আজ বুধবার , ১৭ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৪ঠা বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |

শিরোনাম

এমপি মাহমুদুল হক সায়েমকে সি.আই.পি শামিমের সংবর্ধনা হালুয়াঘাটে ঈদে বাড়ি ফেরার পথে লাশ হল স্বামীসহ অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী হালুয়াঘাটের স্থলবন্দর দিয়ে ২৭টি পণ্যের আমদানী রপ্তানীর পরিকল্পনা-এমপি সায়েম হালুয়াঘাটে ২৭ হাজার দুস্থ অসহায় পাচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার ১৩ বছর পর পদত্যাগ করলেন ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হালুয়াঘাটে ফেইসবুক গ্রুপে কোরআন তেলাওয়াত ও ইসলামী সংগীত প্রতিযোগিতা। পুরস্কার বিতরণ ‘কৃষ্ণনগরের কৃষ্ণকেশীর ‘বেহিসেবি রঙ.. হিমাদ্রিশেখর সরকার হালুয়াঘাট থেকে ফুলপুর পর্যন্ত চার লেনের রাস্তা নির্মাণসহ সড়ানো হচ্ছে অস্থায়ী বাস কাউন্টার জনগণের অধিকার আদায় না হওয়া পর্যন্ত বিএনপি রাজপথে থাকবে-প্রিন্স ডামি নির্বাচন করে গণতন্ত্রকে আইসিইউতে পাঠিয়েছে আওয়ামী লীগ-প্রিন্স বাজারে পণ্যের অগ্নিমূল্যের তাপ তাদের গায়ে লাগেনা-প্রিন্স নালিতাবাড়ীতে প্রেসক্লাবের নির্বাচন, সভাপতি সোহেল সম্পাদক মনির গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে-বিএনপি নেতা প্রিন্স হালুয়াঘাটে বিএনপি নেতা প্রিন্স’র লিফলেট বিতরণ ৯৮ দিন কারাভোগের পর নিজ এলাকায় বিএনপি নেতা প্রিন্সকে সংবর্ধনা

নির্বাচন কমিশনারের (ইসির) ইচ্ছা, ১৫০ আসনেই ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট!

প্রকাশিতঃ ৭:৪২ অপরাহ্ণ | নভেম্বর ০৮, ২০১৮ । এই নিউজটি পড়া হয়েছেঃ ৪৭৪ বার

অনলাইন ডেস্কঃ খান মোহাম্মদ নুরুল হুদা, প্রধান নির্বাচন কমিশনারের গুরু দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭। আরো চারজন কমিশনারও একই দিন শপথ গ্রহণের মাধ্যমে নতুন কর্মস্থলে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। শুরু থেকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) বেশ ভালো ভালো শব্দ চয়নে নিরপেক্ষ, অবাধ এবং সর্বজনের তথা দেশবাসীর কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দেয়ার আশাবাদ অদ্যাবধি প্রকাশ করে চলেছেন। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন বিষয়ে তার অতিরিক্ত জজবা এবং অতি কথনের কারণে জটিল পরিস্থিতির উদ্ভব যে হয়নি, তা বলা যাবে না।

সর্বশেষ, গত ২১ অক্টোবর ঢাকার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে নির্বাচনী কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সিইসি নির্বাচন কমিশন বা ইসির সিদ্ধান্ত এ মর্মে জানান দেন যে, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচারে কোনো জীবন্ত প্রাণী ব্যবহার করা যাবে না। প্রচারে জীবন্ত প্রাণীর ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞার বাইরে পোস্টারের সাথে ‘কাপড়’ বাদ দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ নির্বাচনে কেউ কাপড়ের তৈরি পোস্টার ব্যবহার করতে পারবেন না। অতিশয় গুরুত্বপূর্ণ, তবে আচানক সিদ্ধান্ত বটে।
ওই অনুষ্ঠানে সিইসি বলেন, বিভিন্ন জেলায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) প্রদর্শনের পর ইতিবাচক মূল্যায়ন পাওয়া গেছে। আগের ব্যবস্থা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। ব্যালট বাক্স রাত থেকে পাহারা দিতে হয়। ইভিএম হলে এর প্রয়োজন হয় না। অবশ্য ইভিএম মেশিনের নিরাপত্তা কিভাবে নিশ্চিত করা হবে সে বিষয়ে সিইসি কোনো বক্তব্য দেননি।

