আজ মঙ্গলবার , ২৩শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১০ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |

শিরোনাম

এম্বুলেন্সে করে মাদক পাচারকালে ২৪০ বোতল ভারতীয় মদসহ একজন আটক এমপি মাহমুদুল হক সায়েমকে সি.আই.পি শামিমের সংবর্ধনা হালুয়াঘাটে ঈদে বাড়ি ফেরার পথে লাশ হল স্বামীসহ অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী হালুয়াঘাটের স্থলবন্দর দিয়ে ২৭টি পণ্যের আমদানী রপ্তানীর পরিকল্পনা-এমপি সায়েম হালুয়াঘাটে ২৭ হাজার দুস্থ অসহায় পাচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার ১৩ বছর পর পদত্যাগ করলেন ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হালুয়াঘাটে ফেইসবুক গ্রুপে কোরআন তেলাওয়াত ও ইসলামী সংগীত প্রতিযোগিতা। পুরস্কার বিতরণ ‘কৃষ্ণনগরের কৃষ্ণকেশীর ‘বেহিসেবি রঙ.. হিমাদ্রিশেখর সরকার হালুয়াঘাট থেকে ফুলপুর পর্যন্ত চার লেনের রাস্তা নির্মাণসহ সড়ানো হচ্ছে অস্থায়ী বাস কাউন্টার জনগণের অধিকার আদায় না হওয়া পর্যন্ত বিএনপি রাজপথে থাকবে-প্রিন্স ডামি নির্বাচন করে গণতন্ত্রকে আইসিইউতে পাঠিয়েছে আওয়ামী লীগ-প্রিন্স বাজারে পণ্যের অগ্নিমূল্যের তাপ তাদের গায়ে লাগেনা-প্রিন্স নালিতাবাড়ীতে প্রেসক্লাবের নির্বাচন, সভাপতি সোহেল সম্পাদক মনির গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে-বিএনপি নেতা প্রিন্স হালুয়াঘাটে বিএনপি নেতা প্রিন্স’র লিফলেট বিতরণ

আন্টি আমার গোপনাঙ্গে আয়রনের ছ্যাঁকা দিতো- সেনা কর্মকর্তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ হালুয়াঘাটের গৃহকর্মী লিমার!

প্রকাশিতঃ ৩:২৪ অপরাহ্ণ | জুলাই ১১, ২০১৯ । এই নিউজটি পড়া হয়েছেঃ ১,১৩৫ বার

ওমর ফারুক সুমন, হালুয়াঘাট (ময়মনসিংহ) থেকেঃ
রাজধানীর ক্যান্টনমেন্টের কচুক্ষেতে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটের গৃহকর্মী লিমাকে (১৫) চার মাস আটকে রেখে তার ওপর নির্মম নির্যাতন করার অভিযোগ পাওয়া গেছে নিহত সাবেক সেনা কর্মকর্তা তানভিরের স্ত্রী মিমের বিরুদ্ধে। বুধবার হালুয়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন দর্শারপাড় গ্রামের হাবিবুর রহমানের মেয়ে নির্যাতনের শিকার লিমা জানায়, আজ থেকে প্রায় চার মাস পূর্বে তাকে প্রতিবেশী আছিয়া কাজের কথা বলে বাবা-মাকে না জানিয়ে ঢাকায় নিয়ে যায়। পরে ক্যান্টনমেন্ট কচুক্ষেত এলাকার চৈতালী ১/ডি ব্লকের তানভিরের বাসায় দিয়ে আসে। কিছুদিন কাজ করার পর থেকে বাসার গৃহকত্রী মীম ওরফে মাহা নানা অজুহাতে তার ওপর নির্যাতন শুরু করে।
গৃহকর্মী লিমা আরও জানায়, আয়রন গরম করে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ছেঁকা দিতো ঐ মহিলা। খুন্তি গরম কইরা শরীরের বিভিন্ন জায়গাসহ লজ্জাস্থানে ছেঁকা দিতো বলে জানান কিশোরি লিমা। এ সময় পায়ের নখ, দাঁত উপরে ফেলেন বলেও জানান নির্যাতিত মেয়েটি। নির্যাতিত লিমা জানায়, কিশোরীর প্রতি টানা দু’মাস শরীরের বিভিন্ন অংশে গরম ইস্ত্রির ছ্যাঁকা দিয়ে নির্যাতন করতো! নির্যাতন থেকে বাদ যায়নি গোপনাঙ্গ ও স্পর্শকাতর স্থান। প্রায়ই লোহার রড দিয়ে তাকে পেটানো হতো। তালা দিয়ে মেরে ভেঙে দেয়া হয়েছে সামনের পাটির একটি দাঁতও।বাড়িতে আসার পর লিমার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে গত বুধবার হালুয়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে তার পরিবার।জানা যায়, গত দুই মাস ধরে তার ওপর এমন নির্যাতন চলেছে রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট কচুক্ষেত এলাকার চৈতালী ১/ডি ব্লকের সাবেক এক সেনা কর্মকর্তার বাসায়।
এদিকে নির্যাতনের শিকার হয়ে লিমা বর্তমানে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চতুর্থ তলায় ২০ নং ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছে। লিমা হালুয়াঘাট এলাকার কৈচাপুর ইউনিয়নের দর্শারপাড় গ্রামের হাবিবুর রহমানের মেয়ে সে।মেয়ের ওপর এমন নির্যাতনের অভিযোগ করে বাবা হাবিবুর রহমান বলেন,‘চার মাস আগে মাসিক পাঁচ হাজার টাকা বেতনে কাজের কথা বলে লিমাকে ঢাকায় এক আর্মি অফিসারের বাসায় নিয়ে যায় পাশের গ্রামের আছিয়া (জুয়েলের মা)।প্রথম এক দেড়মাস ভালো ভাবেই চলছিল। গত রমজান শুরুর আগে লিমা বাড়ি চলে আসতে চায়। কিন্তু মীম ম্যাডাম কিছুতেই তাকে দিতে রাজি হয়নি ‘তিনি আরও বলেন, ‘সেই থেকে শুরু হয় মেয়ের ওপর অত্যাচার। কারণে-অকারণে নির্যাতন করা হতো মেয়েকে। কাউকে কিছু না জানিয়ে মঙ্গলবার (৯ জুলাই) হালুয়াঘাটের একটি বাসে করে মেয়েকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয় তারা।
প্রথমে মেয়েকে দেখে আমরা চিনতেই পারিনি। মাথার চুল কাঁটা। সারা শরীরে পোড়া দাগ, আর ঘাঁ। পরে বুধবার মেয়েকে হালুয়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করি।’মেয়ের ওপর যে অমানুষিক অত্যাচার করা হয়েছে তার বিচার চেয়ে তিনি আরও বলেন, ‘আমি এই ঘটনায় থানায় মামলা করব।’নির্যাতনের বিষয়ে লিমা বলেন, ‘আন্টির বাসায় যাওয়ার পর দুই মাস ভালই ছিলাম। গত রমজান মাস থেকে শুরু হয় মারধর।
বাড়ি আসার কথা বললে আরও বেশি করে মারত। অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে আন্টিকে বলি আমার বেতন দিয়া দেন আমি বাড়িত যামুগা। এমন কথায় সে ইস্ত্রি গরম করে আমার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ছ্যাঁকা দেয়। তালা দিয়ে মেরে আমার দাঁত ফালাইয়া দিছে, খুন্তি গরম কইরা আমার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ছ্যাঁকা দিছে। এমনকি লজ্জার স্থানেও ছ্যাঁকা দেয় আন্টি। আমার মাথা ফাটাইয়া চুল কাইট্টা দেয়। আন্টির মাইর শেষ অইলে তার ছেলে ওয়াদা ও আরেক কাজের মেয়ে পিংকীকে আমাকে মারার জন্য বলত। তারা আমাকে অনেক মারছে। ব্যাথা সহ্য করতে না পেরে আমি বারবার কইতাম আন্টি আমারে কয়ডা বড়ি (ট্যাবলেট) আইন্না দেন আমি আর সহ্য করতে পারতাছি না। আমারে কোনো দিনও একটা বড়িও আইন্না দিছে না। রমজানের ঈদের দিনও আমাকে পেট ভইরা ভাত খাইতে দেয় নাই।’ঢাকা থেকে কীভাবে বাড়ি এসেছে জানতে চাইলে লিমা জানায়,‘মঙ্গলবার (৯ জুলাই) আমার শরীরটা খুব খারাপ ছিল। অনেক কৌশলে বাসা থেকে পালানোর চেষ্টা করি। ব্যাপারটি বুঝতে পেরে তারাই আমাকে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটের একটি বাসে তুলে দেয়।
সেখান থেকে আমি বাড়ি চলে আসি।’স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কপ্লেক্সে কর্তব্যরত মেডিকেল অফিসার ডা. মুশফিকা বলেন, মেয়েটির গায়ের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তার উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন। আমরা তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করানোর পরামর্শ দিয়েছি।এদিকে নির্যাতনের শিকার হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে থাকা লিমার বিষয়ে জানতে পেয়ে হাসপাতালে খবর নিতে গিয়ে হালুয়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বিপ্লব কুমার বিশ্বাস বলেন, নির্যাতিতা কিশোরীর পরিবার যদি অভিযোগ দেয় পুলিশের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ ব্যাপারে গৃহকর্ত্রী মীমের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তার ভাই পরিচয়ে কাজল নামে একজন বলেন, মাসিক ৫ হাজার টাকা বেতনে ১ বছরের জন্য চুক্তি করে আছিয়ার (জুয়েলের মা) মাধ্যমে এই বাসায় আসে লিমা। আমার বোনের বাসায় ছিল কয়েক মাস। লিমা নিজের গায়ে নিজেই আঘাত করেছে বলে জানান।

Shares