দুধের খামার করে স্বাবলম্বী হালুয়াঘাটের চুয়ান্নহাজার গ্রাম
প্রকাশিতঃ ১১:৩৬ অপরাহ্ণ | জুন ০৩, ২০১৮ । এই নিউজটি পড়া হয়েছেঃ ৫৫৩ বার
ওমর ফারুক সুমনঃ হালুয়াঘাট উপজেলার চুয়ান্নহাজার গ্রাম দুধের খামার করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। উক্ত গ্রামটিকে দুগ্ধ খামারের গ্রাম নামেই সকলের নিকট পরিচিত হয়ে আসছে। এই গ্রামে গড়ে ওঠেছে ছোট বড় উন্নত ফ্রিজিয়ান জাতের প্রায় ৪০-৫০ টি গাভীর দুগ্ধ খামার। এক একটি খামারে রয়েছে ৪-১০ টি দুগ্ধ উৎপাদনকারী গাভী। প্রতিটি গাভীর বাজার মুল্য ২ থেকে ৩ লক্ষ টাকা। খামার করে তারা হয়েছে স্বাবলম্বী। হালুয়াঘাট উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দক্ষিনে নাগলার চুয়ান্নহাজার নামে গ্রামটি। গতকাল রবিবার সরেজমিনে এই দুগ্ধ খামারের গ্রাম থেকে ঘুরে এসে দেখা যায় নানা চমকপ্রদ তথ্য। গ্রামটি আয়তনে ছোট ও অনেকটা মফস্বল এলাকা হিসেবেও পরিচিত। শিক্ষার হারও তুলনামুলকভাবে কম। খামারিদের আলাদা কোন প্রশিক্ষনও নেই। সম্পূর্ণ নিজেদের উদ্যোগ ও মেধা খাটিয়েই গড়ে তুলেছে এইসব দুগ্ধ খামার। মোস্তফা কামাল(৪০) নামে এক খামারি জানান, তার খামারে রয়েছে ৪ টি উন্নত জাতের ফ্রিজিয়ান জাতের গাভী। তার একাডেমিক কোন খামারের প্রশিক্ষন নেই। একটি মাত্র গাভীর বাচ্চা দিয়ে পাঁচ বছর পুর্বে শুরু করেছিলেন তার খামারের যাত্রা। আজ সে ১০ লক্ষাধিক টাকার গাভীর মালিক। একইভাবে ফজলুল হক খোকা(৬০) তার খামারে রয়েছে ৫টি, মোশারফের(৩৫) ৪টি, মশিউরের (২৫) ৪টি, এবাদুল ইসলামের (৫৪) ৭টি, হাফিজুল(৪০), মোঃ সুলতান মিয়া(৩৫), জুবায়ের(১৬), শফিকুল ইসলাম(৩২), আলী আকবর(৫০), নুরুদ্দিন(৫৫), নেওয়াজ আলী(৪৮), নাজিম উদ্দিন(৩৫), মুক্তার উদ্দিন(৬৫), বিল্লাল(৪০), খালেক(৫৫), ইবান আলী(২২), ফয়েজুর রহমান(৩৫) এদের প্রত্যেকের খামারে ফ্রিজিয়ান জাতের ৪-১০ টি করে দুগ্ধ উৎপাদনকারী গাভী রয়েছে। এর বাহিরেও পুরো গ্রামে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে আরো অনেক খামার। তাই এই গ্রামটি দুগ্ধ খামারের গ্রাম হিসেবেই পরিচিতি লাভ করছে। ফজলুল হক খোকা নামে এক খামারি জানান, মাত্র ১৫ হাজার টাকা দিয়ে একটি বাছুর কিনে তার খামারের যাত্রা শুরু। এখন সে প্রায় ১০ লক্ষাধিক টাকার মালিক। তবে দুধের বর্তমান বাজার খুবই কম। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, দুধ বেঁচার জায়গা নেই। এখন খামার ছাইরা দিতে মন চাই। খামারি এবাদুল ইসলাম ও হাফিজুল জানান, বর্তমানে খামার করার পরিবেশ নেই। দুধের বাজার একেবারেই কম। দুধ নিয়ে বাজারে বিক্রি করতে গেলে ৩০-৩৫ টাকা কেজি বিক্রি করতে হয়। তাই তারা আশে পাশের চা দোকানগুলোতেই ৪০-৪৫ টাকা কেজি দরে দুধ বিক্রি করে থাকেন। দুগ্ধ খামারে গাভীর খাদ্য বিক্রেতা মোঃ মনিরুল ইসলাম মনির জানান, এই সকল খামারিরা ব্যাংক থেকে কোন ঋনের সুবিধা পাননা। যদি তাদেরকে খামারের প্রশিক্ষনের ব্যাবস্থা সহ সহজ শর্তে ব্যাং থেকে ঋনের সুবিধা পেত তাহলে আরো তাড়াতাড়ি ক্ষামারগুলো আরো বিস্তর লাভ করতে পারতো। খামারিদের প্রত্যেকের দাবী তাদের জন্যে সহজ শর্তে ঋনের ব্যাবস্থা করা। এ জন্য সরকারের দৃষ্টি কামনা করেছেন।
[aps-counter]