করোনার দুঃসময়ে গরিব-দুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়াল কেন্দুয়ার কল্যাণী যুব ফাউন্ডেশন
প্রকাশিতঃ ১:০১ অপরাহ্ণ | মার্চ ৩১, ২০২০ । এই নিউজটি পড়া হয়েছেঃ ৪৪৮ বার
মজিবুর রহমান, কেন্দুয়া (নেত্রকোণা) প্রতিনিধি ঃ প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। এমন সংকট মুহুর্তে নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার ক্ষতিগ্রস্থ ও নিন্ম আয়ের মানুষকে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে এসেছে কল্যাণী যুব ফাউন্ডেশন। গত শনিবার থেকে উপজেলার গৃহবন্দি ও কর্মহীন ভিক্ষুক,দিনমজুর, হতদরিদ্র ও তৃতীয় লিঙ্গ মানুষজনের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করছেন। সোববার দুপুরে কেন্দুয়া পৌর শহরের সাউদপাড়া এলাকায় কল্যাণী ফাউন্ডেশনের কার্যালয় প্রাঙ্গণে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে দুস্থ ও তৃতীয় লিঙ্গ মানুষজনের মাঝে খাদ্যসামগ্রী তুলে দেন সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান কল্যাণী হাসান। করোনায় ক্ষতিগ্রস্থ কর্মহীন মানুষের মূখে খাবার তুলে দেয়ার প্রচেষ্টা থেকেই খাদ্যসামগ্রী হিসেবে চাল,ডাল ও আলুসহ অন্যান্য সামগ্রী বিতরণ করছে কল্যাণী ফাউন্ডেশন। তাছাড়া তাদেরকে স্বাস্থ্য সুরক্ষা উপকরণ হিসেবে মাক্স ও সাবান দেয়া হয়। বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের লক্ষণ পাওয়ার পর পরই কল্যাণী তার ফেইসবুক ওয়ালে স্বোচ্ছার হতে দেখা যায়। তার ফাউন্ডেশনে কর্মীদের দিয়ে তৈরী করাচ্ছেন মাক্স। তার এই মাক্স কর্মজজ্ঞে রয়েছে কয়েকজন টেইলার্সকর্মী। তিনি হেন্ড মাইক নিয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরে করোনা ভাইরাসের প্রতিরোধে সচেতনতামূলক প্রচার ও তার ফাউন্ডেশনের তৈরী মাক্সসহ সাবান কয়েক হাজার মানুষের মাঝে বিতরণ করে আসছেন। দুঃসময়ে সুবিধা ভোগীরা জানায়,করোনাভাইরাসের জন্য আমরা ঘর থেকে বের হতে পারিনা। আমাদের আয়-রোজগার বন্ধ। ঘরে খাওন নাই। সবাই ঘরে থাকতে খাওনের কথা কেউ কয় না। কল্যাণী আপা আমাদের কিছু চাল,ডাল ও আলু দিয়ে সাহায্য করেছে।কেন্দুয়া পৌর শহরের সাউদপাড়া মহল্লার মেয়ে কল্যাণী। তিনি একজন স্কুল শিক্ষক,সংগঠক,ব্যবসায়ী ও সমাজসেবী। লেখাপড়া শেষ করে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা পেশায় কর্মজীবন শুরু করেন তিনি। শিক্ষককতার পাশাপশি কেন্দুয়া বাজারে রয়েছে একটি স্বর্ণের ব্যবসা। তিনি কেন্দুয়া উপজেলা আওয়ামী যুব মহিলা লীগের সভাপতি দ্বায়িত্বে থেকে কেন্দুয়া উপজেলার নারী সমাজকে জাগ্রত করছেন। বেসরকারী এনজিও স্বাবলম্বী উন্নয়ন সমিতি দ্বারা পরিচালিত নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির কেন্দুয়া উপজেলার সাধারণ সম্পাদকের দ্বায়িত্বে থেকে নির্যাতিত নারী সমাজের আশ্রয়স্থ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন তিনি। দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন বাল্য বিয়ে প্রতিরোধে। সামাজিক কর্মকান্ডে স্বীকৃতি হিসেবে জয়ীতা পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। সম্প্রতি তিনি ‘কল্যানী যুব ফাউন্ডেশন’ নামে সংগঠন গড়ে তুলেন। ইতিমধ্যে সংগঠনটি উপজেলা জুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এব্যাপারে কল্যাণী যুব ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান কল্যাণী হাসান বলেন, মানবসেবার ব্রত হয়ে ‘কল্যাণী যুব ফাউন্ডেশন’ গঠন করেছি। সমাজের অসহায় ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষগুলো অনেক কিছু থেকেই বঞ্চিত হয়। বিপদে-আপদে তাদের পাশে দাড়াঁনোই সংগঠনের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। করোনাভাইরাসের কারণে বহু দরিদ্র শ্রেণির মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়ছে আমারা প্রথমে তাদেরকে মাক্স ও সাবান দিয়েছি এখন দেখছি তাদের ঘরে খাবার নেই তাই খাবারের ব্যবস্থা করার চেষ্টা করছি। এপর্যন্ত কয়েক হাজার মানুষকে মাক্স-সাবান ও ৫ শতাধিক মানুষের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেছেন বলে জানান কল্যাণী। তার স্বামী কেন্দুয়া পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি কামরুল হাসান ভূইঁয়া এই কাজে উৎসাহ জোগান জানিয়ে তিনি আরো বলেন, যতদিন দেশে করোনার প্রভাব থাকবে ততদিন তার প্রচাররণা ও সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। তিনিসহ তার কর্মীদের জন্য সকলের কাছে দোয়া কামনা করেন।