হালুয়াঘাটের ভয়াবহ টর্নেডোর ধ্বংস লীলায় চার শিশুসহ নিহত-১৬, আহত ২ শতাধিক
প্রকাশিতঃ ৯:০৭ অপরাহ্ণ | জুন ০৮, ২০১৮ । এই নিউজটি পড়া হয়েছেঃ ৪৪১ বার
ওমর ফারুক সুমনঃ ২০০৪ সালের ১৪ এপ্রিল ছিলো হালুয়াঘাটের ভয়াবহ টর্নেডো দিবস। দিনটি ছিলো বুধবার। ২০০৪ সালের নববর্ষের দিনে সন্ধ্যা ৬ টা ৪৫ মিনিটের সময় কাল বৈশাখীর ভয়াল তান্ডবে লন্ডভন্ড হয়ে গিয়েছিলো ৫নং গাজীরভিটা ইউনিয়নের সুমনিয়াপাড়াসহ কালিয়ানীকান্দা ও বোয়ালজানা গ্রামের একাংশ। একটি মসজিদ ব্যতিত আর কোন কিছুই ধ্বংস লীলা থেকে রক্ষা পায়নি সেদিন। চারিদিকে হাহাকার আর কান্নার রুল বিরাজ করে। পুকুরে ছিলোনা মাছ, মাটির উপরে ছিলোনা কোন বটবৃক্ষও। গাছের রাজা তালগাছও সেই ঝড়ে দুমড়ে মুঁচড়ে গিয়েছিলো । এই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সুমনিয়াপাড়া গ্রামের আব্দুল মালেক বলেন, মাত্র ২ মিনিটের মতো স্থায়ীত্ব ছিলো ঝড়টির। হঠাৎ দেখলাম আকাশের দক্ষিন-প্রশ্চিম কোনে অন্ধকার। কিছু বুঝে উঠার আগেই তছনছ করে দিয়ে যায় গ্রামটিকে। স্বামী খুঁজছে তার স্ত্রীকে। মা খুঁজছে তার সন্তানকে। স্বজনহারাদের কান্নায় আকাশ সেদিন ভারী হয়ে উঠেছিলো।
সেদিনের সেই ঝড়ে প্রাণ হারিয়েছিলো চার শিশুসহ ১৬ জন। এরা হলেন জিন্নত আলী কারী (৫০) ও তার মেয়ে দিলারা (২), আব্দুর রাজ্জাকের মেয়ে হ্যাপী (১), আমজাদ আলী মুন্সীর মেয়ে আকলিমা (১৫) ও আঞ্জু (১০), মঞ্জুর স্ত্রী সেলিনা (৩০), হাজী আব্দুল জব্বারের পুত্র শামসুল হক (৫০), দেলোয়ারের স্ত্রী সুফিয়া খাতুন (৩০), আব্দুল মতিনের পুত্র আলী হোসেন (১৩), কামালের স্ত্রী বানেছা খাতুন (৪০), জাবক্সের পুত্র সুকবর (৬০), নিতানন্দের স্ত্রী জিতি গাগ্রা (৩০), যিশাই পান্তার স্ত্রী সেলিনা আজীম (৩২), জামাল উদ্দিনে মেয়ে সীমা (৩), প্রবেশ পান্তার স্ত্রী মাহিমা আজীম (৫০) ও শকুর চিসামের স্ত্রী পলেতা আজীম (৪৮)। সেদিন আহত হয় ২ শতাধিক।
সেদিন টর্নেডোর ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতায় এগিয়ে এসেছিলেন সরকারসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। বর্তমান প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তৎকালীন প্রধান মন্ত্রী খালেদা জিয়া তাদের আগমনও ঘটেছিলো। শুকনো খাবার, নগদ টাকা, জামা কাপড়, ঘর নির্মাণ ও আহতদেরকে চিকিৎসা সেবাসহ নানাভাবে সহযোগিতা করেছেন তারা। ঘুরে দাঁড়িয়েছিলো ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষ।