অস্থির ময়মনসিংহ আনন্দমোহন কলেজ ছাত্রলীগ রাজনীতি!
প্রকাশিতঃ ৯:৫২ অপরাহ্ণ | আগস্ট ০১, ২০১৯ । এই নিউজটি পড়া হয়েছেঃ ৫৮২ বার
ষ্টাফ করেসপন্ডেন্ট, ময়মনসিংহ ১ আগস্ট
রাজনৈতিক সোহার্দ, ঐক্যতা, সম্মান যেন দিনে দিনে তলানিতে পৌছে যাচ্ছে। আদর্শ আর জনপ্রিয়তার বুলি আওরে ব্যাক্তিকরণেই ব্যস্ত দায়িত্বশীলরা। যেদিকে তাকানো যায় সংগঠনের নয় নিজের লোক চাই। এ প্রতিযোগিতায় অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে কর্মীদের মাঝে। ময়মনসিংহ আওয়ামী লীগের ভাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগ সবচাইতে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ এ গেরাকলে।
সম্প্রতি ময়মনসিংহ ছাত্রলীগকে ঘিরে অস্থিরতার কালো মেঘ যেন কাটছেই না। জেলা ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে চলছে নানা দুদল্যমানতা। অবমূল্যায়নের শিকার হচ্ছে বিগত দিনে নেতৃত্বদানকারী নেতারা। গত বুধবার ( ৩১ জুলাই) এর একটি নতুন নজির সৃষ্টি হয়েছে।
ময়মনসিংহ আনন্দমোহন কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাবেক জেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক এবং বর্তমান জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রকিবুল ইসলাম রকিবকে ঘিরে কলেজে ইতিমধ্যে ছাত্রলীগের একাংশের অপরাজনীতি শুরু হয়েছে। কলেজ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হলেও জেলা ছাত্রলীগ সভাপতিকে ঢুকতে দেয়া হয়নি অনুষ্ঠানস্থলে। এ নিয়ে অনুষ্ঠানে আগত প্রধান অতিথিও অনেকটা ক্ষোভ প্রকাশ করে বক্তব্য রেখেছেন
আনন্দমোহন কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫ দিনব্যাপী “সাংস্কৃতিক সপ্তাহ” পালনের শেষ দিন ছিলো গত ৩১ জুলাই । এই সমাপনী ও পুরস্কার বিতরনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জনাব কে এম খালিদ বাবু এমপি। কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর নারায়ণ চন্দ্র ভৌমিকের সভাপতিত্বে এতে আরও উপস্থিত ছিলেন সিটি মেয়র ইকরামুল হক টিটু, জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যাপক ইউসুফ খান পাঠান প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে কে এম খালিদ বাবু শুরুতেই অনুষ্ঠানস্থলে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি খুবই কম থাকায় তিনি বলেন, আমরা যখন এই কলেজের ছাত্র ছিলাম তখন ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ছিল ৫ হাজার , আর বর্তমানে ছাত্র -ছাত্রী ৩৭ হাজার অথচ আজকে এত বড় একটা অনুষ্ঠান, সেখানে উপস্থিতি খুবই নগন্য।
এসময় কলেজ প্রশাসনের ব্যর্থতা উল্লেখ করে তিনি বলেন, কোথায় আপনাদের নিয়ন্ত্রন আবার সফলতা দাবি করেন, কোয়ালিটি নিয়ে লড়াই করা যায় না, কোয়ালিটি তৈরি করতে হয়।
প্রধান অতিথি অনুষ্ঠানের ব্যনারে ও কলেজে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কোন ছবি না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যেখানে আমার জাতির পিতা নেই, সেখানে আমার এই মঞ্চে আসা উচিত হয়নি।
অন্যদিকে অনুষ্ঠানস্থলে আমন্ত্রিত অতিথি আনন্দমোহন কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি ও ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি মোঃ রকিবুল ইসলাম রকিবের নেতৃত্বে একটি মিছিল সভাস্থলে প্রবেশ করতে চাইলে কলেজের প্রধান ফটকে তাঁলা লাগিয়ে ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ইকরামুল হক টিটুর নাম ধরে শ্লোগান দিয়ে মিছিলটিকে মূল ফটকে আটকে দেয় কলেজ ছাত্রলীগ। এ সময় তারা আনন্দমোহন কলেজের মাটি, টিটু ভাইয়ের ঘাটি বলে স্লোগান দিতে থাকে। পরে জেলা ছাত্রলীগের মিছিলটি কলেজ গেইটের সামনে অবস্থান নেয়। এ সময় কলেজ ক্যাম্পাস-সহ আশপাশে উত্তেজনা ছড়িয়ে পরে।
এ পরিস্থিতি অবলোকন করে প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বাবু তার বক্তব্যে বলেন “আমাদের অনুষ্ঠানে আজকে গেইটে ছাত্ররা দাড়িয়ে আছে। একদল ঢুকবে আর এক দল ঢুকতে দিবে না, কেন ঢুকতে দেয় না, কিসের ভয়ে, কার জন্য এই লড়াই, এই লড়াই তৈরী করেছি আমি আর আপনি। ছাত্র-ছাত্রীদের কোন দোষ নেই”।
এবিষয়ে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি রকিবুল ইসলাম রকিব বলেন, দীর্ঘদিন রাজনৈতিক মাঠে কাজ করে, প্রানের আনন্দমোহন কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতির পরিবেশে সৃষ্টি করে ছাত্রলীগকে সুসংগঠিত করে পুরস্কার হিসেবে পেলাম অবমূল্যায়ন ও প্রতিহিংসার কষাঘাত। এ অবমূল্যায়ন আমার নয়, এটি আওয়ামী লীগকে অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে ময়মনসিংহ আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ও নগর পিতার উপস্থিতিতে কারা এটি করেছে ময়মনসিংহবাসী জানতে পেরেছেন।
এসময় তিনি বলেন, ময়মনসিংহের রাজনীতিকদের অজানা নয়, আনন্দমোহন কলেজের আগের দিনগুলি ও বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে। এখানে নিজস্ব রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তার করতে কারা ছাত্রলীগকে অস্থিতিশীল করছে এটিও সবার জানা। আমি একজন নগন্য কর্মী হিসাবে আওয়ামী লীগের অভিভাবকদের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। এ অবস্থা চলতে থাকলে একদিন আদর্শিক কর্মীহিনতায় পরবে প্রাণের সংগঠন আওয়ামী লীগ।