হালুয়াঘাটে ন্যায়পরায়ন একজন হাফেজ ও ইমাম কঠিন ব্যাধিতে আক্রান্ত!! এতিম হতে চলেছে তার ৮টি সন্তান
প্রকাশিতঃ ৫:৫২ অপরাহ্ণ | জুন ১৫, ২০১৮ । এই নিউজটি পড়া হয়েছেঃ ৪৫১ বার
ওমর ফারুক সুমন, হালুয়াঘাটঃ আমি এমন একজন মানুষের কথা লিখছি। যিনি জীবনে কখনো অন্যায় কাজ করেছেন কিনা আমার জানা নেই। তাকে কখনো চায়ের আড্ডা খানায় দেখেনি, দেখেনি কোন গানের আসর বা কোন অসামাজিক কাজে। বা কোন লোকসমাগম কোন মজলিসেও। গানের আসর বা জুয়ার আসর তাতো অনেক দূরের কথা। কখনো মিথ্যে বলতে দেখেনি। দেখেনি কোন অন্যায় কাজ করতে। বা উনার দ্বারা কখনো কেউ কষ্ট পেতে। মানুষের জন্যেই নিবেদিত ছিলেন সারাটা জীবন। নিজের কথা না ভেবে ভেবেছেন সমাজের কথা। সম্পূর্ণ ব্যাতিক্রমধর্মী একজন মানব। আমার ধর্মীয় শিক্ষাগুরু। পবিত্র কোরআন শিক্ষা উনার কাছ থেকেই নিয়েছি। তিনি ধর্মীয় আদর্শে শিক্ষালাভ করে একাধারে ৩০ বৎসর যাবৎ বলতে গেলে বিনা পয়সায় ইমামতি করে যাচ্ছেন হালুয়াঘাট উপজেলার ২নং জুগলী ইউনিয়নের ঘিলাভূই জামে মসজিদে। চেয়ে কখনো টাকা নিতে দেখেনি। ইচ্ছে করে টাকা দিলে তা দিয়েই সংসার চালাতেন তিনি। কখনো খেতে পারতেন আবার কখনো উপোস থাকতেন। হাফেজ মোহাম্মদ আলী উনার নাম। বয়স ৫৮ বৎসর। ইসলামের নিয়ম নীতির বাহিরে চলতে দেখা যায়নি কখনো। ৩ ছেলে ও ৫ মেয়ে রয়েছে। এই আটটি পুত্র সন্তানকেই খাইয়ে না খাওয়াইয়ে ইসলামী শিক্ষায় শিক্ষিত করে তুলেছেন। কখনো না খেয়ে থাকলেও কখনো হাত পাতটে দেখিনি মানুষের কাছে। সেই মানুষটি আজ কঠিন ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসার অভাবে মৃত্যুর পথে এগোচ্ছে। নিজের যা সহায় সম্বল ছিলো সব শেষ করে এখন সে একেবারেই স্বর্বশান্ত হয়ে পড়েছে। এখন সে নিঃস্ব। তিনমাস ধরে ব্রেইন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে ঘরে পড়ে রয়েছে। টাকার অভাবে চিকিৎসা রয়েছে বন্ধ। শুক্রবার বিকেলে খবর পেয়ে অসুস্থ্য মোহাম্মদ আলীর বাড়িতে গেলে দেখা যায় এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের। মুখে কথা কথা নেই। চোখেও কোন চাহনি নেই। বাকরুদ্ধ। ঈদকে সামনে রেখে ৮ পুত্র সন্তানই হয়েছে একত্র। বাবার এই অবস্থা দেখে সকলেই হতাশ। কারও কাছে সাহায্য চাওয়ার প্রবণতাও নেই এদের মাঝে। রাত পোহালেই ঈদ। ঈদের আনন্দ থেকে বঞ্চিত হাফেজ মোহাম্মদ আলীর সন্তানেরা। আমরা স্বহৃদয়বান কোন মানুষেরা কি পারিনা এমন একজন সত্যবাদী ন্যায়পরায়ন মানুষের পাশে দাঁড়াতে? একটু সাহায্যের হাত বাড়াতে। ৮ টি সন্তানের মুখে হাসি ফুটাতে?