আজ শুক্রবার , ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ |

শিরোনাম

বাজারে পণ্যের অগ্নিমূল্যের তাপ তাদের গায়ে লাগেনা-প্রিন্স নালিতাবাড়ীতে প্রেসক্লাবের নির্বাচন, সভাপতি সোহেল সম্পাদক মনির গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে-বিএনপি নেতা প্রিন্স হালুয়াঘাটে বিএনপি নেতা প্রিন্স’র লিফলেট বিতরণ ৯৮ দিন কারাভোগের পর নিজ এলাকায় বিএনপি নেতা প্রিন্সকে সংবর্ধনা হালুয়াঘাট ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের মধ্যে হাঁস-মুরগি বিতরণ ইশ্বরগঞ্জে বালু শ্রমিক আজিজুল হত্যার আসামী মাখন আটক শিক্ষার্থীদের বেতন অর্ধেক করে দিতে হবে-এমপি সায়েম হালুয়াঘাটে তেলের দোকানে অগ্নিকান্ড ম্যানেজিং কমিটির, সভাপতির পক্ষ থেকে জিপিএ-৫ পেলেই মিলবে ল্যাপটপ! হালুয়াঘাটে যুগান্তর স্বজন সমাবেশে কেক কাটলেন এমপি ‘সায়েম’ শিক্ষার্থীদেরকে নীতিকথা শোনাতে হবে- ইউএনও নালিতাবাড়ী নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাচনে আসছেন ‘হাজী মোশারফ’ নালিতাবাড়ী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী ‘হাজী মোশারফ ‘ নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান হতে চান “হাজী মোশারফ”

সারাদেশে অঘোষিত পরিবহন ধর্মঘটে সীমাহীন ভোগান্তি

প্রকাশিতঃ ৭:৩০ অপরাহ্ণ | আগস্ট ০৩, ২০১৮ । এই নিউজটি পড়া হয়েছেঃ ৪৪২ বার

অনলাইন ডেস্কঃ রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনায় চলমান ছাত্র বিক্ষোভের ষষ্ঠ দিনে ঢাকাসহ বেশিরভাগ জেলায় অঘোষিত পরিবহন ধর্মঘট চলছে।

সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের নির্দেশে এ ধর্মঘট শুরু হয়েছে বলে জানা গেছে। সংগঠনটির সভাপতি নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান।

পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা সরাসরি ধর্মঘটের কথা স্বীকার করছেন না। তারা বলছেন, আন্দোলনরত ছাত্ররা ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করায় নিরাপত্তাহীনতার কারণে তারা বাস চালাচ্ছেন না।

জানা গেছে, শুক্রবার সকাল থেকে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল, সিলেট, বগুড়া, ময়মনসিংহ, কুমিল্লা, রংপুর, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, বেনাপোলসহ দেশের অধিকাংশ জেলায় বাস চলাচল পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী যুগান্তরকে বলেন, আমরা কাউকে গাড়ি বন্ধ করতে বলিনি। অনেক মালিকই নিরাপত্তাহীনতার কারণে গাড়ি চালাচ্ছেন না। তবে কোনো ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয়নি।

প্রসঙ্গত, রোববার দুপুরে কুর্মিটোলায় বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী মারা যাওয়ার পর এ বিষয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে নৌমন্ত্রী ও শ্রমিক নেতা শাজাহান খান হাসতে হাসতে প্রতিক্রিয়া জানান।

এ নিয়ে সামাজিকমাধ্যমে তীব্র সমালোচনার পর সোমবার রাস্তায় নেমে আসেন রাজধানীর বিভিন্ন স্কুল-কলেজের বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।

এর পর গত ছয় দিন ধরে নৌমন্ত্রীর পদত্যাগ এবং ঘাতক চালকের ফাঁসিসহ ৯ দফা দাবিতে তারা আন্দোলন করে আসছেন।

শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে নৌমন্ত্রী শাজাহান খান এরই মধ্যে দুঃখ প্রকাশ ও ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। তবে বৃহস্পতিবার দুপুরে পদত্যাগ করবেন না বলে তিনি জানান।

এর পর বিকাল থেকে মিরপুরে পরিবহন শ্রমিকদের মারমুখী অবস্থান দেখা যায়। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বরে পুলিশের সঙ্গে মিলে শ্রমিকরা তাদের পিটিয়েছেন।

এদিকে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে বিভিন্ন জেলা থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাস মাঝপথে শ্রমিকদের বাধার মুখে পড়ে বলে খবর পাওয়া গেছে।

পরে শুক্রবার ভোর থেকে রাজধানীর অভ্যন্তরীণ রুটগুলোতে চলাচলরত যাত্রীবাহী বাসে বাধা দেন শ্রমিকরা। তারা যাত্রীদের নামিয়ে দিয়ে বাসগুলোকে সড়কের পাশে এলোপাতাড়ি দাঁড় করিয়ে দেন।

শ্রমিকদের বাধার মুখে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে রাজধানীর প্রায় সব রুটেই বাস চলাচল একেবারেই বন্ধ হয়ে যায়।

