করোনা টেস্ট করাতে অনিহা
প্রকাশিতঃ ৪:১০ অপরাহ্ণ | জুলাই ৩০, ২০২১ । এই নিউজটি পড়া হয়েছেঃ ৩৭৬ বার
ওমর ফারুক সুমনঃ স্ত্রী-ছেলে সন্তান সকলেই করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত। নমূনা পরীক্ষা করে জানতে পারে পরিবারের একজন ছাড়া সকলের রিপোর্ট আসে পজিটিভ। এখন প্রশ্ন হলো সেই একজনটা কে? একজন হচ্ছে পরিবারের বড় কর্তা। তবে তিনি করোনার উপসর্গ নিয়ে ঘুরছেন। তিনি জানেন, টেস্ট করালে তারও পজিটিভ আসবে। তবুও লজ্জায় টেস্ট করাতে রাজী নন । গতকাল দুপুরে হালুয়াঘাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এরকম একজন কুলসুম (৫৫) (ছদ্ধনাম) নামীয় নারী করোনা রোগীর সাথে কথা বলে জানা যায় এমন তথ্য। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্ত্রী জানান, স্বামীকে বারবার বলার পরেও টেস্ট করাতে রাজী নন তিনি। এরকম এক কুলসুম বা কুলসুমের স্বামী নয়। কুলসুমের মতো অনেকেই প্রতিনিয়ত ঘুরে বেড়াচ্ছেন উপসর্গ নিয়ে। জ্বর সর্দি ঠান্ডা বলে চালিয়ে দিচ্ছে। বা সামান্য প্যারাসিটামল বা এন্টিবায়োটিক খেয়ে যাচ্ছেন। সুস্থ্য হচ্ছেন বেশিরভাগই। আবার জটিল অবস্থার সন্মুখীন হয়ে টেস্ট করাচ্ছেন কেউ কেউ। এমন একটা মুহুর্তে টেস্ট করাতে যান যখন আক্রান্তটা শেষ প্রান্তে চলে যায়। সম্প্রতি সময়ে এমনও ঘটনা ঘটেছে, টেস্ট করানোর জন্যে লাইনে দাঁড়িয়েছে, এমন অবস্থাতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। আবার কেউ মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে যাওয়ার আগেই মৃত্যুবরণ করছে। পরে নমূনা টেস্ট করার পর জানা গেছে তিনি করোনা পজিটিভ ছিলো। হালুয়াঘাট বাজারের বিভিন্ন ঔষধের দোকান গুলোতে দেখা যায়, জ্বর-সর্দি-কাশির মতো করোনা উপসর্গ নিয়ে মানুষের ভিড়। ফার্মেসির মালিকরা বলছে, স্বর-সর্দি নিয়ে ঔষধ নিতে আসে বেশিরভাগ মানুষই। এজিথ্রোমাইসিন, ফেক্সুফেনাডিন, ডক্সিসাইক্লিন আর প্যারাসিটামল গ্রুপের ঔষধ বেশি কিনছেন আগত রোগীরা। চিকিৎসকরা বলছে, করোনার উপসর্গ দেখা দিলে এই ঔষধগুলো খাওয়া যাই। কোনো ক্ষতি নেই। তাই এই ঔষধগুলোই ফার্মেসীগুলোতে বেশি বিক্রি হয়। রোগীরা টেস্ট না করে জ্বর-সর্দি মনে করেই চালিয়ে যাচ্ছে। শাপলা বাজার এলাকার আসমা খাতুন (৩৪) নামে এক নারী বলেন, এই পর্যন্ত আমার শরিরে কয়েকবার করোনা হয়েছে। টেস্ট করলে ঠিকই ধরা পড়তো। আমি করোনা নিয়েই ঘুরে বেড়ায়। টেস্ট করাতে আগ্রহী নয়। গ্রামের মানুষদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গ্রামের লোকদের নাকি করোনা আক্রমন কম করে। তাদের দাবী, রোদ-বৃষ্টিতে ক্ষেতে খামারে কাজ করলে করোনা আক্রমন করেনা। হালুয়াঘাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ল্যাব সহকারী বেলাল বলেন, উপজেলায় এ পর্যন্ত ২৩ শত জনের কিছু বেশী লোক করোনা টেস্ট করিয়েছে। যার মধ্যে ৪শত জনের মতো পজিটিভ এসেছে। মারা গেছে ৭ জন। হালুয়াঘাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মুনির আহমেদ বলেন, ইদানিং কিছুটা টেস্ট বেড়েছে। শিক্ষিত সচেতন লোকদের মধ্যে কেউ কেউ আসছে, আর সাধারন লোকদের মধ্যে টেস্ট করানো লোকের সংখ্যা খুবই কম। সরকার বিনা পয়সায় টেস্ট করাতে চাইলেও মানুষের মাঝে সেইভাবে আগ্রহ সৃষ্টি হয়নি বলে মন্তব্য করেন এই চিকিৎসক।