ধর্মঘটের নামে নৈরাজ্য! চালকের মুখে পোড়া ইঞ্জিন ওয়েল,
প্রকাশিতঃ ৫:৩৭ অপরাহ্ণ | অক্টোবর ২৮, ২০১৮ । এই নিউজটি পড়া হয়েছেঃ ৪৯৭ বার
অনলাইন ডেস্কঃ আট দফা দাবিতে পরিবহন শ্রমিকদের ডাকা ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘটের প্রথমদিন রবিবার রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় বেশ কয়েকজন চালকের মুখে পোড়া ইঞ্জিন ওয়েল, কালো রঙ ও আলকাতরা মাখিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা থেকে রক্ষা পাচ্ছে না রোগী বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সও। লাঞ্ছনার শিকার হয়েছেন সাধারণ যাত্রীরাও। তবে ধর্মঘট আহ্বানকারী বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেড়ারেশনের ভাষ্য, তারা আশঙ্কা করছে, আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে এ ঘটনা ঘটানো হতে পারে। এর পেছনে কোনও চক্রান্ত থাকতে পারে বলেও ধারণা তাদের।
সম্প্রতি জাতীয় সংসদে পাস হওয়া ‘সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮’-এর কয়েকটি ধারা সংশোধনসহ আট দফা দাবিতে রবিবার সকাল থেকে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে গণপরিবহন শ্রমিকদের ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘট শুরু হয়েছে। এ ধর্মঘটকে কেন্দ্র করে সকাল থেকে নগরীর বিভিন্ন স্থানে নৈরাজ্যের ঘটনা ঘটেছে। বিশেষ করে নগরীর যাত্রাবাড়ীসহ বিভিন্ন এলাকায় ব্যক্তিগত গাড়ি, অটোরিকশা ও রিকশা থেকে যাত্রীদের নামিয়ে হেনস্থা করা হয়েছে। এ সময় প্রাইভেটকার চালকদের মুখে কালো রঙ, পোড়া মবিল ও আলকাতরা মেখে দিতে দেখা গেছে কিছু শ্রমিককে। ধর্মঘটে ব্যক্তিগত গাড়িও চলতে বাধা দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেড়ারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী জানান, এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের এরই মধ্যে চিহ্নিত করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি এ ঘটনাটি ঘটিয়েছে আমরা তাকে চিহ্নিত করেছি। তাকে প্রাথমিকভাবে ফেড়ারেশন থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়েছে। কমিটি তদন্ত করে দেখবে এর পেছনে কোনও ইন্ধন আছে কিনা।’ তবে প্রাথমিকভাবে ওই ব্যক্তির নাম তিনি বলতে পারেননি।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেড়ারেশনের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ‘কোনও যাত্রী বা চালককে সামাজিকভাবে হেয় করার অধিকার কারো নেই। আমাদের আন্দোলনে তো এমন হওয়ার কথা না। আমাদের আন্দোলনে কোনও অবরোধ হবে না। রাস্তায় ব্যারিকেড হবে না। তৃতীয় পক্ষ সুবিধা নিতে পারে— এমন আশঙ্কায় আমরা এগুলো পরিহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমাদের আন্দোলন হবে সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ। কিন্তু কারা কী জন্য এটা ঘটিয়েছে, সেটা আমরা তদন্ত করছি।’
সাধারণ যাত্রী ও ব্যক্তিগত গাড়ির চালকদের সঙ্গে এমন আচরণের বিষয়ে সরকার সমর্থিত সংগঠন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হানিফ (খোকন) বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ধর্মঘট আহ্বানকারীদের ইন্ধন ও উসকানিতেই এমন ঘটনা ঘটেছে। তারা সাধারণ যাত্রী, ব্যক্তিগত গাড়ির চালক ও অ্যাম্বুলেন্সের পাশাপাশি সিএনজি অটোরিকশা চালকদেরও হেনস্থা করেছে। তারা অনেক সিএনজি অটোরিকশা ভাঙচুর করেছে। ধর্মঘট ডাকার যেমন তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার আছে, ঠিক ধর্মঘট না মানারও আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার আছে। তাই কাউকে সামাজিকভাবে হেনস্থা করতে পারে না।’
তিনি বলেন, ‘এমন ঘটনা শুধু যাত্রাবাড়ীতে নয়, জুরাইন, মির হাজিরভাগ, পোস্তা, শনির আখড়া, চিটাগাং রোড়সহ বিভিন্ন এলাকায় হয়েছে। আমরা এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’