জাপানে শিকারিদের হাতে শতাধিক অন্তঃসত্ত্বা তিমি মারা পড়ল
প্রকাশিতঃ ৪:২৯ অপরাহ্ণ | জুন ০১, ২০১৮ । এই নিউজটি পড়া হয়েছেঃ ৫২৮ বার
আন্ত্ররজাতিক ডেস্কঃ
বিজ্ঞান গবেষণার নামে প্রতি বছর তিমি শিকার চলে জাপানে। এ বছর সেই শিকার চলাকালীন ১২২টি অন্তঃসত্ত্বা তিমি মারা পড়ল।
বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, জাপানে চার মাস ধরে চলা ওই তিমি শিকার অভিযান শেষ হয় মার্চে। অ্যান্টার্কটিকায় চার মাসে ৩৩৩টি মিঙ্ক তিমি শিকার করা হয়। ইন্টারন্যাশনাল হোয়েলিং কমিশনকে (আইডব্লিউসি) পাঠানো প্রতিবেদনে জানানো হয়, এ ৩৩৩টি তিমির মাঝে ১২২টিই ছিল অন্তঃসত্ত্বা। শুধু তাই নয়, অনেকগুলো তিমি ছিল অপ্রাপ্তবয়স্ক।
একটি প্রাণী অধিকার সংস্থা এই প্রতিবেদন প্রকাশের পর জাপানের তিমি শিকার অভিযানকে নিন্দা জানিয়েছে হিউমেন সোসাইটি ইন্টারন্যাশনাল। সংস্থাটির সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার অ্যালেক্সিয়া ওয়েলবিলাভ মন্তব্য করেন, তিমি হত্যা না করেই বিজ্ঞান গবেষণা চালানো সম্ভব। এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড চালানোর কোনো দরকারই নেই।
ইন্টারন্যাশনাল হোয়েলিং কমিশনের সদস্য জাপান। সংস্থাটি ১৯৮৬ সাল থেকে তিমি হত্যার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। তারপরেও নিয়মিত প্রতি বছর তিমি হত্যা অভিযান চালায় জাপান। তারা বিজ্ঞান গবেষণাকে কারণ হিসেবে দেখায়। কিন্তু সবাই জানে, আসলে বাজারে বিক্রি করার জন্যই এসব তিমি হত্যা করা হচ্ছে। শেষমেষ এদের মাংস ডিনারের টেবিলে গিয়ে পৌঁছায়।
জাপানের ফিশারিজ এজেন্সি দাবি করে, তারা জেনেশুনে অন্তঃসত্ত্বা তিমিগুলোকে হত্যা করেনি। শিকারের দায়িত্বে থাকা ইউকি মোরিতা দাবি করেন, আইসিডব্লিউয়ের সায়েন্টিফিক কমিউনিটি জাপানের এই শিকার অভিযানের ব্যাপারে জানে। তারা এই পরিমাণে তিমি হত্যা করে যা গবেষণার জন্য জরুরি অথচ তিমির জনসংখ্যার ওপর কোনো প্রভাব ফেলে না।
২০১৪ সালে ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিস এই তিমি শিকার বন্ধের আদেশ দেয়। এক বছরের জন্য তিমি শিকার বন্ধ থাকলেও ২০১৬ সাল থেকে আবার তা শুরু করে জাপান। আর এই তিমি শিকার অভিযান অব্যাহত রাখার প্রতিজ্ঞা করেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে।
জাপানে তিমি শিকার একটি প্রাচীন প্রথা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সে দেশের দরিদ্র মানুষদের জন্য তিমির মাংসই ছিল আমিষের প্রধান উৎস। অবশ্য বর্তমান সময়ে তিমির মাংস খাওয়ার প্রবণতা কমে এসেছে।