আজ শুক্রবার , ২৬শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৩ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |

শিরোনাম

এম্বুলেন্সে করে মাদক পাচারকালে ২৪০ বোতল ভারতীয় মদসহ একজন আটক এমপি মাহমুদুল হক সায়েমকে সি.আই.পি শামিমের সংবর্ধনা হালুয়াঘাটে ঈদে বাড়ি ফেরার পথে লাশ হল স্বামীসহ অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী হালুয়াঘাটের স্থলবন্দর দিয়ে ২৭টি পণ্যের আমদানী রপ্তানীর পরিকল্পনা-এমপি সায়েম হালুয়াঘাটে ২৭ হাজার দুস্থ অসহায় পাচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার ১৩ বছর পর পদত্যাগ করলেন ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হালুয়াঘাটে ফেইসবুক গ্রুপে কোরআন তেলাওয়াত ও ইসলামী সংগীত প্রতিযোগিতা। পুরস্কার বিতরণ ‘কৃষ্ণনগরের কৃষ্ণকেশীর ‘বেহিসেবি রঙ.. হিমাদ্রিশেখর সরকার হালুয়াঘাট থেকে ফুলপুর পর্যন্ত চার লেনের রাস্তা নির্মাণসহ সড়ানো হচ্ছে অস্থায়ী বাস কাউন্টার জনগণের অধিকার আদায় না হওয়া পর্যন্ত বিএনপি রাজপথে থাকবে-প্রিন্স ডামি নির্বাচন করে গণতন্ত্রকে আইসিইউতে পাঠিয়েছে আওয়ামী লীগ-প্রিন্স বাজারে পণ্যের অগ্নিমূল্যের তাপ তাদের গায়ে লাগেনা-প্রিন্স নালিতাবাড়ীতে প্রেসক্লাবের নির্বাচন, সভাপতি সোহেল সম্পাদক মনির গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে-বিএনপি নেতা প্রিন্স হালুয়াঘাটে বিএনপি নেতা প্রিন্স’র লিফলেট বিতরণ

নালিতাবাড়ীতে বোরো চাল সংগ্রহে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি

