আজ শুক্রবার , ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ |

শিরোনাম

বাজারে পণ্যের অগ্নিমূল্যের তাপ তাদের গায়ে লাগেনা-প্রিন্স নালিতাবাড়ীতে প্রেসক্লাবের নির্বাচন, সভাপতি সোহেল সম্পাদক মনির গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে-বিএনপি নেতা প্রিন্স হালুয়াঘাটে বিএনপি নেতা প্রিন্স’র লিফলেট বিতরণ ৯৮ দিন কারাভোগের পর নিজ এলাকায় বিএনপি নেতা প্রিন্সকে সংবর্ধনা হালুয়াঘাট ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের মধ্যে হাঁস-মুরগি বিতরণ ইশ্বরগঞ্জে বালু শ্রমিক আজিজুল হত্যার আসামী মাখন আটক শিক্ষার্থীদের বেতন অর্ধেক করে দিতে হবে-এমপি সায়েম হালুয়াঘাটে তেলের দোকানে অগ্নিকান্ড ম্যানেজিং কমিটির, সভাপতির পক্ষ থেকে জিপিএ-৫ পেলেই মিলবে ল্যাপটপ! হালুয়াঘাটে যুগান্তর স্বজন সমাবেশে কেক কাটলেন এমপি ‘সায়েম’ শিক্ষার্থীদেরকে নীতিকথা শোনাতে হবে- ইউএনও নালিতাবাড়ী নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাচনে আসছেন ‘হাজী মোশারফ’ নালিতাবাড়ী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী ‘হাজী মোশারফ ‘ নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান হতে চান “হাজী মোশারফ”

মৌলভীবাজার শিক্ষার্থীদের পেটালো ছাত্রলীগ

প্রকাশিতঃ ১০:৪৯ অপরাহ্ণ | আগস্ট ০৪, ২০১৮ । এই নিউজটি পড়া হয়েছেঃ ৪৯৬ বার

মৌলবীবাজার সংবাদদাতাঃ ছাত্রলীগের কর্মীরা এক আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীকে পেটানোর ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এখন ভাইরাল। সাধারণ শিক্ষার্থীর ব্যানারে নিরাপদ সড়কের দাবীতে গতকাল (শনিবার) মৌলভীবাজারে আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা। অনেকটা শান্তিপূর্ণকর্মসূচীর শেষ পর্যায়ে আন্দোলনে অংশ নেওয়া ৩ জন সাধারণ শিক্ষার্থীকে পুলিশের সামনেই মারধর করে ছাত্রলীগ কর্মীরা এমন অভিযোগ সাধারণ শিক্ষার্থীদের। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই ভিডিও ছড়িয়ে দিয়ে অনেকেই তার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। শহরের চৌমুহনা এলাকায় মারধরের ঘটনা ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিও দেখে শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন পুলিশের সামনেই ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর হাতে প্রহ্রত ওই শিক্ষার্থী মৌলভীবাজার সরকারী কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্র। তার নাম হ্রদয়।