এখানে প্রণিধানযোগ্য, সাধারণ নির্বাচনে সারা দেশে অন্যূন চুয়াল্লিশ হাজার ভোটকেন্দ্র এবং দুই লাখ বিশ হাজার বুথ/কক্ষ। এর মধ্যে দুই শতাংশ কেন্দ্র বা বুথ/কক্ষ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এবং অনধিক ০.১ শতাংশ ভোটারকেও ইভিএম বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া এখন পর্যন্ত হয়ে ওঠেনি। তবে গত ২৪ অক্টোবর দেশের কমপক্ষে আটটি অঞ্চলে ইসির কমিশনারদের উপস্থিতি ও সঞ্চালনায় ইভিএমে ভোট প্রদান হাতে কলমে শেখানোর জোর উদ্যোগ নেয়ার কথা দেশবাসী টিভি এবং পত্রপত্রিকার সুবাদে জানতে পেরেছে। ইসির কমিশনারেরা ছাড়াও (কমিশনার মাহবুব তালুকদার বাদে যিনি এখন দেশের বাইরে) কমিশনের অত্যন্ত উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা বেশ জোশের সাথে ওইসব মেলায় উপস্থিত ছিলেন সক্রিয়ভাবে।

১৫ অক্টোবর ঢাকার এক প্রতিষ্ঠিত পত্রিকার প্রথম পৃষ্ঠায় ভারতের চেয়ে ১১ গুণ বেশি দামে ‘ইভিএম মেশিন কিনছে বাংলাদেশ’ শীর্ষক খবরটি শীর্ষ খবর হিসেবে প্রকাশিত হয়েছে। ইভিএম তৈরির জন্য ইতঃপূর্বে কারিগরি পরামর্শ কমিটি গঠন করেছিল ইসি। কিন্তু কমিটির সুপারিশ পুরোপুরি আমলে নেয়া হয়নি। এতদবিষয়ে প্রথিতযশা শিক্ষাবিদ ও প্রকৌশলী শিক্ষাবিদ প্রফেসর জামিলুর রেজা চৌধুরীর মন্তব্য বড় কালো অক্ষরে ওই প্রতিষ্ঠিত পত্রিকার প্রথম পৃষ্ঠায় এক জায়গায় নিম্নে বর্ণিতভাবে ছাপা হয়েছে :‘কারিগরি কমিটিকে জিজ্ঞাসা না করে ইসি সামনের দিকে এগিয়ে গেছে, সাব-কমিটি বৈঠক করে কারিগরি কমিটির সুপারিশ বাদ দিয়েছে। আমার নাম ব্যবহার করা ইসির ঠিক হচ্ছে না।’
উল্লেখ্য, ভোটারদের আস্থা ও গ্রহণযোগ্যতার জন্য কমিটি ইভিএমে ভোটার ভ্যারিয়েবল পেপার অডিট ট্রেইল বা ভিভিপিএটি (যন্ত্রে ভোট দেয়ার পর তা একটি কাগজে ছাপা হয়ে বের হবে) সুবিধা রাখার পরামর্শ দিলেও তা রাখা হয়নি। এতে ভোট পুনর্গণনার বিষয় এলে ইসিকে সমস্যার মুখে পড়তে হতে পারে।

