ওরা আমারে আইরন-খুন্তি গরম কইরা আমার মাথা, শরির আর লজ্জাস্থানে ছ্যাকা দিতো!
প্রকাশিতঃ ৭:০০ অপরাহ্ণ | জুলাই ১০, ২০১৯ । এই নিউজটি পড়া হয়েছেঃ ১,৫০৬ বার
ওমর ফারুক সুমনঃ আন্টি আমারে টেকাটা দিয়া দেন, আমি বাড়ি যাবগা! আমি আপনার বাসায় থাকবোনা। এই কথা বলার কারনে উনি, উনার ছেলে আর মেয়ে মিলে আমারে আইরনের ছ্যাকা লাগাইছে।সব জায়গাতেই ছ্যাকা দিয়েছে! আমার মাথার মাঝে খুন্তি দিয়া বাইরাইছে!খুন্তি গরম কইরা ছ্যাকা দিছে! হাতের মাঝে লোহার পাত দিয়া বাইরাইছে! পাকার মাঝে হাত রেখে ওরা আমারে বাইরাইছে! পায়ের মধ্যে বাইরাইছে! প্লাস দিয়া আমার হাতের নখ উঠাইয়া ফেলছে!দাঁত তুইলা ফেলছে। বুধবার ঠিক এইভাবেই অভিযোগ গুলো করেন হালুয়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দর্শারপাড় গ্রামের হাবিবুর রহমানের ১৫ বৎসরের কিশোরি মোছাঃ লিমা আক্তার। লিমা বলেন, স্থানীয় আছিয়া খাতুন (৪৫) নামে এক মহিলার মাধ্যমে গৃহকর্মী হিসেবে গত চার মাস পূর্বে ঢাকার মিরপুর ক্যান্টনমেন্ট কচুক্ষেত এলাকার চৈতালি ১/ডি নামে এক বাসায় যোগ দেন। যোগদানের পর থেকেই নানা অজুহাতে তার উপর নির্যাতন চালাতেন ঐ বাসার গৃহকত্রী মীম ওরফে মাহি (৪৫), ছেলে ওয়াদা ও কাজের আরেক মেয়ে পিংকি মিলে ওরা তিনজন। নির্যাতিত কিশোরি বলেন, আমি টেকা চাইলেই আমাকে মারে। গত ঈদের দিন রাতে আমারে মাইরা চুল ছিলছে! পরে আমার মাথা ফাটাইছে! আমি বলছি, আমার মাথা থেকে অনেক রক্ত বের হইতেছে, আমারে হাসপাতালে নিয়া যান, নিয়া যায়নাই। তারপর তালা দিয়া ভাইরাইয়া আমার একটা দাঁত ভেঙ্গে ফেলছে, আরেকটা অর্ধেকটা ভেঙ্গে গেছে। আমি আসার দিন আমার মাথায় বাড়ি দেয়। আমি বলছি, আমারে এইভাবে মারতেছেন কেনো? তারা বলে তুই বাড়ি যাবিনা! সেই ব্যবস্থায় করছি। এইগুলো কইয়া আইরন গরম করে, পরে আমার পিঠে, হাতে, শরিরে, লজ্জাস্থানে ছ্যাকা দেয়।লিমা অভিযোগ করে আরও বলেন, গত রোযার মাসটা পুরাটাই আমারে ওরা অত্যাচার করছে। রোযার মাঝে আমি রোযাও রাখছি, পিটনাও খাইছি। এমনকি ওরা আমারে ঠিকমতো খাইতেও দেয়নায়। আমি বলছি ভাত খাবো, ওরা খাইতে দেয়নায়! ঠিকমতো ইফতারও করতে দেয়নায়। এ ঘটনায় অভিযুক্ত মহিলা মীম ওরফে মাহাকে মুঠোফোনে কল করলে মাহির খালাতো ভাই কাজল ফোন রিসিভ করে উলটো লিমার বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ করেন। লিমাকে নির্যাতন করেছেন এমনটা অস্বীকার করে বলেন, লিমা নিজেই নিজের শরিরে আইরন, খন্তি গরম করে ছ্যাকা দিয়েছেন। নিজের শরির ক্ষতবিক্ষত করেছেন লিমা নিজেই।এ বিষয়ে মিম ওরফে মাহি কোনো কথা বলবেনা বলে কাজল জানান। এ বিষয়ে হালুয়াঘাট থানার ওসি বিপ্লব কুমার বিশ্বাস বলেন, আমি খবরপাওয়া মাত্রই হাসপাতালে গিয়ে নির্যাতিত লিমাকে দেখেছি।কিশোরির সারা শরিরে আঘাত ও নির্যাতনের চিহ্ন রয়েছে। ঘটনাটি খুবই বেদনাদায়ক।লিমার কর্তব্যরত চিকিৎসক ডক্টর মুশফিকা বলেন, লিমার সারা শরিরেই নির্যাতনের চিহ্ন রয়েছে। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্যে ময়মনসিংহ্ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। উল্লেখ্য অভিযুক্ত গৃহকত্রী পিলখানা ট্রাজেডিটে নিহত এক সেনা অফিসারের স্ত্রী বলে লিমা জানান। ###