আজ বৃহস্পতিবার , ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |

শিরোনাম

এম্বুলেন্সে করে মাদক পাচারকালে ২৪০ বোতল ভারতীয় মদসহ একজন আটক এমপি মাহমুদুল হক সায়েমকে সি.আই.পি শামিমের সংবর্ধনা হালুয়াঘাটে ঈদে বাড়ি ফেরার পথে লাশ হল স্বামীসহ অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী হালুয়াঘাটের স্থলবন্দর দিয়ে ২৭টি পণ্যের আমদানী রপ্তানীর পরিকল্পনা-এমপি সায়েম হালুয়াঘাটে ২৭ হাজার দুস্থ অসহায় পাচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার ১৩ বছর পর পদত্যাগ করলেন ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হালুয়াঘাটে ফেইসবুক গ্রুপে কোরআন তেলাওয়াত ও ইসলামী সংগীত প্রতিযোগিতা। পুরস্কার বিতরণ ‘কৃষ্ণনগরের কৃষ্ণকেশীর ‘বেহিসেবি রঙ.. হিমাদ্রিশেখর সরকার হালুয়াঘাট থেকে ফুলপুর পর্যন্ত চার লেনের রাস্তা নির্মাণসহ সড়ানো হচ্ছে অস্থায়ী বাস কাউন্টার জনগণের অধিকার আদায় না হওয়া পর্যন্ত বিএনপি রাজপথে থাকবে-প্রিন্স ডামি নির্বাচন করে গণতন্ত্রকে আইসিইউতে পাঠিয়েছে আওয়ামী লীগ-প্রিন্স বাজারে পণ্যের অগ্নিমূল্যের তাপ তাদের গায়ে লাগেনা-প্রিন্স নালিতাবাড়ীতে প্রেসক্লাবের নির্বাচন, সভাপতি সোহেল সম্পাদক মনির গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে-বিএনপি নেতা প্রিন্স হালুয়াঘাটে বিএনপি নেতা প্রিন্স’র লিফলেট বিতরণ

পরকীয়ার জেরে স্বামী খুন! স্ত্রী স্নিগ্ধা ও প্রেমিক কামরুলের বিরুদ্ধে পুলিশের চার্জসিট

প্রকাশিতঃ ৬:১৭ অপরাহ্ণ | সেপ্টেম্বর ১৭, ২০১৮ । এই নিউজটি পড়া হয়েছেঃ ৮৪৭ বার

স্টাফ রিপোর্টারঃ রংপুরে পরকীয়ার জের ধরে চাঞ্চল্যকর হত্যা এডভোকেট রথিশ চন্দ্র ভৌমিকের খুনের মামলায় স্ত্রী স্নিগ্ধা ভৌমিক ও তার প্রেমিক কামরুলের বিরুদ্ধে চার্জসিট প্রদান করেছে রংপুর জেলা পুলিশ। ১৭ সেপ্টেম্বর সোমবার দুপুরে রংপুর জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সাংবাদিক সন্মেলনে রংপুরের পুলিশ সুপার মোঃ মিজানুর রহমান পিপিএম এ কথা বলেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ সাইফুর রহমান সাইফ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মারুফ হোসেনসহ পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ। উলেখ্য যে, ৩০ মার্চ১৮ তারিখে এডভোকেট রথিশ চন্দ্র ভৌমিক নিখোঁজ হওয়ার পাচ দিন পর প্রকাশ ঘটে যে তার স্ত্রীর পরকিয়ার জেরে খুন হন রথিশ চন্দ্র ভৌমিক। অবশেষে ৫ মাস ১১ দিন পর পুলিশ এই হত্যাকান্ডের আসল রহস্য উদ্ঘাটন করে স্ত্রী স্নিগ্ধা ভৌমিক ও তার প্রেমিক কামরুলের বিরুদ্ধে চার্জশিট প্রদান করেন।
উল্লেখ্য স্ত্রীর পরকীয়া এবং তার পরিকল্পনাতেই খুন হয়েছিলেন রংপুরের অতিরিক্ত জজ আদালতের পিপি এবং চাঞ্চল্যকর জাপানি নাগরিক হোসি কোনিও ও মাজারের খাদেম রহমত হত্যা মামলার সরকার পক্ষের আইনজীবী রথিশ চন্দ্র ভৌমিক (বাবু সোনা)। পাঁচ দিন নিখোঁজ থাকার পর রাত ২টার দিকে নিজ বাড়ির নিকটস্থ তাজহাট মোল্লা পাড়ার একটি নির্মাণাধীন বাসা থেকে অর্ধ গলিত অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

