ময়মনসিংহে খাদ্যগুদামে ধান-চাল ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহতের আশঙ্কা
প্রকাশিতঃ ১:১৩ অপরাহ্ণ | জুন ২৯, ২০২১ । এই নিউজটি পড়া হয়েছেঃ ২৫৫ বার
ওমর ফারুক সুমন:চলতি বোরো মৌসুমে ৩০ জুনের মধ্যে বরাদ্দের বিপরীতে খাদ্যগুদামগুলোতে ৭৫ ভাগ ধান-চাল ক্রয় করার কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। কিন্তু ময়মনসিংহে খাদ্য গুদাম গুলোতে চাল সংগ্রহ মাঝামাঝি পর্যায়ে হলেও ধান ক্রয় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে রয়েছে একেবারেই নিন্ম পর্যায়ে। সচেতন নাগরীকরা বলছে, ধান-চাল ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হলে সিন্ডিকেটের কবলে চলে যেতে পারে বাজার ব্যবস্থা। ভেস্তে যেতে পারে এই উদ্যোগ। ময়মনসিংহ জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মোঃ জহিরুল ইসলাম বলেন, জেলায় খাদ্যগুদাম গুলোতে ৩৭ হাজার ২৭ মেট্রিক টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে গত প্রায় দুই মাসে কেনা হয়েছে ৭ হাজার ৩ শত মেট্রিক টন। আর ৬৫ হাজার ৬ শত মেট্রিকটন চাল ক্রয়ের বিপরীতে কেনা হয়েছে ৩৬ হাজার মেট্রিক টন। এদিকে একটি উপজেলার খাদ্য সংগ্রহের কথা যদি বলি, হালুয়াঘাট উপজেলায় ৩১০৮ মেট্রিকটন ধান ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ধান ক্রয় হয়েছে মাত্র ৯৩০ মেট্রিক টন। স্থানীয় বাজারে ধান–চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় ক্রয়াভিযান অত্যন্ত ধীরগতিতে চলছে বলে তিনি জানান। অপরদিকে মোর্শেদ আলম (৪৫) ও হুমায়ূন কবির মানিক (৪৮) নামে দুই কৃষক জানান, কৃষকদের বিড়ম্বনা, আদ্রতাসহ ব্যাংকিং সেবার ত্রুটির কারনেও কৃষকরা খাদ্যগুদামে ধান দিতে চাননা। তাদের মতে আরও সহজলভ্য করতে হবে গুদামে ধান-চাল দিতে। এ অবস্থায় নির্ধারিত ওই সময়ের মধ্যে সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে হালুয়াঘাটে সরকারি খাদ্যগুদামে গত ২৮ এপ্রিলে ধান এবং ৭ মে চাল সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়। কিন্তু প্রায় ২ মাস পেরিয়ে গেলেও চুক্তিবদ্ধ ১০ চালকলমালিকের মধ্যে ৪ জন গত বুধবার পর্যন্ত গুদামেই আসেননি। হালুয়াঘাট সরকারি খাদ্যগুদাম কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সরকারিভাবে গুদামে ধান-চাল কেনার সময়সীমা আগামী ৩১ আগস্ট বেঁধে দিয়ে চলতি ৩০ জুনের মধ্যে বরাদ্দের ৭৫ ভাগ কেনার কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ‘সরকারি খাদ্যগুদামে ধান বিক্রি করতে গেলে অনেক ঝামেলা হয়। একটু ধুলা–পাতান থাকলে নেয় না। আবার যতই শুকান না কেন, ওরা (গুদামের লোকজন) বলে মিটার পাস হয় নাই। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন চালকলমালিক বলেন, ‘সরকারের সঙ্গে ৪০ টাকা কেজি দরে চাল দেওয়ার চুক্তি করেছি। কিন্তু এবার বাজার বেশি হওয়ায় আপাতত গুদামে চাল দিচ্ছি না। বাজার কমার অপেক্ষায় আছি।’ হালুয়াঘাট উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মুনসুরুল আলম বলেন, ‘প্রতিদিন বাজারে ধান–চালের দাম বাড়ছে। এ কারণে অনেক কৃষক গুদামে ধান না দিয়ে বাজারেই বিক্রি করছেন। চুক্তিবদ্ধ কিছু মিল–চাতালমালিকও গুদামে এখন পর্যন্ত চাল দেননি। আমরা লক্ষ্যমাত্রা পূরণের চেষ্টা করে যাব। সময় আছে, দেখা যাক কী হয়।’ এ অবস্থায় লক্ষ্যমাত্রা পূরণে আমরা কিছুটা বেকায়দায় পড়েছি।’হালুয়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রেজাউল করিম বলেন, স্থানীয় বাজারে ধান-চালের দাম বেড়ে যাওয়ায় কৃষকরা আসলে সরকারী খাদ্যগুদামে ধান-চাল দিতে আগ্রহী হচ্ছেনা। এখনো সময় আছে। লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হয়ে যাবে ইনশালআল্লাহ। ###