স্ত্রীর জমি স্বামীর নামে লিখে না দেওয়ায় ..
প্রকাশিতঃ ৮:৫১ অপরাহ্ণ | ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০১৯ । এই নিউজটি পড়া হয়েছেঃ ৫৮৫ বার
তোফাজ্জেল হোসেন,বাউফল (পটুয়াখালী)সংবাদদাতা: স্ত্রীর নামে থাকা জমি স্বামীকে লিখে না দেওয়ায় নিজের এক তলা পাকা ভবন থেকে তিন বছর আগে বের করে দেওয়া হয়েছে মোসা. রাশেদা বেগম (৫৫) নামে এক নারীকে। এরপর থেকে ওই নারী থাকতেন রান্না ঘরের পাশে ঝুঁপড়ি ঘর উঠিয়ে। গতকাল শুক্রবার সকালে সেই ঘরটিও ভেঙে ফেলা হয়েছে।এমন ঘটনা ঘটেছে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার দাসপাড়া ইউনিয়নের পূর্ব খাজুরবাড়িয়া গ্রামে। তাঁর স্বামীর নাম সাহেব আলী সরদার (৬০)। তাঁদের রয়েছে দুই মেয়ে মোসা. পলি (৩০) ও মোসা. নাজমা (২২)। দুই মেয়ের বিয়ে হলেও বড় মেয়ে পলি থাকেন বাবার সঙ্গে, ছোট মেয়ে নাজমা থাকেন মায়ের সঙ্গে।
রাশেদা বেগম অভিযোগ করেছেন, প্রায় ৩০ বছর আগে স্বামী সাহেব আলী ও তাঁর (রাশেদা) টাকায় যৌথভাবে সাড়ে ৪৯ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। ওই জমির ওপর একতলা একটি পাকা ভবন উঠিয়ে সবাই একসঙ্গে থাকতেন। পরবর্তীতে তাঁরা দুই মেয়ের নামেও সোয়া ত্রিশ শতাংশ জমি ক্রয় করে দেন। একপর্যায়ে স্বামী ও বড় মেয়ে পলি তাঁদের নামের জমি বিক্রি করে দেন। এরপর থেকেই পারিবারিক কলহ সৃষ্টি হয়। তাঁর (রাশেদা) নামের জমি স্বামীর নামে লিখে দেওয়ার জন্য শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন শুরু হয়। কিন্তু কোনোভাবেই তিনি লিখে দিতে রাজি হননি। এ কারণে তিন বছর আগে ২০১৬ সালের শুরুতে তাঁকে মারধর করে তাঁর নিজের ঘর থেকে বের করে দেওয়া হয়। নিরুপায় হয়ে রান্না ঘরের পাশে ঝুঁপড়ি ঘর উঠিয়ে ছোট মেয়েকে নিয়ে থাকা শুরু করেন। গতকাল শুক্রবার সকালে ফের জমি লিখে দেওয়ার জন্য বলেন এবং না হলে মেরে ফেলা হবে বলে হুমকি দেন স্বামী সাহেব আলী। অপারগতা প্রকাশ করায় তাঁর বসবাসের ঝুঁপড়ি ঘরটি ভেঙে ফেলে। তিনি আরও বলেন,দীর্ঘ তিন বছরে তাঁকে কোনো ভরন-পোষন দেওয়া হয়নি। কোনো প্রকার সম্পর্কও নেই। ছোট মেয়ের জামাইয়ের টাকায় সংসার চলে তাঁর।
রাশেদা বেগমের মেয়ে মোসা. নাজমা বলেন,‘মায়ের জায়গায় মায়ের পাকা ভবন। অথচ সেই ঘরে মা থাকতে পারছেন না। আপনারা মাকে থাকার ব্যবস্থা করে দেন।’
স্বামী সাহেব আলী ও বড় মেয়ে পলি অভিন্নভাবে বলেন,‘জমি লিখে না দেওয়ার জন্য ঘর ভাঙা হয়নি। তাঁর (রাশেদা) কাছে একটা জরুরী কাগজ আছে। সেই কাগজ না দেওয়ায় তাঁর থাকার ঘর ভেঙে ফেলা হয়েছে।’
বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন,‘বিষয়টি জানা নেই। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’