প্রকল্পের পাওনা টাকা দাবী: ইউপি চেয়ারম্যানের নির্দেশে হামলার অভিযোগ
প্রকাশিতঃ ৯:১৮ অপরাহ্ণ | মে ২১, ২০২২ । এই নিউজটি পড়া হয়েছেঃ ১৭৫ বার
নালিতাবাড়ী (শেরপুর) সংবাদদাতাঃ টিআর-কাবিটা প্রকল্পের অর্থায়নে বাস্তবায়িত দুটি প্রকল্পের মাটি কাটার বকেয়া টাকা চেয়ে লিখিত অভিযোগ দেওয়ায় স্কেভেটর মালিকসহ চারজনকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে চেয়ারম্যান সমর্থকরা। গতকাল শুক্রবার (২০ মে) বিকেলে শহরের উত্তর বাজারে হামলার এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার রূপনারায়নকুড়া ইউপি চেয়ারম্যান মুঞ্জুল আল মামুন ও তার সমর্থকদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ আনা হয়েছে। জানা গেছে, ২০২১-২০২২ অর্থবছরের টিআর এবং কাবিটা’র পৃথক বরাদ্দে ওই ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের কাওয়াকুড়ি বুরুকুড়ি রাস্তা ও ১নং ওয়ার্ডের সিঙ্গুয়ারপাড় রাস্তায় মাটি কাটার লক্ষ্যে স্থানীয় স্কেভেটর মালিক সাইফুল ইসলামের সাথে চুক্তি করা হয়। ইউপি চেয়ারম্যান মুঞ্জুর আল মামুন এর পক্ষে তারই একনিষ্ঠ কর্মী শফিকুল ইসলাম স্কেভেটর মালিক সাইফুল ইসলামকে ঘণ্টাপ্রতি ৮৫০ টাকা হারে গত ১৪ জানুয়ারি মাটি কাটার কাজ দেয়। চুক্তি অনুযায়ী মাটি কাটার শেষ হয় ৬ ফেব্রুয়ারি। এরমধ্যে চুক্তিমূল্য অনুযায়ী স্কেভেটর ভাড়া পাওনা বাবদ ৭৯ হাজার ৩৯০ টাকার মধ্যে ২৭ হাজার ৩শ টাকা পরিশোধ করে বাকী টাকা বকেয়া রাখে চেয়ারম্যান এর প্রতিনিধি শফিকুল। এদিকে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে প্রকল্পের পুরো টাকা উত্তোলন করে নেন সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যান। কিন্তু কাজ শেষ করার প্রায় দুই মাস পেরিয়ে গেলেও স্কেভেটর মালিকের বকেয়া টাকা পরিশোধ করা হয়নি। এমতাবস্থায় স্কেভেটর মালিক বিষয়টির সমাধান চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর গত ২ মে লিখিত আবেদন করেন।
একপর্যায়ে বিষয়টি ইউপি চেয়ারম্যান এসোসিয়েশন পর্যন্ত গড়ালে শুক্রবার বিকেলে এসোসিয়েশন এর সভাপতি আব্দুস সবুর ও সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামানসহ সংশ্লিষ্টরা বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে বৈঠকে বসেন। বৈঠকে বকেয়া প্রমাণিত হলে তা পরিশোধ সাপেক্ষে সমাধান করা হয়।
এর কিছুক্ষণ পর বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে স্কেভেটর মালিক সাইফুল ইসলাম, তার ভাই ও বাবাসহ চারজন মিলে বাড়ি ফিরছিল। পথিমধ্যে শহরের উত্তর বাজার হোটেল তৃপ্তি’র সামনে আসা মাত্রই আকস্মিক চেয়ারম্যান এর কর্মী ইমরানসহ কয়েকজন লাঠিসোটা নিয়ে পেছন দিকে থেকে হামলা চালায়। এতে স্কেভেটর মালিক সাইফুল ইসলাম ওরফে শাহজাহান (৩২), ভাই সোহেল (২৮), পিতা আব্দুল করিম (৬৫) ও সঙ্গে থাকা নাজমুল (২৫) আহত হন। পরে তাৎক্ষণিক আশপাশের লোকজন তাদের উদ্ধার করে নালিতাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। আহতদের মধ্যে সাইফুল ইসলামের মাথা ফেটে গেছে এবং হাতের কনুই ও আঙ্গুল ভেঙ্গে গেছে বলে জানিয়েছেন কর্তব্যরত চিকিৎসক।
এ ঘটনায় রাতেই ইউপি চেয়ারম্যান মুঞ্জুর আল মামুনসহ কয়েকজনকে অভিযুক্ত করে নালিতাবাড়ী থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
এ বিষয়ে চেয়ারম্যান মুঞ্জুর আল মামুন অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, আমি যাকে দিয়ে কাজ করিয়েছি তাকে (শফিকুলকে) সব টাকা পরিশোধ করে দিয়েছি। শফিকুল স্কেভেটর মালিককে এখনও সব টাকা দেয়নি। কিন্তু আমার কাছে কোন পাওনা নেই। তার নির্দেশে হামলার বিষয়টিও অস্বীকার করেন তিনি। তবে আহতরা জানিয়েছেন, বৈঠক শেষে চেয়ারম্যান দূরে দাড়িয়েছিলেন। পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তারই নির্দেশে আমাদের উপর অতর্কিতে হামলা চালানো হয়েছে। থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বছির আহমেদ বাদল জানান, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। আসামী গ্রেফতারের চষ্টা চলছে।