বাস চলাচলে বাধার বিষয়ে শুক্রবার দুপুরে মেহেরপুর জেলা বাস মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম রসুলের সঙ্গে এ প্রতিবেদকের কথা হয়। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার রাত ১২টার সময় কুষ্টিয়া হয়ে ঢাকায় আসার পথে শ্রমিকরা আমাদের বাস ফেরত পাঠিয়ে দেন।

গোলাম রসুল অভিযোগ করে বলেন, নিয়মানুযায়ী ধর্মঘট ডাকতে হলে মালিক-শ্রমিকরা একসঙ্গে বসে ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নিতে হয়। কিন্তু আমাদের কিছু বলা হয়নি। তাই আমরা যাত্রীদের কাছে টিকিট বিক্রি করেছি। এখন যাত্রীদের নিতে বাস চলতে বাধা দেয়া হচ্ছে।

এ বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে শুক্রবার বাদ জুমা পরিবহন শ্রমিকদের সঙ্গে মেহেরপুর জেলা বাস মালিক সমিতির বৈঠক ডাকা হয়েছে বলে জানান তিনি।

বাস চলাচল বন্ধ রেখে রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থানরত শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের নির্দেশে শুক্রবার সকাল থেকে সব ধরনের পরিবহন বন্ধ রাখা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্ষন্ত এ ধর্মঘট চলবে।

পরিবহন সংশ্লিষ্টরা জানান, গত পাঁচ দিন ধরে ছাত্র আন্দোলনকে ঘিরে রাজধানীতে তিন শতাধিক বাস ভাঙচুর ও অন্তত নয়টিতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ কারণে রাজধানীতে বাস চলাচল সীমিত ছিল।

কিন্তু শ্রমিক ফেডারেশনের নির্দেশে শুক্রবার ভোর থেকে সারা দেশে একযোগে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। এতে সাধারণ যাত্রীরা চরম দুর্ভোগের মুখে পড়েন।

আজ বেলা ১২টা পর্যন্ত রাজধানীর গুলিস্তান, পল্টন, কাকরাইল, শাহবাগ, এলিফ্যান্ট রোড, সায়েন্স ল্যাবরেটরি, মিরপুর রোড, সাতমসজিদ রোড, কারওয়ানবাজার, ফার্মগেট, বিজয় সরণি রোড, মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ, জিয়া উদ্যান, শ্যামলী, কল্যাণপুর, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, মিরপুর-১, ১০ ও ১১, পল্লবী, কালশী, মগবাজার, প্রগতি সরণি, তেজগাঁও, নাবিস্কো, রামপুরা, বাড্ডা, মহাখালী, গুলশান, বনানী, বিমানবন্দর সড়ক, খিলক্ষেত, উত্তরা ও আবদুল্লাহপুরের ব্যস্ততম সড়কগুলোতে তেমন সাধারণ যান চলাচল চোখে পড়েনি।

তবে রাজধানীর কিছু সড়কে বিআরটিসি ও ট্রাস্ট পরিবহনের বাস চলাচল করতে দেখা গেছে। তবে এ দুই পরিবহনেরও খুব কমসংখ্যক বাস চলাচল করছে।

অনেকক্ষণ অপেক্ষা করার পর কোথাও একটি বাসের দেখা মিললে তাতে ওঠার জন্য শত শত যাত্রী হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন। কিন্তু পাঁচ-ছয়জনের বেশি যাত্রী কোনো বাসেই উঠতে পারছেন না। নারী যাত্রীরা এগিয়ে গেলেও বাসের ধারেকাছেও ভিড়তে পারছেন না তারা।

সরেজমিন দেখা গেছে, মিরপুরজুড়ে প্রধান সড়কগুলোতে এলোপাতাড়ি বাস-মিনিবাস ফেলে রাখা হয়েছে। শ্রমিকরা সড়কে অবস্থান নিয়েছেন। কোনো গাড়ি চলাচল করলে তা থেকে যাত্রীদের নামিয়ে দেয়া হচ্ছে।

মিরপুর সাড়ে ১১-তে এক দল শ্রমিক জানায়, পরিবহন মালিক সমিতি ধর্মঘট ডেকেছে। তারা কোনো গাড়ি চলতে দিচ্ছেন না।

আব্দুল্লাহ নামে এক শ্রমিক যুগান্তরকে বলেন, শিক্ষার্থীদের গাড়ি ভাঙচুরের প্রতিবাদে আজ শুক্রবার মালিক সমিতি ধর্মঘট ডেকেছে।

তবে মিরপুরের ডিসি (ট্রাফিক-পশ্চিম) লিটন কুমার সাহা বলেন, মালিক সমিতি এখনও ধর্মঘট ডাকেনি। তাদের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। তারা ডাকতে চাইলে আমরা তাদের না করেছি। তবে বিচ্ছিন্নভাবে শ্রমিকরা গাড়ি থেকে যাত্রীদের নামিয়ে দিতে পারেন।

Shares