ঈদের আগেই এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের শতভাগ উৎসব ভাতা দেয়ার দাবি
প্রকাশিতঃ ৭:১৮ অপরাহ্ণ | মার্চ ১৪, ২০২২ । এই নিউজটি পড়া হয়েছেঃ ২৮৮ বার

স্টাফ রিপোর্টারঃ আসন্ন ঈদের আগেই এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের শতভাগ উৎসব ভাতা দেয়ার দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতি। একই সাথে ঈদের আগেই এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের মূল বেতনের অর্ধেক মহার্ঘ ভাতা দেয়ার দাবি জানিয়েছে সমিতির নেতারা। তারা বলছেন, জীবন যাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের পরিবার পরিজন নিয়ে জীবন ধারণ কঠিন হয়ে পড়েছে। সোমবার চট্টগ্রামের নাসিরাবাদ এলাকার ওমরগণি এম ই এস কলেজ আয়োজিত সমিতির চট্টগ্রাম মহানগর শাখার প্রতিনিধি সমাবেশে এসব দাবি জানান শিক্ষক নেতারা। অনুষ্ঠানের সমিতির কেন্দ্রীয় নেতারা সশরীরে ও ভার্চুয়াল মাধ্যমে অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়াল মাধ্যমে যুক্ত ছিলেন বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতির কেন্দ্রীয় সভাপতি ও বাংলাদেশ শিক্ষক ও কর্মচারী সমিতি ফেডারেশনের প্রধান সমন্বয়ক অধ্যক্ষ আসদুল হক। ওমরগণি এমইএস কলেজের অধ্যক্ষ আ ন ম সরওয়ার আলমের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে অংশ নেন সমিতির কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি অধ্যাপক আবু তাহের চৌধুরী। প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যক্ষ আসদুল হক বলেন, বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে বিপর্যস্ত শিক্ষা পুনরুদ্ধারে শিক্ষকরাই নিয়ামক ভুমিকা পালন করতে বদ্ধপরিকর। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে জীবন যাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় মূলবেতন, ১ হাজার টাকা ঘরভাড়া এবং ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা দিয়ে শিক্ষকদের জন্য পরিবার পরিজন নিয়ে জীবন ধারণ কঠিন হয়ে পড়েছে। মূল বেতনের ২৫ শতাংশ খণ্ডিত বোনাস দিয়ে শিক্ষকরা কিভাবে রমজান ও ঈদ সামলাবে সেটা দেখার কেউ নেই। তিনি আসন্ন ঈদের আগেই সরকারি শিক্ষকদের মত এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের শতভাগ উৎসব ভাতা দেয়ার দাবি জানান। একইসঙ্গে জীবন যাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির কারণে মূল বেতনের ৫০ শতাংশ মহার্ঘভাতা দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, শিক্ষকদের বঞ্চনার মধ্যে রেখে জাতীয় উন্নয়ন ও অগ্রগতি হতে পারেনা। সরকারি বেসরকারি ব্যাপক বৈষম্যের কারণে শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রতিনিয়ত যে সংকট তৈরি হচ্ছে তার একমাত্র সমাধান হচ্ছে সুনির্দিষ্ট জাতীয় নীতিমালা ও পরিকল্পনার ভিত্তিতে শিক্ষাকে রাষ্ট্রের দায়িত্বে নিয়ে সরকারিকরণ করা। তিনি বেসরকারি শিক্ষকদের জন্য পুর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা, সরকারি শিক্ষকদের অনুরূপ বাড়িভাড়া, প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক ঘোষণার আলোকে পুর্ণাঙ্গ পেনশন দেয়া, নন এমপিও শিক্ষকদের এমপিওভুক্ত করার দাবিসহ শিক্ষাব্যবস্থা সরকারিকরণের দাবি জানান। বাকশিসের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি অধ্যাপক আবু তাহের চৌধুরী ২০২১ খ্রিষ্টাব্দে জারি করা নীতিমালা সংশোধন করে বেসরকারি কলেজে প্রভাষক হিসেবে ৮ বছর পর শর্তহীনভাবে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি দেয়া, উচ্চমাধ্যমিক কলেজে জ্যেষ্ঠ প্রভাষকের জায়গায় পুনরায় সহকারী অধ্যাপক বহাল করা, ২০১০ এর নীতিমালায় থাকা বেসরকারি কলেজের সহযোগী অধ্যাপক পর পুনরায় বহাল করা, অভিজ্ঞ প্রভাষকদের অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ পদে আবেদন করার সুযোগ দেয়া, অনার্স-মাস্টার্স পাঠদানরত ও বিধি সম্মতভাবে নিয়োগ পাওয়া ননএমপিও শিক্ষকদের এমপিওভুক্ত করার দাবি জানান। তিনি বলেন, সরকারের ভিতর ঘাপটি মেরে থাকা এক শ্রেণির কর্মকর্তা সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করা এবং শিক্ষকদের আন্দোলনে ঠেলে দেয়ার চেষ্টা করে। বেসরকারি শিক্ষকদের নানা অধিকার ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের এমপিও নীতিমালায় কেড়ে নেয়া হয়েছে। তিনি জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ এর আলোকে অবিলম্বে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের সম পর্যায়ের প্রতিষ্ঠান ও সমস্তরে বদলির ব্যবস্থা করার দাবি জানান। সমিতির চট্টগ্রাম জেলা সভাপতি অধ্যক্ষ দবির উদ্দিন খান বলন, বেসরকারি শিক্ষকদের পেশাগত যতটুকু মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে তার সব কিছুই আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জিত হয়েছে। সেই উত্তাল আন্দোলনের মূল চালিকা শক্তি ছিল বাকশিস। বাকশিসকে শক্তিশালী করে শিক্ষা সরকারিকরণ আন্দোলন বেগবান করার জন্য তিনি শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানান।
সমাবেশের বিশেষ অতিথি বাকশিস কেন্দ্রীয় ও জেলা যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ সমীর কান্তি দাশ শিক্ষা ক্ষেত্রে সরকারি বেসরকারি বিদ্যমান বৈষম্য নিরসন করার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও এর অধিনস্ত দপ্তর-সংস্থাগুলোতে কর্মকর্তা পদে ৩৫ শতাংশ হারে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের প্রেষণে নিয়োগ দেয়ার দাবি জানান।