আমাদের নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ভারতের সাথে আমাদের কমিশনের তুলনামূলক যে গড় ক্রয় মূল্য উদ্ধৃত করা হয়েছে তা হলো নিম্নরূপ : বাংলাদেশে একটি ইভিএমের দাম কমবেশি দুই লাখ ৩৪ হাজার টাকা। ভারতে ব্যবহৃত ইভিএমের দাম ২১ হাজার ২৫০ টাকা। মোট ব্যয় হবে তিন হাজার ৮২৫ কোটি টাকা (বাংলাদেশী)।
সেপ্টেম্বর মাসের শুরুতে ইভিএম বিষয়ে ইসি কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নুরুল হুদা বলেছেন, ‘যদি সরকার আইন প্রণয়ন করে, যদি সেটা ব্যবহার করার মতো পরিবেশ পরিস্থিতি আমাদের থাকে, তখন আমরা র‌্যানডমভিত্তিতে ইভিএম ব্যবহার করার চেষ্টা করব। এখন প্রস্তুতিমূলক অবস্থানে আমরা রয়েছি।’ তিনি দাবি করেন, ইভিএম ব্যবহারে নির্বাচন আয়োজনে আর্থিক সাশ্রয় হবে।
একজনের ভোট আরেকজন দিতে পারবে না। তিনি জানান, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ইভিএম সুচারুভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। চার হাজার ৪৭১টি ইউপি, ৩৩২ পৌরসভা, ৪৯১ উপজেলায় পর্যায়ক্রমে ইভিএম ব্যবহার করা হবে। সংবিধান অনুযায়ী, আগামী ৩০ অক্টোবর থেকে ২৮ জানুয়ারির মধ্যে একাদশ সংসদ নির্বাচন আয়োজনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে ইসির।

৪ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকায় ‘ইভিএম নিয়ে উৎকণ্ঠা স্বাভাবিক : সিইসি’ শিরোনামে প্রকাশিত খবরটির এক অংশে সিইসির বক্তব্য যেভাবে উদ্ধৃত করা হয়, তা হলো, সিইসি বলেছেন, ‘সরকার যদি মনে করে, সংসদ যদি মনে করে তাহলেই আইন সংশোধন হবে এবং জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করা যাবে। কোনো ত্রুটি থাকলে তা ব্যবহার করা হবে না। এখন প্রস্তুতিমূলক অবস্থানে আমরা রয়েছি, এটাকে মাথায় রাখতে হবে। প্রশিক্ষণ নিতে হবে।’ তিনি বলেন, ইভিএম বিষয়ে প্রশিক্ষণ আর প্রচার ভালো হলেই এর ইতিবাচক প্রভাব গ্রামগঞ্জে, ভোটার, রাজনৈতিক মহল ও প্রার্থীর কাছে পৌঁছে যাবে।’
সিইসি আরো বলেন, ‘৩০০ সংসদীয় আসনের মধ্যে দৈবচয়ন পদ্ধতিতে কিছু আসন বেছে নিয়ে সেখানে পরীক্ষামূলকভাবে ইভিএম ব্যবহার করতে চাই আমরা, যাতে স্বচ্ছতা নিয়ে কোনো প্রশ্ন না ওঠে, ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দের বিষয় যেন সেখানে না আসে।’ সিইসি বলেন, ‘আমরা যদি মনে করি ২৫টি আসনে ইভিএমে ভোট করব; সেই ২৫টি আমাদের ইচ্ছামতো দেবো না।’ তিনি দাবি করেন, ইভিএম ব্যবহারে নির্বাচন আয়োজনে আর্থিক সাশ্রয় হবে।

পাশাপাশি, একজনের ভোট আরেকজন দিতে পারবে না। কিছু মহলের ধারণা, সিইসি আসন্ন সাধারণ নির্বাচনে কমপক্ষে ১৫০টি আসনে ইভিএম ব্যবহারকল্পে জোর প্রস্তুতি নিতে আদাজল খেয়ে প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। সে লক্ষ্যে প্রায় দেড় লাখ ইভিএম ক্রয়ে গভীর মনোনিবেশ সহকারে পরিশ্রম করে সক্রিয় কর্মসাধনে মগ্ন আছেন। কাউকে বা কোনো মহলকে খুশি করার জন্য তিনি ইভিএম সংক্রান্ত গোমর প্রকাশে মনে হয় আরো কয়েক সপ্তাহ মুখে ‘তালা দিয়ে রাখবেন’। সংবাদ উৎস – নয়া দিগন্ত, লেখক- কারার মাহমুদুল হাসান, সাবেক সচিব, সাবেক এপিডি, ইউএনডিপি সাহায্যপুষ্ট, বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন শক্তিশালীকরণ প্রকল্প (২০০১)

Shares