আজ বুধবার , ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ |

শিরোনাম

এম্বুলেন্সে করে মাদক পাচারকালে ২৪০ বোতল ভারতীয় মদসহ একজন আটক এমপি মাহমুদুল হক সায়েমকে সি.আই.পি শামিমের সংবর্ধনা হালুয়াঘাটে ঈদে বাড়ি ফেরার পথে লাশ হল স্বামীসহ অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী হালুয়াঘাটের স্থলবন্দর দিয়ে ২৭টি পণ্যের আমদানী রপ্তানীর পরিকল্পনা-এমপি সায়েম হালুয়াঘাটে ২৭ হাজার দুস্থ অসহায় পাচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার ১৩ বছর পর পদত্যাগ করলেন ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হালুয়াঘাটে ফেইসবুক গ্রুপে কোরআন তেলাওয়াত ও ইসলামী সংগীত প্রতিযোগিতা। পুরস্কার বিতরণ ‘কৃষ্ণনগরের কৃষ্ণকেশীর ‘বেহিসেবি রঙ.. হিমাদ্রিশেখর সরকার হালুয়াঘাট থেকে ফুলপুর পর্যন্ত চার লেনের রাস্তা নির্মাণসহ সড়ানো হচ্ছে অস্থায়ী বাস কাউন্টার জনগণের অধিকার আদায় না হওয়া পর্যন্ত বিএনপি রাজপথে থাকবে-প্রিন্স ডামি নির্বাচন করে গণতন্ত্রকে আইসিইউতে পাঠিয়েছে আওয়ামী লীগ-প্রিন্স বাজারে পণ্যের অগ্নিমূল্যের তাপ তাদের গায়ে লাগেনা-প্রিন্স নালিতাবাড়ীতে প্রেসক্লাবের নির্বাচন, সভাপতি সোহেল সম্পাদক মনির গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে-বিএনপি নেতা প্রিন্স হালুয়াঘাটে বিএনপি নেতা প্রিন্স’র লিফলেট বিতরণ

সরেজমিন প্রতিবেদন হালুয়াঘাটে শত বছরের সিল পাঁটার শতাধিক পরিবারের মানবেতর জীবন

প্রকাশিতঃ ৮:৫২ পূর্বাহ্ণ | জুন ০১, ২০১৮ । এই নিউজটি পড়া হয়েছেঃ ১,৬৬৮ বার

ওমর ফারুক সুমনঃ হালুয়াঘাট উপজেলার জুগলী ইউনিয়নের ঘিলাভুই গ্রাম। বাইন্যা বাড়ি হিসেবে পরিচিত শতাধিক পরিবার। ১২০ বছর যাবত সিলপাঁটা কাটিয়ে চলছে এদের জীবন। কোন পরিবর্তন নেই। শুরুতে মাত্র তিনটি বাইন্যা দিয়ে সিলপাঁটার কাজ আরম্ভ হলেও তা আজ দাড়িয়েছে ১ শত পরিবারের উপরে। এই পেশাটিকে তারা তাদের অতিহ্য হিসেবে মনে করে থাকে। এরা শুধু হালুয়াঘাট নয়, সারা বাংলাদেশেই বিভিন্ন মৌসুমে সিলপাঁটা কাটিয়ে তাদের জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। এই বাইন্যারা যখন বাড়ি থেকে ব্যাবসার উদ্দেশ্যে বাহির হন তখন প্রত্যেক বাড়ির সামনে গিয়ে তাদের স্লোগান হচ্ছে-“এই সিল কাটাই-পাঁটা কাটাই” কারও যদি সিলপাঁটা কাটানোর প্রয়োজন পড়ে তাহলে তাদেরকে ডেকে সিলপাঁটা কাটিয়ে সামান্যতম মজুরি দিয়ে থাকে। সিলপাঁটা হচ্ছে মরিচ,হলুদ, ধনে, জিড়া গুড়া করার পাথরের তৈরি একটি যন্ত্র। যা দিয়ে মহিলারা পাঁটার উপর মরিচ,হলুদ,জিরা,ধনেসহ রান্নার যাবতীয় মসলা রেখে সিল দিয়ে পিষে গুড়া করে। তারপর রান্নাকে সুস্বাধু করার জন্যে তা ব্যাবহার করে।
রবিবার ঘিলাভুই গ্রামের সিলপাঁটার কাটানো এই বাইন্যা বাড়িতে গিয়ে বিচিত্র রকমের তথ্য পাওয়া যায়। ৬০ বছর ধরে সিলপাঁটা কাটিয়ে সোরহাব(৭২) সংসার চালাচ্ছেন। তিনি বলেন-আমরা ১২০ বছর আগে থেইকা এই কাম করতাছি। আমার দাদা করত, জেডা করত, আব্বা করত, এখন আমিও করি। একসময় সিলপাডা কাডাইয়া হারাদিনে পাঁচ টেহা কামাইছি। এক একটা পাডায় বারো পয়সা, চার-আনা, আডানা লইছি। তিনি বলেন-ত্রিশালের ধানীখলা নামক জায়গা থেকে জহুর,মুল্লক বাহাদুর, অমর ব্যাপারি সর্বপ্রথম এই সিলপাঁটা কাটানোর কাজ আরম্ভ করেন। এখন তা শতাধিক পরিবারে দাঁড়িয়েছে। এই প্রবীণ সিলপাঁটা কাটানো ব্যাবসায়ী ছোরহাব আরও বলেন- তার কিছু দুঃখের কথা। তিনি বলেন-আডুইন তো যায়না মোডেই, ঠেং অচল, ছোড সময় টাইফয়েড অইছিলো, এহন আর আটবার পাইনা। এখন আর জীবন চলেনা। খাইয়া না খাইয়া দিন যাইতাছে। শুক্রবারে গেছিলাম গ্রামে।মাত্র ১৫০ টেহার মত পাইছি। মানুষ আর এখন আগের মত সিলপাঁটা কাডাইনা। সেলিনা(৩৫) নামে এক বাইন্যার স্ত্রী বলেন-এহন মরিচ বাইট্যা খা কেডা, এহন পেয়াজ,রসুনের গুড়াও পাওয়া যায়। তিনি বলেন আমাদের বেহি বাইন্যা বাড়ি কয়। অনুমদ্দিন(৫৫) নামে আরেক পুরাতন বাইন্যা বলেন-ব্যাবসা ভানিজ্য খুব কম, পিন্ডা চলেনা, মাঝে মাঝে যাই, আমরা সবাই দুর্বল হয়ে গেছি। অনুরুপভাবে ভাইন্যা জয়নাল(৬০), রফিকুল(৩৫), জুলহাস(৩২), বিল্লাল(২৫), ছমির(৭২), ইদ্রিস আলী(৪৫), সেলিনা(৩৫) সহ প্রত্যেক বাইন্যার একই বক্তব্য। সকলে বলেন- আমরা এই বাইন্যা বাড়ির সবাই সিলপাডা কাডাই, কিন্তু ব্যাবসা চলেনা। তারা জানান, কেউ কেউ আবার সিলপাঁটা কাটানোর ব্যাবসা ছেড়ে দিয়ে অন্য ব্যাবসার দিকেও ঝুঁখছেন। ২ নং জুগলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কামরুল হাসান বলেন-সিলপাঁটা এখন অনেক কমে গেছে। যেদিন থেকে মানুষ বাজার থেকে মরিচ, হলুদের গুড়া কিনে খাওয়া শুরু করছে সেদিন থেকেই সিলপাঁটার প্রয়োজন কমে গেছে। হালুয়াঘাট আকনপাড়া গ্রামের মোবাইল ব্যাবসায়ী বাবুল দেবনাথ বলেন-রাধুনী আর ধনিয়ার গুড়াই সিলপাটার বারোটা বাঁজিয়েছে। নয়তো সিলপাঁটা কাটানোর সাথে জড়িত এইসব বাইন্যাদের জীবন ভালোই চলতো।

Shares