এমপি’র কাছে নালিশ করায় বৃদ্ধকে পিটিয়েছে চেয়ারম্যান
প্রকাশিতঃ ২:৫৬ অপরাহ্ণ | সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২১ । এই নিউজটি পড়া হয়েছেঃ ১,৮৭০ বার
স্টাফ রিপোর্টারঃ ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে দুলাল নামে ৭১ বছরের এক বৃদ্ধকে রশি দিয়ে বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করার অভিযোগে ৫ নং গাজিরভিটা ইউপি চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় নির্যাতিত দুলাল মিয়া বাদী হয়ে চেয়ারম্যানকে আসামী করে হালুয়াঘাট থানায় মামলা দায়ের করেন। দুলাল ৪নং সদর হালুয়াঘাট ইউনিয়নের মুজাখালী তেতুলতলা মোড়ের বাসিন্দা। ঘটনাসুত্র ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, দুলাল মিয়ার জায়গা থেকে মাটি নিয়ে রাস্তার কাজ করছিলেন ইউপি চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন। এতে বাঁধা দেন দুলাল। তাতে চেয়ারম্যান কর্ণপাত না করায় স্থানীয় সংসদ সদস্য জুয়েল আরেং ‘র দ্বারস্থ হন। এমপি বিষয়টি সমাধানের আশ্বাস দিলেও তার আগেই ঘটে যায় দূর্ঘটনা। দুলাল মিয়া এমপি’র কাছে নালিশ করেছে এমন খবর শুনে ক্ষিপ্ত হয় চেয়ারম্যান। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে দুলাললে চেয়ারম্যানের নিজ গাড়িতে তুলে নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের সামনে রশি দিয়ে হাত পা বেঁধে ইচ্ছেমতো পিটিয়ে রক্তাক্ত করেন। চেয়ারম্যানের ঘুষিতে দুলালের একটি চোখও মারাত্বক জখম হয়। গুরুতর আহতবস্থায় দুলাল সংসদ সদস্যের কাছে গেলে সাংসদ দুলালকে হালুয়াঘাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। খবর পেয়ে তৎক্ষনাৎ হালুয়াঘাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছুটে যান হালুয়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ শাহিনুজ্জামান খান। ঘটনার সত্যটা ও আলামত দেখে অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাৎক্ষনিৎ মামলা রুজো করেন। মুঝাখালী গ্রামের আনিস (৫৫) বলেন, চেয়ারম্যান কোনো মুরব্বি মানেনা। এর আগে এরকম ঘটনা বহুবার ঘটিয়েছে। মানুষকে মানুষ মনে করেনা তিনি। যা খুশি তাই করেন। যখন যাকে ইচ্ছে পিটান। তিনি এর বিচার চান। স্থানীয়দের অনেকেই বলেন, এ ধরনের ঘটনা ঘটানো চেয়ারম্যানের মোটেও ঠিক হয়নি। খুবই নেক্কারজনক বলে উল্লেখ করেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। এ ঘটনায় বুধবার হালুয়াঘাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন থাকাবস্থায় নির্যাতিত দুলাল (৭১) দৈনিক মানবজমিনকে বলেন, এমপি’র কাছে নালিশ করায় চেয়ারম্যান আমাকে তুলে নিয়ে পরিষদে রশি দিয়ে বেঁধে চোরের মত পিটিয়েছে। এ ঘটনার কঠিন বিচার চাই আমি। এ ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয় এলাকাতেও। এ ঘটনা সম্পর্কে চেয়ারম্যানের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে হালুয়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিনুজ্জামান খান বলেন, একজন ইউপি চেয়ারম্যান হয়ে একটু সহনশীল হওয়া প্রয়োজন। এই যুগে একজন বয়স্ক মানুষকে এইভাবে পিটানো খুবই বে-আইনি হয়েছে। তিনি বলেন আমি মামলা নিয়েছি, তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। চেয়ারম্যানকে আটক করার চেষ্টা চলছে বলে মানবজমিনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এ মন্তব্য করেন ওসি।