আজ মঙ্গলবার , ৩রা অক্টোবর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ | ১৮ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ |

শিরোনাম

ভূমি কর্মকর্তার প্রতিবেদনে হয়রানির শিকার হলেন প্রকৃত মালিক ফুলপুরে পুলিশের হাতে হালুয়াঘাটের দুই মাদক কারবারি আটক হালুয়াঘাটে ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী উপলক্ষে বিশাল র‍্যালী ও সমাবেশ নালিতাবাড়ীতে সকল ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে অনুদানের চেক বিতরন করেন মতিয়া চৌধুরী, নাকুঁগাও স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি রপ্তানি করে এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক পাল্টে যাবে- আইবিসিসিআই সভাপতি নালিতাবাড়ীতে ৫২ বোতল ভারতীয় মদসহ যুবক গ্রেফতার নাশকতার মামলায় অধ্যক্ষ তৌফিকুর রহমান কারাগারে মিথ্যে ও গায়েবি মামলা দিয়ে হয়রানি বন্ধ করুন-প্রিন্স প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের দেওয়া গরু, চলে গেল ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের গোয়ালে ওয়ার্ল্ড ভিশন মিডিয়া কম্পিটিশনে বিশেষ সম্মাননা সনদ পেলেন আনন্দ টিভি’র প্রতিনিধি বাধন_কৃষ্ণ অর্ধ কোটি টাকা মূল্যের জমি দখলের চেষ্টা হালুয়াঘাটে বিএনপির তিন গ্রুপের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন বিএনপিকে আওয়ামীলীগ ভয় পায়-প্রিন্স স্বাক্ষর জালের মামলায় কারাগারে জুলহাস নিজেকে মুক্তি যোদ্ধার সন্তান দাবি করায় প্রকৃত দই বোন মুক্তিযোদ্ধা ভাতা থেকে বঞ্চিত

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে একদিন

প্রকাশিতঃ ৫:৩২ অপরাহ্ণ | জুন ০১, ২০১৮ । এই নিউজটি পড়া হয়েছেঃ ১,৫৭৪ বার

ওমর ফারুক সুমনঃ প্রাকৃতিক রহস্যময় সৃষ্টিগুলোর মধ্যে সমুদ্র অন্যতম। বিশাল সমুদ্রের পরতে পরতে লুকিয়ে আছে অপার রহস্য ও বিস্ময়। এই সৌন্দর্য লুকিয়ে আছে বিস্তৃত বালুকারাশি, নুড়ির প্রবাল আর ঢেউয়ের দোলায়। অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি নদীমাতৃক বাংলাদেশের পুরো দক্ষিণ উপকূল জুড়ে সমুদ্রসৈকত থাকলেও দুটি সৈকত বিখ্যাত। এর একটি হলো বিশ্বের সর্ববৃহৎ সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার এবং অপরটি হলো সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখার বিস্ময়কর স্থান কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত। তাই ভ্রমণপিপাসু ও সৌন্দর্যপ্রেমিক মানুষের কাছে কুয়াকাটা সৈকতই প্রথম পছন্দ। পটুয়াখালী জেলায় অবস্থিত ১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ নৈসর্গিক সৌন্দর্যের এ পাদভূমি সারা বছরই পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয়। অপরদিকে সৌন্দর্য পিপাসু দুরন্ত মনে ছোটবেলা থেকেই সমুদ্র দর্শনের প্রবল ইচ্ছা ছিল। গল্প, কবিতা, উপন্যাসে সমুদ্রতট সম্পর্কে পড়ে শিক্ষকদের রোমাঞ্চিত বর্ণনা শোনার পর সমুদ্রের বিশালতা সম্পর্কে আমার কিশোর মনে নানা রকম কল্পনা সারাক্ষণ দোলা দিয়ে যেত। আমার কল্পনার চক্ষু সারাক্ষণ খুঁজে বেড়াত মহাসমুদ্রের দীর্ঘ সৈকত, আর বিস্তীর্ণ বেলাভূমি, চোরাবালির ভয়ঙ্কর ফাঁদ, দূর সমুদ্রের গর্জন, নীল সমুদ্রের হাতছানি আরও কত কী! এসবই আমার মনে কল্পনার ফানুস উড়িয়ে আমাকে সমুদ্র ভ্রমণে উৎসাহিত করেছিল।

সূর্যাস্তের অপূর্ব দৃশ্য: কক্সবাজারের সূর্যাস্তের অপূর্ব দৃশ্য একনজর দেখার জন্য প্রচুর দর্শনার্থীর সমাগম হয়। এ সময় চারিদিকে আনন্দঘন পরিবেশ সৃষ্টি হয়। পশ্চিমাকাশে রক্তিম আভায় নীল সমুদ্র আর সূর্যের লুকোচুরি খেলার দৃশ্য যে কারো জন্যই স্মরণীয় মুহূর্ত। এ সময়ের দৃশ্যাবলী ভাষা দিয়ে প্রকাশ করা দুঃসাধ্য। বিশাল থালার মতো লাল সূর্য চোখের সামনে সমুদ্রবক্ষে হারিয়ে যাওয়ার দৃশ্যের চেয়ে সুন্দর কিছু যেন আর নেই।

