মিম ও রাজিবকে ইচ্ছে করেই বাসচাপা দেন বখাটে চালক
প্রকাশিতঃ ৯:১৪ অপরাহ্ণ | আগস্ট ০৮, ২০১৮ । এই নিউজটি পড়া হয়েছেঃ ৬৩২ বার
অনলাইন ডেস্কঃ শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের শিক্ষার্থীদের ইচ্ছাকৃতভাবে বাসচাপা দেওয়ার কথা স্বীকার করে জবানবন্দিতে আদালতকে এসব কথা জানান জাবালে নূর পরিবহনের চালক মাসুম বিল্লাহ।
বুধবার (৮ আগস্ট) ঢাকা মহানগর হাকিম গোলাম নবীর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন মাসুম বিল্লাহ। জবানবন্দিতে তিনি হত্যার দায় স্বীকার করেন। জবানবন্দি শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
এদিকে বাসচাপার ঘটনায় ঘটনাস্থলেই একাদশ শ্রেণির ছাত্রী দিয়া খানম মিম ও বিজ্ঞান বিভাগের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আব্দুল করিম রাজিব নিহত হয়। জবানবন্দিতে এ হত্যার দায় স্বীকার করেন জাবালে নূর পরিবহনের চালক। জবানবন্দি শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
আজ সাতদিনের রিমান্ড শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে তাকে হাজির করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক কাজী শরিফুল ইসলাম। এ সময় ফৌজদারি কার্যবিধি ১৬৪ ধারায় তার জবানবন্দি রেকর্ড করার আবেদন করেন তিনি এবং মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদনও করেন।
জবানবন্দিতে মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘বেশি ভাড়া পাওয়ার আশায় আগে যাত্রী উঠানোর জন্য তিনটি বাসের সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছিলাম। ছাত্ররা রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে থাকায় ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের ওপর বাস উঠিয়ে দেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘জাবালে নূর বাসের (যার রেজি. নং ঢাকা মেট্রো-ব-১১-৯২৯৭) চালক আমি। গত ২৯ জুলাই জিল্লুর রহমান ফ্লাইওভারের নিচে দাঁড়িয়ে থাকা শহীদ রমিজ উদ্দিন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ১৪-১৫ জন ছাত্রছাত্রীর ওপর ইচ্ছাকৃতভাবে গাড়ি উঠিয়ে দিয়ে তাদের গুরুতর জখম করি। গাড়ি থেকে নেমে পালিয়ে যাই। আমার গাড়ির আঘাতেই রমিজ উদ্দিন কলেজের দুজন শিক্ষার্থী নিহত হয়। আহত হয় ৮-১০ জন।’
এদিকে, ‘সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮’ এর খসড়ায় বলা হয়েছে, ‘প্রাণহানির ক্ষেত্রে দুর্ঘটনার কারণ ইচ্ছাকৃত ছিল তদন্তে তা প্রমাণিত হলে দণ্ডবিধির ৩০২ ধারা অনুযায়ী চালকের শাস্তি হবে মৃত্যুদণ্ড।’ এ আইন অনুযায়ী বিচার হলে চালক মাসুম বিল্লাহর মৃত্যুদণ্ড হওয়ার কথা, কারণ তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে এই ঘটনা ঘটান। গত সোমবার সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভা বৈঠকে বহুল আলোচিত এই আইনের অনুমোদন দেয়া হয়।
উল্লেখ্য, গত ২৯ জুলাই রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কের কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সামনে এমইএস বাসস্ট্যান্ডে জাবালে নূর পরিবহনের দুই বাসের চালকের রেষারেষিতে এক বাসের চাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হয়। আহত হয় আরও ১০-১৫ শিক্ষার্থী। ঘটনার দিনই নিহত দিয়া খানম মিমের বাবা জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলা করেন। মামলা নং ৩৩ (৭) ১৮।