খুলনায় করোনা রোগীকে যৌন হয়রানী
প্রকাশিতঃ ৭:৫৩ অপরাহ্ণ | জুন ১৮, ২০২০ । এই নিউজটি পড়া হয়েছেঃ ৭২০ বার

ডেস্ক রিপোর্টঃ খুলনায় করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক গৃহবধূকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। গত ৬ই জুন থেকে একাধিকবার এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। এ নিয়ে হাসপাতালে উত্তেজনার সৃষ্টি হলে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগকৃত (আউট সোর্সিং) কর্মচারী নজরুল ইসলামকে বরখাস্ত করা হয়েছে। মঙ্গলবার তাকে আটক করেছে পুলিশ। অভিযোগে জানা যায়, গত ৬ই জুন করোনা পজিটিভ হয়ে ওই গৃহবধূ করোনা হাসপাতালে (আগে যেটি ছিল ডায়াবেটিস হাসপাতাল) ভর্তি হন। ভর্তির পর থেকেই আউটসোর্সিং কর্মচারী নজরুল ইসলাম নানাভাবে তাকে উত্ত্যক্ত করতে থাকে। ঘটনার দিন রাতের বেলায় নানা অজুহাতে তাকে স্পর্শ করার চেষ্টা করে। এছাড়া গভীর রাতে মহিলা ওয়ার্ডে এসে অন্য নারীদের ব্লাড প্রেসার মাপা বা অক্সিজেন দেওয়ার অজুহাতে সে গায়ে হাত দেওয়ার চেষ্টা করতো বলেও অভিযোগ রয়েছে।
ওই গৃহবধূ অভিযোগ করেন, ১৩ই জুন রাতে নজরুল মহিলা ওয়ার্ডে এসে তাকে ঘুম থেকে জাগিয়ে অপারেশন থিয়েটারে আসতে বলে। না এলে সমস্যা হবে বলে হুমকি দেয়। বিষয়টি তিনি ওয়ার্ডের অন্য রোগীদের জানিয়ে অপারেশন থিয়েটারে গেলে নজরুল তাকে জড়িয়ে ধরার চেষ্টা করে। এ সময় অন্য রোগীরা তাকে ঘেরাও করে বিষয়টি নার্স ও ডাক্তারদের অবহিত করেন। সোমবার এ নিয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানান, করোনা আক্রান্ত হয়ে এক গৃহবধূ গত ৬ই জুন খুলনা করোনা হাসপাতালে ভর্তি হন। গত ১৩ই জুন রাতে এক ওয়ার্ডবয় পিপিই পরে ওই রোগীর কাছে গিয়ে কুপ্রস্তাব দেয়। একপর্যায়ে ওই রোগীর শরীরে স্পর্শকাতর অঙ্গে হাত দিয়ে হয়রানি করে। বিষয়টি নার্সরা দেখে ফেলায় ওয়ার্ডবয় নজরুল দ্রুত সটকে পড়ে। খুলনা করোনা হাসপাতাল পরিচালনা করছে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। খুলনা মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ডা. মেহেদী নেওয়াজ বলেন, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে এ ধরনের অপরাধ মেনে নেয়া যায় না।
খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালের পরিচালক ডা. মুন্সী মো. রেজা সেকেন্দার বলেন, অভিযোগ ওঠার পর নজরুল ইসলামকে বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া মহিলা ওয়ার্ডে পুরুষরা কেন দায়িত্বে ছিল সে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এদিকে করোনা পজিটিভ রোগীকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে নজরুল ইসলাকে মঙ্গলবার সকালে আটক করা হয়েছে বলে জানান সোনাডাঙ্গা মডেল থানার সেকেন্ড অফিসার রাধে শ্যাম সরকার। তিনি বলেন, ‘ভিকটিমের পরিবারের সঙ্গে মৌখিক আলোচনার পর তাকে হাফিজনগর খোড়াবস্তি এলাকা থেকে আটক করা হয়। এ ব্যাপারে আইনগত বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’ এদিকে খুলনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালত-৩ এর স্পেশাল পিপি এডভোকেট ফরিদ আহমেদ বলেন, চিকিৎসাধীন করোনা আক্রান্ত ওই গৃহবধূকে যৌন হয়রানির দায়ে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিযুক্ত ওয়ার্ডবয়কে কেবল চাকরি থেকে অব্যাহতি দিলেই তার শাস্তি শেষ হবে না। সে যে অপরাধ করেছে এটা বড় ধরনের অপরাধ। নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে তার বিরুদ্ধে মামলা হওয়া উচিত ছিল। তাকে পুলিশে দেয়া উচিত ছিল। মামলা যদি তার পরিবার না করে তাহলে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করবে।