বাউফলে আড়াই মাসে ৩ খুন,আইন শৃংখলার চরম অবনতি
প্রকাশিতঃ ১০:০০ অপরাহ্ণ | আগস্ট ০৮, ২০২০ । এই নিউজটি পড়া হয়েছেঃ ২৪৫ বার
তোফাজ্জেল হোসেন,বাউফল(পটুয়াখালী)প্রতিনিধি: পটুয়াখালীর বাউফলে ঈদুল ফিতরের আগের দিন ২৪ শে মে থেকে ঈদুল আযহার পরের দিন ২ রা আগষ্ট পর্যন্ত এই আড়াই মাসের মধ্যে ৩ জনের খুন হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া চুরি,ছিনতাই, ডাকাতি, ও ধর্ষণ বেড়েই চলেছে । ফলে আইন শৃংখলার ব্যাপক অবনতি ঘটেছে। আর এ আইন শৃঙ্গলার অবনতির জন্য বাউফল থানার ওসিকে দায়ি করেছেন ভুক্তভোগি পরিবারগুলো । নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, গত ২ আগস্ট প্রতিপক্ষের হাতে খুন হয়েছেন কেশবপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি রুমন তালুকদার ও তার চাচাতো ভাই ইশাদ তালুকদার। এ ঘটনার দুই দিন আগে (৩১ জুলাই) কেশবপুর বাজারে দুই পক্ষের হামলায় নিহত রুমন তালুকদারে মেঝ ভাই হাফেজ উদ্দিন পিন্টু ও মফিজ উদ্দিন মিন্টুসহ ১০-১২ আহত হয়। এই ঘটনায় নিহত যুবলীগ নেতা রুমনের ভাই ও কেশবপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সালেহ উদ্দিন পিকু বাদি হয়ে ওই দিন সন্ধ্যায় বাউফল থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে ওসি (তদন্ত) আল মামুন মামলা গ্রহণ করেননি। বাদির অভিযোগ করেন, ওসি ওই সময় মামলা নিলে হয়তো জোড়া খুন হতো না। যারা খুন করেছেন তারা এজাহারের আসামী ছিলেন।
এ ছাড়া গত ২৪ মে ঈদের আগের দিন বাউফল থানার সামনে তোরণ নির্মাণ কে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এসময় তাপস নামের এক যুবলীগ কর্মী ছুরিকাঘাতের শিকার হয়ে চিকিৎসাধিন অবস্থায় মারা যান। বাউফল থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান, ওসি (তদন্ত) আল মামুনসহএক ডজন এসআই এবং এএসআই ও ২০-২৫ জন পুলিশের চোখের সামনে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলে তারা নিরব ছিল। ওই সময় পুলিশ ব্যবস্থা নিলে খুনের ঘটনা এড়ানো যেত। পুলিশের এ রহস্যজনক ভুমিকা নিয়ে খোদ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অসন্তোষ প্রকাশ করেন এবং তারা ওসির অপসরণ দাবি করেন। কিন্তু এখনো তিনি অদৃশ্য শক্তির কারণে তিনি বহাল তবিয়তে আছেন।
বাউফলের তেুঁতুলিয়া নদীতে ডাকাতির ঘটনা বেড়ে গেলেও ডাকাতদের পাকরাও করতে পুলিশের কোন ভুমিকা চোখে পরছেনা । অথচ বাউফলের কালাই বন্দরে একটি নৌ-পুলিশ ফাঁড়ি রয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বাড়ি ঘরে চুরি ডাকাতি বেড়ে গেছে। কেশবপুর, নাজিরপুর ও কাছিপাড়া গ্রামে গত দুই সপ্তাহে অর্ধশত চুরি সংর্ঘটিত হয়েছে। ওই সব গ্রামের মানুষ এখন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন। এসব ঘটনা পুলিশকে অবহিত করা হলেও কোন ধরণের সহায়তা পাওয়া যাচ্ছেনা। গত ৫ আগস্ট কাছিপাড়া বাজারে এক রাতে ১০ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ৩টি ফ্লাটে চুরি সংর্ঘটিত হয়েছে। কোরবানির আগের দিন পৌর শহরের জনৈক আবু বক্কর নামের এক ব্যক্তির গরু চুরি হয়েছে। তিনি থানায় অভিযোগ দিতে গেলে ইকবাল নামের এক এএসআই তার কাছে টাকা দাবি করেন। এ কারণে তিনি মামলা না করে চলে আসেন। কালাইয়া ইউপির দবির হোসেন নামের এক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, প্রতিপক্ষরা তাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করে। এ ঘটনায় তিনি থানায় মামলা করতে গেলে এসআই আশিক তার কাছে তিন হাজার টাকা দাবি করেন। তিনি ওই সময় দেড় হাজার টাকা দেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত তার মামলাটি হয়নি। অভিযোগ রয়েছে, উপজেলার কোন মানুষ থানায় আইনী সহায়তা নিতে আসলে থানার বার্তা অপরেটর আবুল হোসেন তা প্রতিপক্ষকে গোপেনে জানিয়ে দেন। বিনিময় টাকা হাতিয়ে নেন । এরকম অভিযোগ রয়েছে এএসআই রফিকের বিরুদ্ধেও। অপরদিকে বাউফল থানার ওসির বিপক্ষে বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ অভিযোগ হলো তাকে বিপদকালীন সময় মোবাইল করলে তিনি সহসা রিসিভ করেননা।
এ ব্যাপারে বাউফল সার্কেলের সিনিয়র পুলিশ সুপার ফারুক আহম্মেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘মানুষের যান মালের নিরাপত্তা বিধানের দায়িত্ব পুলিশের । এসব বিষয়ে কোন কোন পুলিশের গাফেলতি বরদাস্ত করা হবেনা ।