কোরবানির ‘সেলফি’ নিষিদ্ধ ভারতের উত্তরপ্রদেশে
প্রকাশিতঃ ১১:১১ অপরাহ্ণ | আগস্ট ২২, ২০১৮ । এই নিউজটি পড়া হয়েছেঃ ৪০১ বার
অনলাইন ডেস্কঃ উত্তরপ্রদেশে খোলা জায়গায় পশু কোরবানির ওপর নিষেধাজ্ঞা বলবৎ হয়েছে গত বছর। ভারতের উত্তরপ্রদেশ রাজ্যে ঈদের কোরবানি দিয়ে সেলফি তোলার ওপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে এবছর থেকে।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ রাজ্যের সব জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারিন্টেডেন্টদের নিয়ে এক ভিডিও কনফারেন্স করে জানিয়েছেন, পশু কোরবানি দিয়ে কেউ যেন সেলফি তুলে সামাজিক মাধ্যমে তা পোস্ট না করেন। সে দিকে প্রশাসনকে কড়া নজর রাখতে বলা হয়েছে।
ওই রাজ্যে গত বছর থেকেই খোলা জায়গায় পশু কোরবানি দেওয়ার ওপরে নিষেধাজ্ঞা বলবৎ হয়েছে এবং কোরবানির পরে যাতে রক্ত নালা-নর্দমায় না ছড়াতে পারে, তার ওপরে নজরদারি চালাচ্ছে প্রশাসন।
তার সঙ্গেই এবছর থেকে যুক্ত হয়েছে কোরবানির আগে-পরে সেলফি তোলার ওপরে নিষেধাজ্ঞা। সাম্প্রতিক বছর গুলোতে অনেকেই কোরবানির ছবি সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে থাকেন, যেটা শুধু মুসলমানরা নয়, অনেক কম বয়স্ক বা অন্য ধর্মের মানুষজনেরও নজরে পড়ে।
এ নিয়ে ফেসবুকে বিতর্কও চোখে পড়ছে গত কয়েক বছর ধরেই। তবে তার ওপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করায় উত্তরপ্রদেশের মুসলমানদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে।
হোটেল মালিক খুর্শিদ আহমেদ বলেন,কোরবানি তো নিয়ম অনুযায়ী ঢাকা জায়গাতেই করার কথা। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সেটাই হয়। আর কোরবানির সেলফি তোলা তো একেবারে হালের ফ্যাশান। এর সঙ্গে ধর্মের কোনও সম্পর্ক নেই।
অল ইন্ডিয়া মুসলিম উইমেন্স পার্সোনাল ল বোর্ডের প্রধান শাইস্তা অম্বর লক্ষ্ণৌতে একটি মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেছেন নারীদের জন্য। তিনি বলছেন, খোলা জায়গায় কোরবানি দেওয়া অথবা সেখানে যে রক্ত পড়ে থাকে, সেটা বেশ অস্বাস্থ্যকর। অনেকেই ওসব দেখে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাই এটা না করাই উচিত। তবে মুখ্যমন্ত্রীর উচিত ছিল এইসব নিষেধাজ্ঞা জারি করার আগে সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে নেওয়া।
মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের শহর বলে পরিচিত গোরখপুরে যেখানে তার মন্দির, তার পিছনেই থাকেন মুহম্মদ ইসলাম। তিনি বলছেন, ঘেরা জায়গাতেই কোরবানি দেওয়া হয়ে থাকে প্রায় সব ক্ষেত্রেই। জায়গাটা পরিষ্কারও রাখা হয়, জল ঢালা হয় মাঝে মাঝেই। তবে কোরবানি দিলে কিছু রক্ত তো গড়িয়ে নালা-নর্দমায় যাবেই!
গোরখপুরেরই আরেক বাসিন্দা পারভেজ পারওয়াজ মনে করেন, মুসলমানরা আগে থেকেই যেসব নিয়ম কানুন মেনে কোরবানি দেন, সেগুলোর ওপরেই আবার করে নিষেধাজ্ঞা জারি করার কোনও প্রয়োজন ছিল না। এটা মুসলমানদের প্রতি একটা বার্তা দেওয়া হচ্ছে বলেই তার মত।