বাক প্রতিবন্ধী মনিষা সাহার চা বিক্রির পিছনে দুর্বিসহ জীবনের কথা। মনিষার অদম্য লড়াইয়ের স্বাক্ষী প্রতিবেশীসহ তার শিক্ষকরাও। মনিষার শিক্ষক আশ্রাফুল ইসলাম বলেন, প্রতিবন্ধী হয়েও এই বয়সে অদম্য লড়াই করতে হচ্ছে তাকে। বাবা মা অসুস্থ থাকায় কষ্ট করে যাচ্ছে মেয়েটি। সকলের সহযোগীতা পেলে হয়তো বাবার চিকিৎসা করাতে পারতো। বাবা মায়ের চিকিৎসার খরচ যোগাতে পড়ালেখার পাশাপাশি মনিষা সাহার এমন অদম্য পরিশ্রমের বর্ণনা দিয়েছেন জয়রামকুড়া স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ-আব্দুল কাদির।তিনি বলেন, মনিষা সাহা অনেক মেধাবী। তার জন্যে কলেজের পক্ষ থেকে যাবতীয় সহযোগীতা করা হয়। মনিষার কাছ থেকে কোন টাকা পয়সাও নেয়া হয়না।

Shares