কোন দিন পাইনি সরকারি সুযোগ সুবিধা
প্রকাশিতঃ ১০:৪৮ অপরাহ্ণ | জানুয়ারি ১২, ২০২৩ । এই নিউজটি পড়া হয়েছেঃ ১২৭ বার

নালিতাবাড়ী সংবাদদাতাঃ মা শারিরিক প্রতিবন্ধী। বাবা আরেক বিয়ে করে গাজীপুরের একটি সিরামিক কারখানায় কাজ করে সেখানেই বসবাস করেন। দুই বোনের মধ্যে একজন মারা গেছে। বাকী রইলো দশম শ্রেণিতে পড়–য়া কলি ম্রং আর তার মা স্বাধীনা ম্রং। পাহাড়ের ঢালে সামান্য ভিটেমাটি ছাড়া কিছুই নেই তাদের। বাবা জিতেন্দ্র সাংমার পাঠানো সামান্য টাকায় কোনমতে দিন যায়, রাত কাটে মা-মেয়ের। দেশে প্রতিবন্ধী ভাতার ব্যবস্থা থাকলেও তা জুটেনি স্বাধীনার। কখনও ভিজিডি, ভিজিএফ বা সরকারের অন্য কোন সুবিধাও পায়নি পরিবারটি।
শুধু কি তাই, প্রতিবছর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় হতে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর শিক্ষার্থীদের জন্য আসা বিশেষ অর্থিক সুবিধাও পায়নি দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী কলি।
এমন ঘটনা শুধু কলিদেরই নয়। শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার নয়াবিল ইউনিয়নের ভারতঘেঁষা পাহাড়ি গ্রাম কাটাবাড়ির ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর অনেক শিক্ষার্থীই এ সুবিধা বঞ্চিত। কপালে জুটেনি বাইসাইকেলও। অথচ আশপাশের কোন কোন পরিবার থেকে একাধিক শিক্ষার্থী পেয়েছে সরকারের এ সুবিধা।
সম্প্রতি স্থানীয় সংবাদকর্মী দৌলত হোসেন অন্য একটি কাজে গেলে বিষয়টি তার নজরে আসে। তিনি জানান প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম মনিরকে। এরপর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিমেল রিছিল এর সাথে কথা বলে কাটাবাড়ির সুবিধা বঞ্চিত শিক্ষার্থীদের আবেদন পাঠানো হলে প্রথমবারের মতো তাদের ভাগ্যে জুটে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ আর্থিক সুবিধা। মাধ্যমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিকে পড়াশোনা করা ৯ শিক্ষার্থীর হাতে মেলে সরকারের বিশেষ সহায়তা। ফলে শুধু পড়াশোনার খরচই নয়, খ্রীষ্ট ধর্মাবলম্বী এসব শিক্ষার্থীর পরিবারের বছরের সবচেয়ে উৎসবের দিন বড়দিনের আনন্দও ছড়িয়ে পড়ে। গেল বছরের বড়দিনের আগ মুহূর্তে এমন সহায়তায় রীতিমতো ওইসব অসহায় পরিবারের কেনাকাটাসহ আনুসাঙ্গিক ব্যয়ে আনন্দের বন্যা বয়ে যায়। কেউ বা আনন্দাশ্রু ঝেড়ে ফেলে।
এইচএইসসি শিক্ষার্থী লক্ষী ম্রং ও আলো ম্রং জানায়, এ পর্যন্ত কোনদিন তারা প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বিশেষ সুবিধা পায়নি। আবেদন করেও ব্যর্থ হয়েছে। এবারই প্রথম তারা আর্থিক সুবিধা পেলো।
এইচএইসসি শিক্ষার্থী মীমা ম্রং ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী তন্ময় মানকিন জানায়, তারাও কোনদিন প্রধানমন্ত্রীর এ বিশেষ আর্থিক সুবিধা পায়নি। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের সংগঠন ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন এর নেতৃত্বে পরিবর্তন হলেও তাদের ভাগ্যে পরিবর্তন জুটেনি। সংবাদকর্মীদের সহযোগিতায় ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার আন্তরিকতায় এবারই প্রথম তারা সরকারের সুবিধা প্রাপ্ত হয়েছে। এসময় তারা বিদ্যালয়ে যাতায়াতের জন্য বাইসাইকেলও প্রত্যাশা করে।