যেভাবে হত্যা করা হয়
মুলতঃ স্ত্রীর পরকীয়া প্রেম এবং পারিবারিক কলহের কারণেই খুন হয়েছেন এডভোকেট রথিশ চন্দ্র ভৌমিক (বাবু সোনা)। তাকে দুধের সাথে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। পরে তার লাশ একটি আলমারিতে ভরে আলমারি পরিবর্তনের নাম করে নিয়ে যাওয়া হয় মোল্লাপাড়ার সেই বাড়িতে। সেখানে পূর্বেই করে রাখা গর্তে তার লাশ পুতে রাখা হয়।
গত ৪ এপ্রিল বুধবার রংপুর র‌্যাব-১৩ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, দীর্ঘ দুই মাস ধরে হত্যা পরিকল্পনা করেন এ্যাডভোকেট রথীশ চন্দ্র ভৌমিকের স্ত্রী স্নিগ্ধা সরকার দিপা ও তার প্রেমিক কামরুল মাস্টার। তারা উভয়েই তাজহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন।
পরিকল্পনা অনুযায়ী আগেই তাজহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের দুই ছাত্রের সহযোগীতায় ২৬ মার্চ বুধবার একটি নির্মাণাধীন ভবনের ভেতরের মেঝের বালু সরিয়ে গর্ত করে রাখে তারা। পরে ২৯ মার্চ বৃহস্পতিবার রাতে ভাত ও দুধের সাথে ১০ টি ঘুমের বড়ি খাওয়ানো হয়। এরপর গলায় ওড়না পেচিয়ে শাসরোধ করে স্নিগ্ধা ও কামরুল বাবু সোনাকে হত্যা করে। হত্যার পর লাশ বাড়ির আলমারিতে ঢুকিয়ে কৌশলে আলমারি পরিবর্তনের কথা বলে তা নিয়ে যাওয়া হয় বাড়ির অদুরে তাজহাট মোল্লাপাড়ার সেই নির্মাণাধীন ভবনে। পরে সেই গর্তেই লাশ পুতে ফেলে তারা।
স্ত্রী দীপার স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে র‌্যাব মহাপরিচালক জানান, হত্যাকান্ড সংঘটিত হওয়ার পর শুক্রবার ভোর ৫টার দিকে বাবু সোনার বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান কামরুল। সকাল ৯টার দিকে তিনি একটি ভ্যান নিয়ে আসেন। লাশ গুমের উদ্দেশ্যে নিহতের স্ত্রী দীপা আলমারি পরিবর্তনের কথা বলে কামরুলের সহায়তায় বাবু সোনার লাশ আলমারিতে ভরেন। পরে তিন ব্যক্তির সহায়তায় ওই লাশ ভ্যানে তুলে তাজহাট মোল্লাপাড়ার নির্মাণাধীন ওই বাড়িতে পুঁতে রাখা হয়। ভ্যানে তোলার কাজে সহায়তাকারী তিন ব্যক্তিকে কামরুল মাস্টার তার সঙ্গে নিয়ে আসেন।
পরে তাজহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী মোল্লাপাড়ার রবিউল ইসলামের ছেলে সবুজ ইসলাম (১৭) ও রফিকুল ইসলামের ছেলে রোকনুজ্জামান (১৭) গর্তের মাটি ভরাটে সহায়তা করেন।

উল্লেখ্য, আইনজীবী রথীশ চন্দ্র ভৌমিকের নিখোঁজের খবর ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন সংগঠন তার খোঁজ দাবিতে আন্দোলনে নামে। পরে র‌্যাব- ১৩ এর সাথে ঢাকা থেকে একটি বিশেষজ্ঞ টিম আইনজীবী রথীশ চন্দ্র ভৌমিক নিখোজ হওয়ার বিষয়টি তদন্ত শুরু করে। র‌্যাবের গোয়েন্দা টিম তথ্য পেয়ে গত মঙ্গলবার বাবু সোনার স্ত্রী স্নিগ্ধা ভৌমিক দিপাকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এতে তিনি পারিবারিক কলহ, সন্দেহ ও পরকীয়া প্রেমে লিপ্ত হয়ে তার কথিত প্রেমিক কামরুল মাস্টারসহ সে তার স্বামীকে হত্যা করেছে জানিয়ে লাশের অবস্থানের কথা জানায়। তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী মঙ্গলবার রাত ২টার দিকে মোল্লা পাড়ার সেই নির্মাণাধীন বাড়ির ভিতর গর্তের ভিতর থেকে এ্যাডভোকেট রথিশ চন্দ্র ভৌমিকের লাশ উদ্ধার করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।
নিহত আইনজীবী রথীশ চন্দ্র ভৌমিক রংপুরের আলোচিত জাপানী নাগরিক হোসি কোনিও এবং মাজারের খাদেম রহমত আলী হত্যা মামলার সরকার পক্ষের পিপি ছিলেন। তিনি রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক, জেলা পুজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি, রংপুর আইনজীবী সমিতির সাবেক কোষাধ্যক্ষ ছাড়াও তাজহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, সম্মিলিক সাংস্কৃতিক জোট, সুজনসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের বিভিন্ন গুরুত্বপুর্ন পদে দায়িত্ব পালন করছিলেন। এছাড়া তিনি জামায়াত ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল এ টি এম আজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার সাক্ষী ছিলেন।

Shares