বিকেলের সূর্যাস্তের দৃশ্য: কক্সবাজার পৌছেই আমরা সমুদ্র তীরবর্তী রেস্টহাউজ ও পর্যটন হোটেলে গিয়ে বিকালের হালকা নাস্তা ও চা পান করে শরীরটা চাঙ্গা করে নিলাম। তারপর কাকডাকা বিকেলের পাখির কিচিরমিচির শব্দের মধ্য দিয়েই সকালে সূর্যাস্ত দেখার জন্য সমুদ্রের উপকূলের দিকে এগোলাম। এ সময় সকালের মৃদুমন্দ হিমেল হাওয়া আমাদের মনকে রোমাঞ্চে ভরিয়ে দিল। আমি যখন কল্পনার সাথে বাস্তবের মিল খোঁজার চেষ্টা করছি ঠিক তখনই লক্ষ্য করলাম পশ্চিমাকাশে কক্সবাজারের সূর্যাস্তের অপূর্ব দৃশ্য একনজর দেখার জন্য প্রচুর দর্শনার্থীর সমাগম হয়। এ সময় চারিদিকে আনন্দঘন পরিবেশ সৃষ্টি হয়। পশ্চিমাকাশে রক্তিম আভায় নীল সমুদ্র আর সূর্যের লুকোচুরি খেলার দৃশ্য যে কারো জন্যই স্মরণীয় মুহূর্ত। এ সময়ের দৃশ্যাবলী ভাষা দিয়ে প্রকাশ করা দুঃসাধ্য। বিশাল থালার মতো লাল সূর্য চোখের সামনে সমুদ্রবক্ষে হারিয়ে যাওয়ার দৃশ্যের চেয়ে সুন্দর কিছু যেন আর নেই।
দুপুরের রৌদ্রভরা নীলাকাশ: পরদিন দুপুর বেলা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সৈকতের উপকূলে দেশি-বিদেশি বিচিত্র মানুষের ভিড় বাড়তে থাকে। পৃথিবীর জল ও স্থলভাগের সন্ধিস্থলে দাঁড়িয়ে আমি অপার বিস্ময়ে মুগ্ধ নয়নে সৈকতের তীরে আছড়ে পড়া বিশাল ঢেউয়ের দৃশ্য উপভোগ করতে থাকি। দুপুর বারোটায় দলের সবাই সমুদ্রস্নানে ঝাঁপিয়ে পড়ে। আবার কেউ কেউ ফুটবল খেলা ও বালু মাখামাখি করে সময়টাকে উপভোগ করে। আমরা সবাই কিছু নুড়ি পাথর ও সামুদ্রিক শামুক কুড়িয়ে সমুদ্রস্নান সেরে নিলাম।
বিকালের রোমান্টিকতা: বিকেলে আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে পড়ন্ত রোদে সৈকতের পথে হাঁটতে বের হলাম। এ সময় চারপাশের ছবি তুলে আর শামুক-ঝিনুক কুড়িয়ে আমরা কিছুটা সময় পার করলাম। বিকেলে বালুর উপর চিকচিক রোদ এবং দর্শনার্থীদের বৈচিত্রতা আমার হৃদয়ে শিহরণ জাগিয়ে গেল। এমন সময় পুব আকাশে সাতটি রঙের অপরূপ সাজে সজ্জিত হয়ে বিশাল রঙধনু আলোর দ্যুতি ছড়িয়ে যেন আমাদের বরণ করে নিল। তখন আমার মন গেয়ে উঠলো- ‘কী সুন্দর মালা আজি পরিয়াছ গলে।’

উপসংহার: স্মৃতি মানুষকে তাড়া করে ফেরে। আর সেই স্মৃতি যদি হয় আনন্দ আর বেদনামিশ্রিত তাহলে তা হৃদয়ে স্থায়ী দাগ কেটে যায়। কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত মাত্র একদিনে আমার মনে যে গভীর ভাবাবেগ সৃষ্টি করে তা সত্যিই বিস্ময়কর। সমুদ্র তার নান্দনিক সৌন্দর্য দিয়ে মানুষের মনকে সব সংকীর্ণতা ও কুসংস্কার থেকে পরিশুদ্ধ করে কর্মক্লান্ত হৃদয়ে প্রশান্তি এনে দেয়। সমুদ্র মানুষকে উদারতা, কোমলতা ও প্রকৃতির প্রতি ভালোবাসার শিক্ষা দেয়। কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত ভ্রমণ আমার স্মৃতিতে, আমার হৃদয়ে অমলিন হয়ে থাকবে।

 

Shares