এছাড়াও আরো ২ জন আহত হয়েছেন বলে জানান আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এ সময় ওই ছাত্রকে হামলাকারীদের কাছ থেকে উদ্ধার করে কয়েকজন শিক্ষার্থী। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান আন্দোলন কর্মসূচীর শেষ পর্যায়ে বিক্ষোভকারী শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন যানবাহনের লাইসেন্স চেক করার সময় কয়েকজন ছাত্রলীগ পরিচয় দিয়ে এক শিক্ষার্থীর উপর হামলা করে। পুলিশের সামনেই তাকে বেদড়ক পেটানো হয়। অবশ্য পরে কয়েজন পুলিশ সদস্য একত্রে এসে পরিস্থিতি শান্ত করেন। হামলায় আহত শিক্ষার্থীকে আটকে রাখে পুলিশ। পরে শিক্ষার্থীরা “ছাত্রলীগের হামলা কেন? “আমার ভাইয়ের মুক্তি চাই” বলে স্লোগান দিয়ে মিছিল দেয়। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানানা, “দুপুরের দিকে সংঘবদ্ধ আন্দোলন জোড়ালো হলে ছাত্রলীগ ও যুবলীগ পরিচয় দিয়ে কয়েকজন বাঁধা দিলে আন্দোলনে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। কলেজের আইডি কার্ড হীনদের বিক্ষোভের স্থান থেকে বের করেও দেয়া হয়। একপর্যায়ে চৌমুহনা চত্তরের শিক্ষার্থীরা শহরের প্রেসক্লাব পয়েন্ট ও কোর্ট রোডে অবস্থান নেয়। সারা দেশের ন্যায় ঢাকার একটি ও স্থানীয় ৮টি দাবীসহ মোট ৯ দফা দাবী নিয়ে মৌলভীবাজারেও আন্দোলনে নামেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে অচল হয়ে পড়ে পুরো জেলা। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শহরের বিভিন্ন স্কুল কলেজ থেকে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে শহরের চৌমুহনী এলাকায় জড়ো হয়। এসময় উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা রাস্তায় বসে নানা স্লোগান দেয়। তখন সময় বাড়ার সাথে সাথে শিক্ষার্থীদের সংখ্যাও বাড়তে থাকে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মুখে প্রতিবাদী স্লোগান, গলায় ঝুলানো প্লে কার্ডে ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস, আমাদের মেরুদন্ড ভেঙ্গনা, জাতির মেরুদন্ড ভেঁঙ্গে যাবে ইত্যাদি নানা স্লোগান সম্বলিত প্লে কার্ড দেখা যায়। সময় যতো গড়ায় সাধারণ ছাত্রদের আন্দোলন ততই বাড়তে থাকে। মিছিলে মিছিলে উত্তাল হয়ে ওঠে পুরো শহর। চৌমুহনা এলাকায় অবস্থান নেয়ার পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা ছড়িয়ে পড়ে শহরের গুরুত্বপূর্ণ সব রাস্তায়। সেখানেও তারা বিভিন্ন গাড়ি ও ড্রাইবারের লাইসেন্স দেখা শুরু করে। আবার অনেকে চালককেও নানা  পরামর্শ দেয়। মৌলভীবাজার মডেল থানা পুলিশ জানায়, দুপুরে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা চৌমুনাস্থ স্বাদের সামনে একটি প্রাইভেট গাড়ি ভাঙচুর করে। তখন পুলিশ জিজ্ঞাসা বাধের জন্য দুজনকে আটক করে পরে ছেড়ে দেয়। আন্দোলন চলাকালীন সময়ে শিক্ষার্থীরা কোনো গাড়িই শহর অভিমুখে প্রবেশ করতে দেয়নি। সকাল ৯টা থেকে তারা কুলাউড়া-মৌলভীবাজার সড়কের গোবিন্দবাটি এলাকায়, সিলেট-মৌলভীবাজার রোডের জুগিডর এলাকায় ও মৌলভীবাজার-শ্রীমঙ্গল সড়কের মুকামবাজার এলাকায় তারা গাড়ি আটকিয়ে ধর্মঘট পালন করে। শহরের বাইরে থেকে গাড়ি না আসায় বিভিন্ন এলাকা থেকে শিক্ষার্থীরা পায়ে হেটে আন্দোলনে যোগ দেয়। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবী দাওয়া মেনে নেওয়া হবে এমনটি আশ্বস্ত করে জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র মো: ফজলুর রহমান তাদেরকে শান্ত থেকে ঘরে ফেরার অনুরোধ করেন। পরে শিক্ষার্থীরা রাজপথের কর্মসূচী স্থগিত করে ক্লাসে ফিরেন। তবে দাবী আদায়ের বাস্তবতা পরিলক্ষিত না হলে তারা আবারও রাজপথে নামবেন বলে হঁশিয়ারী দেন। সাধারণ শিক্ষার্থীর ব্যানারে এই আন্দোলনে মৌলভীবাজারের আহবায়ক এম এ সামাদ, শাহ ফাহিম, সিরাজুল হাসান জানান সকাল থেকে জাতিয় ১টি ও স্থানীয় ৮টি দাবী নিয়ে তারা শহরে আন্দোলন করেছেন। পরে পৌর মেয়রের আশ্বাসে তারা ১৫ দিনের জন্য আন্দোলন স্থগিত করেন। তারা বলেন আমাদের আন্দোলন কর্মসূচী স্থগিত ঘোষণারপর আরেকটি গ্রুপ অবস্থান কর্মসূচী চালিয়ে যায়। এসময় তারা ছাত্রলীগের কর্মীদের হাতে মারধরের শিকার হন। তবে এ ঘটনার নিন্দা জানান তারা। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীর একটি অংশ অভিযোগ করে বলেন কোন কারন ছাড়াই আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচীর শেষ পর্যায়ে চৌমুহনা ও কোর্ড রোড এলাকায় পুলিশের সামনে তাদের ৩ সহপাঠীকে মারধর করে ছাত্রলীগের কর্মীরা। তবে জেলা ছাত্রলীগের একাধীক নেতার কাছে মারধরের বিষয়টি জানতে চাইলে তারা অস্বীকার করেন এবং এর সাথে তারা জড়িত নয় বলে জানান। তারা বলেন কে বা কারা মারধর করে ছাত্রলীগের উপর এই দায় চাপাচ্ছে। তবে আন্দোলনে যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সে জন্য শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ছিল।

Shares