নালিতাবাড়ীর চেল্লাখালী নদীর জিরো পয়েন্টে তীর ভেঙ্গে বালু উত্তোলন
প্রকাশিতঃ ১১:৫৯ অপরাহ্ণ | জুলাই ০৯, ২০২৩ । এই নিউজটি পড়া হয়েছেঃ ৪৪ বার
নালিতাবাড়ী (শেরপুর) প্রতিনিধি:
শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্তবর্তী খরস্রোতা চেল্লাখালী নদীর জিরো পয়েন্ট এলাকার খলচান্দা গ্রাম থেকে দুই পাড়ের নদী তীর ভেঙ্গে গভীর গর্ত করে বালু উত্তোলন করছে কতিপয় বালু ব্যবসায়ীরা। অপরিকল্পিতভাবে ক্ষতবিক্ষত করে নদীতীর ভেঙ্গে ফেলায় হুমকীতে পড়ছে পাশ্ববর্তী কোচ আধিবাসী পল্লী খলচান্দা ও বুরুঙ্গা গ্রামের বেশ কয়েকটি বাড়িঘর। তাই গ্রামবাসী জরুরীভিত্তিতে এর প্রতিকারের দাবী জানিয়েছেন।
সরেজমিনে জানা গেছে, সরকার রাজস্ব আদায়ের লক্ষে চলতি বাংলা সনের জন্য নালিতাবাড়ী উপজেলার পাহাড়ি কন্যা চেল্লাখালী নদীর বালু মহাল ইজারা দেয়। একই সঙ্গে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই নদীর জিরো পয়েন্ট এলাকার সীমানা নির্ধারন করে লাল নিশান টানিয়ে দেওয়া হয়। এতে বাংলাদেশ-ভারত আন্তর্জাতিক সীমানার জিরো পয়েন্ট ও নোম্যন্স ল্যান্ড এলাকা নির্ধারিত হয়। এদিকে, জিরো পয়েন্ট এলাকা থেকে নদীতীর ভেঙ্গে গভীর গর্ত করে বালু উত্তোলনে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা মানছে না স্থানীয় বালু ব্যবসায়ীরা। তারা নির্ধারিত লাল নিশানের কমপক্ষে ৩০ গজ বাইরে উজানের দিক থেকে লম্বা পাইপের সাহায্যে বালু উত্তোলন করছে। এমনকি লাল নিশান থেকে কমপক্ষে ৫০ গজ দক্ষিণে ভাটির দিকে পুর্ব ও পশ্চিম দুই তীরে শ্যালু ইঞ্জিন চালিত প্রায় ২০টি মিনি ড্রেজার মেশিন বসিয়ে দেদারছে বালু উত্তোলন করছে ব্যবসায়ীরা। অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলন করায় ধ্বসে পড়ছে দুই পাড়ের নদীতীর। সেই সঙ্গে ধ্বসে পড়ছে দুই পাড়ের পাহাড় ও গাছপালা। এতে হুমকীতে পড়েছে পুর্ব পাড়ের খলচান্দা কোচপল্লী ও পশ্চিম পাড়ের বুরুঙ্গা গ্রামের বেশ কয়েকটি বাড়িঘর।
স্থানীয় বাসিন্দা শ্রী পরিমল কোচ জানান, এভাবে নদীতীর ভেঙ্গে বালু উত্তোলন ও পরিবহনের কারনে পাহাড়ঘেঁষা খলচান্দা কোচপাড়া গ্রামের বাড়িঘর হুমকীতে পড়েছে। গ্রামে যাওয়ার একমাত্র রাস্তাটিও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এই একমাত্র রাস্তাটিতে বর্ষাকালে পানি জমে আর শুষ্ক মৌসুমে বালুর কারনে চলাচল করতে পারেন না গ্রামবাসীরা। এছাড়া ড্রেজার মেশিনের বিকট শব্দে শব্দ দুষণে এই গ্রামে বসবাস করতে আমাদের বেশ সমস্যা হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বালু ব্যবসায়ী জানান, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চেল্লাখালী নদীর উত্তরের শেষ প্রান্তে লাল নিশান টানিয়ে আমাদেরকে সীমানা বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাই আমরা লাল নিশানের ভিতর থেকেই নিয়ম মেনে বালু উত্তোলন করছি।
এ ব্যাপারে নালিতাবাড়ী উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভুমি) ঈফফাত জাহান তুলি জানান, চেল্লাখালী নদীর উত্তরে বুরুঙ্গা মৌজা ইজারা দেওয়া হয়েছে। খলচান্দা মৌজা ইজারা দেওয়া হয়নি। এছাড়া খলচান্দা গ্রামের জিরো পয়েন্ট এলাকা থেকে বালু উত্তোলনে কোন প্রকার অনুমতিও দেওয়া হয়নি। যদি কেউ ওই এলাকায় ড্রেজার মেশিন বসিয়ে নদীতীর ভেঙ্গে বালু উত্তোলন করেন তার বিরুদ্ধে অইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।