প্রকাশিতঃ ৭:৩৮ অপরাহ্ণ | আগস্ট ০৮, ২০১৮ । এই নিউজটি পড়া হয়েছেঃ ৫৭১ বার

মঞ্জুরুল আহসান, নালিতাবাড়ী(শেরপুর)প্রতিনিধি ঃ
শেরপৃুরের নালিতাবাড়ীতে সরকারীভাবে বোরো চাল সংগ্রহে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। চালকল মালিক সমিতির নেতাদের যোগসাজশে পরিত্যক্ত ও বন্ধ চালকলের সঙ্গে চুক্তি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিস সুত্রে জানাগেছে, প্রতি কেজি চাল ৩৮টাকা দরে ৪২৫১.৯৯০ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যে উপজেলার ১টি অটো,১০টি মিনি অটো মিলসহ ৭৪টি হাস্কিং মিল মালিকের সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছে। গত মে মাসের ২ তারিখ থেকে চাল সংগ্রহ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও ১৬ মে চাল সংগ্রহ শুরু হয়েছে, ২ আগষ্ট পর্যন্ত খাদ্যগুদামে চাল সংগ্রহ হয়েছে তিন হাজার ৬৫০ মেট্রিক টন আগামী ৩১ আগষ্ট পর্যন্ত এই সংগ্রহ অভিযান চলবে।
সরেজমিনে উপজেলার ২৭টি চালকলে দেখা গেছে, অধিকাংশ হাস্কিং মিল দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। কোনো কোনো চালকলের অস্তিত্বই নেই। এইসব চালকলের উৎপাদন ক্ষমতা ও অবকাঠামো নেই। ব্রয়লার ভাঙ্গা,চাতালে ঘাস উঠেছে ও ভেঙ্গে গেছে। বেশিরভাগ মিলে চিমনি দেখতে পাওয়া যায়নি।
নলজোড়া ভাই-ভাই চালকল দীর্ঘদিন ধরে উৎপাদন বন্ধ থাকায় ধান সিদ্ধ না করার চাতালে ঘাস জন্মে গেছে। বয়লার ও হাউজে ঝোপঝাড়ে ভরে গেছে। ধান শুকানোর চাতালে পানি জমে আবর্জনার স্তপে পরিণত হয়েছে। রানীগাও এলাকায় অবস্থিত জান্নাত চাল কলটির চাতালে কলার বাগান করা হয়েছে,ব্রয়লার, হাউজ ও চিমনির কোন অস্তিত্ব নেই।
মেসার্স আয়নাপুরী চাল কল,মেসার্স মা চাল কল,মেসার্স রুবেল চাল কল,মেসার্স শাপলা চাল কল,মেসার্স রিজু চাল কল,মেসার্স ভাই বোন চাল কল,মেসার্স জান্নাত চাল কল,মেসার্স আতিক এন্ড আশিক চাল কল,মেসার্স জুয়েল চাল কল,মেসার্স নূর রাইস মিল,মেসার্স শাহপরান চাল কল,মেসার্স ফাতেমা চাল কল,মেসার্স মজিদ চাল কল,মেসার্স মাসুদ রানা চাল কল,মেসার্স ভাই ভাই চাল কল,মেসার্স মুমু মিনি অটো চাল কল,মেসার্স শাহী চাল কল, মেসার্স শাহীন চাল কল, মেসার্স চৌধুরী মিনি অটো, মেসার্স আমিন চালকল, মেসার্স জায়েদা চাল কল, মেসার্স হাবিব চাল কল, মেসার্স আশা চাল কল, মেসার্স রিয়াদ চাল কল, মেসস নাজমা রাইস মিল, মেসার্স হাবিব চাল কল,মেসার্স লুবনা রাইস এন্ড ফ্লাওয়ার মিল। বর্তমানে এ সব চালকলে চাল প্রক্রিয়াজাত করা হয় না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চালকল মালিক বলেন,গুদামে চাল দিতে টাকা দিতে হয়। তা নাহলে চাল ফেরত পাঠানো হয়। টাকা না দিলে প্রকৃত মিলারদের হয়রানিতে পড়তে হচ্ছে। এ ব্যাপারে একজন চাল কল মালিক লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন।
শাহী রাইস মিল এক বছর ধরে বন্ধ রয়েছে বলে এর মালিক আব্দুল লতিফ সমিতির নেতাদের ধরে খাদ্য বিভাগ থেকে বরাদ্দ পেয়ে অন্য মিল থেকে কিনে খাদ্য গুদামে ৪৪.২৮০ টন চাল দিয়েছেন।
শাহ পরান চাল কলের মালিক আবদুর রাজ্জাক বলেন,পারিবারিক সমস্যার কারণে এ বছর আমার মিল বন্ধ আছে। আগামী বছর থাইকা মিল চালু করার ইচ্ছা আছে। এ বছর আমি অন্য মিল থাইকা চাল কিন্না আইন্না গুদামে দিছি।
নন্নীর রুবেল চাল কলের মালিক-আবদুর রফিক বলেন,আমি এ বছর উৎপাদনে যাইনি। বাজারের একজন মিল মালিক আমারে ৩০ হাজার টেকা দিছে। সব কিছু হেই দেখতাছে। আমি আর কিছুই জানিনা।
আশিক এন্ড আতিক মিলের মালিক জহুরুল হক বলেন,আমার নিজের মিল থেকে কিছু চাল উৎপাদন করেছি আর বাকী সব চাল অন্য মিল থেকে কিনে দিয়েছি।
চাল সংগ্রহ ও নিয়ন্ত্রণ আদেশ, ২০০৮ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় অবকাঠামো-সম্পন্ন উৎপাদনে সক্ষম (সচল) বৈধ চালকল ও সনদধারী (লাইসেন্স) আগ্রহী চালকলের মালিকদের কাছ থেকে চুক্তি করে চাল ক্রয় করার কথা, যেসব কারখানায় (মিল) ব্রয়লার ও চিমনি নেই, সেসব (হাস্কিং মিল) মিলের সঙ্গে চাল সংগ্রহের চুক্তি করা যাবে না। চুক্তিবদ্ধ চালকলের মালিকদের স্থানীয় বাজার থেকে ধান কিনে মিল প্রাঙ্গণে প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া শেষে চাল প্রস্তত করতে হবে। আলাদা চাতাল,বিদ্যুত সংযোগ, ধান সিদ্ধ করার হাউস, ব্রয়লার ও গুদামঘর আছে কিনা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক তা যাচাই-বাছাই করে মিলারদের সঙ্গে চুক্তি করতে হবে।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো.আবদুল কাদের বলেন,মিল যাচাই বাচাই সঠিক হয়েছে। এর মধ্যে ৭-৮টি মিল হচ্ছে সৃজনালী। এরা শুধু বোর আর আমন মৌসুমে মিল চালু করে। সরকারের চাল সংগ্রহের স্বার্থে ওদের নেয়া হয়েছে।
চাল সংগ্রহ কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) মো.আরিফুর রহমান বলেন,আমি এই প্রথম অভিযোগ পেলাম। তদন্ত পূর্বক এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেয়া হবে।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো.ইকবাল বাহার বলেন,আপনাদের মাধ্যমে এই আমি প্রথম অভিযোগ পেলাম। এ ব্যাপারে খোঁজ খবর নিয়ে পরবর্তীতে ব্যাবস্থা নেয়া হবে। প্রয়োজন বোধে অন্য উপজেলার খাদ্য নিয়ন্ত্রককে দিয়ে তদন্ত করা হবে।

Shares