বিধির কি লীলা! একই পরিবারে আট প্রতিবন্ধীর জীবন যুদ্ধের গল্প!!
প্রকাশিতঃ ২:৩২ অপরাহ্ণ | মে ৩১, ২০১৮ । এই নিউজটি পড়া হয়েছেঃ ৫৩৯ বার
স্টাফ রিপোর্টারঃ কবির সুরে বলতে হয়-“দেখো মানুষ কেনো গরীব হয়! কর্ম দোষে দোষী হইয়া খুদাকে দোষী বানায়! বৃক্ষের মাঝে থাকে পোকা সেও খেতে চায়! বিধির লীলা বুঝা বড় দায়! জীবন কত বিচিত্র! এ সংসার সমুদ্র কতই না অদ্ভুত! কেউ থাকে রাজ প্রসাদে, কেউ থাকে ভাঙ্গা মাটির ঘরে, আবার কেউ বা থাকে গাছ তলায়। জীবন নামক রেলগাড়িতার চাকার নিচে পিষ্ট হয়ে জীবনটা দুঁমড়ে মুঁচড়ে চলতে থাকে। কেউ তাদের খোঁজ রাখেনা, খোঁজ নেয়ার চেষ্টাও করেনা। এবার বলি এমনই এক জীবন যুদ্ধের গল্প যা হয়তো বিরল। হয়তো এটাও বিধির লীলা! একই পরিবারে আটটি জীবন অচল। ৮ জনই শারিরীক প্রতিবন্ধী। বেটে প্রকৃতির। উচ্চতা ৩ বা সাড়ে তিন ফুটের বেশী হবেনা। কেউ তাদের বিয়েটাও পর্যন্ত করতে চায়না। লোভের মোহে কেউ বিয়ে করলেও স্বামী যখন দেখে তার ঘড়ে প্রতিবন্ধী পুত্র জন্মলাভ করেছে তখন স্ত্রী পুত্র ফেলে স্বামী হয়ে যায় উধাও। এদের জীবনটাও সেই জীবন নামক রেলগাড়িতার চাকার নিচে পিষ্ট হচ্ছে প্রতিনিয়ত। হালুয়াঘাট উপজেলার ছোটদাসপাড়া গ্রামের বাইট্টা (খাঁটো) জলিলের একটি পরিবার। সকলেই শারিরীক প্রতিবন্ধী। যা গত একশত বছরের ইতিহাস। মৃত প্রতিবন্ধী আব্দুল জলিলের কন্যা ও সাজাহানের স্ত্রী আনোয়ারা খাতুন (৪৮), সাজাহানের দুই মেয়ে সাজেদা বেগম (৩০) ও মাজেদা (২৫), সাজেদার কন্যা আফরিন (২), একই রক্তের সুত্র ধরে মৃত ফজুল হকের স্ত্রী হালিমা বেগম (৪০), আনারুলের স্ত্রী আছিয়া খাতুন (৩৫) ও পুত্র আশিক খান (১৬), ইয়াকুব আলীর স্ত্রী মনিরা খাতুন (৩২)। শুক্রবার সরেজমিনে ঐ প্রতিবন্ধী পরিবারের বাড়িতে কথা বলতে চাইলে প্রতিবন্ধী আনোয়ারা খাতুন বলেন, আমার পিতাও শারিরীক প্রতিবন্ধী ছিলো। তার ঘর থেকে আমি হই। আমার পরে হালিমা, এরপরে আছিয়া। এইভাবেই চলতে থাকে। তিনি আফসোস করে বলেন, মাইয়ার ঘর থেইকা খাডা (খাঁটো) পুলা হয়ছে বিধায় বাবা তারে ফালাইয়া রাইখা চইলা গেছে। আমরাতো আর ফালাইতে পারিনা! আল্লাই দিছে! এগুলারে কি মাইরা ফেলানো যাইবো! আফসোস করলে কি অইবো? মানুষ আমাদের পিছন দিয়া ইহার (ধিক্কার) দেই। রাস্তা দিয়া ঠিকমতো চলবারও পারিনা। কাজকামও করবার পারিনা। তিন চার মাস পর পর কিছু টাকা ভাতা পায় তা দ্বারা সংসার চলেনা। এদের বিষয়ে হালুয়াঘাট সমাজ সেবা অফিসার মাহফুজ ইবনে আয়্যুব বলেন, এই পরিবারে যেহেতু তিনজন ভাতা পায় সুতরাং আমদের আর ভাতা দেয়ার সুযোগ নেই। তবে অন্যান্য কিছু সুযোগ সুবিধা আছে সেগুলো বিবেচনা করা যেতে পারে। তিনি বলেন, আমি বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখবো।