হাতির আক্রমণ থেকে ফসল রক্ষায় রাত জেগে পাহারা
প্রকাশিতঃ ৪:২৭ অপরাহ্ণ | মার্চ ০৯, ২০২২ । এই নিউজটি পড়া হয়েছেঃ ১৮৮ বার
প্রতিনিধি,নালিতাবাড়ী,শেরপুর: শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্তবর্তী নাকুগাঁও গ্রামে বন্যহাতির আক্রমণে গত সোম ও মঙ্গলবার দুই দিনে ওই এলাকার ৮ প্রান্তি কৃষকের সাড়ে ৩ একর বোরো ফসল আংশিক হাতির পাল খেয়ে এবং পা দিয়ে মাড়িয়ে নষ্ট করে দিয়েছে। বাকি ফসল রক্ষায় কৃষকরা দুশ্চিন্তায় রাত জেগে পার করছেন। বর্তমানে ৪০-৪৫টি ছোট বড় হাতির দলটি নাকুগাঁও ও ভারত সীমান্তের বানেরটিলায় অবস্থান করছে।
ময়মনসিংহ বন বিভাগ,ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সীমান্তবর্তী নাকুগাঁও গ্রামে পাহাড়ের ঢালে প্রায় শতাধিক প্রান্তিক কৃষকের ১৫০ একর জমিতে বোরো আবাদ করেছেন। গত সোম ও মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর হঠাৎ ৪০-৪৫টি বন্য হাতির পাল নাকুগাওয়ের বানেরটিলা চলে আসে। পরে ২০-২৫টি হাতি নাকুগাঁও গ্রামের ফসলি জমিতে নেমে পরে। এসময় নাকুগাঁও গ্রামের ইদ্রিস আলীর ৪০ শতক, আবদুল খালেকের ৩০ শতক,ফুলেমা চিসিম ৫০ শতক,সাগর মারাকের ৪০ শতক,আলিম উদ্দিনের ৩০ শতক,প্রনব চিসিম ৫০ শতক, দুলু মিয়া ৩০ শতক ও তোতা মিয়ার ৪০ শতক আবাদি জমির ফসল খেয়ে এবং পা দিয়ে মাড়িয়ে নষ্ট করে ফেলেছে।
হাতির দলটি নাকুগাঁওয়ের বানেরটিলায় সীমান্তবর্তী ১১১৫ নং পিলারের কাছে অবস্থান করায় স্থানীয় কৃষকরা দুশ্চিন্তায় সময় পার করছেন। গ্রামবাসী হাতি তাড়াতে বন বিভাগ ও সকারী ভাবে উদ্যোগ নেওয়া দাবী জানিয়েছেন।
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ইদ্রিস আলী বলেন,আমি নাকুগাঁও স্থলবন্দরে শ্রমিকের কাজ করে বাবা-মাসহ পাঁচ সদস্যের সংসার চালাতে হয়। ১৬ হাজার টাকা খরচ করে এক একর জমিতে বোরো ধান করেছি। গত সোমবার সন্ধ্যায় বন্যহাতির পালটি খেতে নেমে আমাদের ফসল নষ্ট করে দিয়েছে। বাকি ফসল রক্ষা না করতে পারলে আমাদের মহা বিপদে পড়তে হবে।
প্রান্তিক কৃষক আলিম উদ্দিন বলেন,ঋণ কইরা ১০ কাডা (৪০ শতক) জমিতে বোরো ধান লাগাইছি। হঠাৎ কইরা হাতির পাল খেতে নাইমা পইড়া দুই কাডা জমি খাইয়া আর পাও(পা) দিয়া ফসল মাডির(মাটির) লগে মিশাইয়া ফালাইছে। গ্রামবাসী সবাই হইহেুাল্লুর কইরা খেত থাইকা হাতি সড়ানো অইছে। অহন রাইত জাইগা সবাই হাতি পাহাড়া দিতাছি।
ইউপি সদস্য আবদুল মান্নান বলেন, ১০০ একর জমির ফসল নিয়ে স্থানীয় প্রান্তি কৃষকরা দুশ্চিন্তায় রয়েছে। হাতি প্রতিরোধে লাইট ও মশাল জ্বালাতে তেল প্রয়োজন। ফসল রক্ষায় এলাকাবাসী রাত জেগে পাহাড়া বসিয়েছেন।
নয়াবিল ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, হাতির আক্রমণে কৃষকদের ফসল আংশিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছেন। ফসল রক্ষায় হাতি তাড়াতে মশাল জ্বালাতে তেল কিনতে কিছু অর্থ দেওয়া হয়েছে। প্রতিরাতে হাতি তাড়াতে গ্রামবাসি রাত জেগে পাহাড়া দিচ্ছেন।
ময়মনসিংহ বন বিভাগের মধুটিলা ইকোপার্কের রেঞ্জার আবদুল করিম বলেন,তিন দিন ধরে ৪০-৪৫টি বন্যহাতির দল নাকুগাঁও বানেরটিলায় অবস্থান করছে। সন্ধ্যার পর পর হাতির দলটি কয়েকটি দলে বিভিক্ত হয়ে খেতে নেমে পড়ে ফসলি জমি পা দিয়ে নষ্ট করে ফেলেছে। আমি ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের নিয়ম মেনে ক্ষতিপূরণের জন্য আবেদন করতে বলেছি।